ফরিদপুরে সদরে হাট গোবিন্দপুর দি পদ্মা ক্যাটেল ফার্মে খুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০টি ফ্রিজিয়ান জাতের গরু মারা গেছে। এক মাস আগে খুরা রোগের ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও এক সপ্তাহে এতগুলো গরু মারা যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েন খামারি। এত ৪০ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে দাবি তার।
তবে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণের ফলে খামারের বাকি ৩৫টি গরু সুস্থ হওয়ার পথে। এদিকে ফরিদপুরে অন্য খামারিদের গরুগুলোকে এ রোগ থেকে বাঁচাতে ভ্যাকসিনের ক্যাম্পেইন শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ অফিস। সেই সঙ্গে মশা-মাছি থেকে দূরে রেখে পরিষ্কার স্থানে পশু পালনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত খামারি শেখ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ২০১৪ সালে ছয়টি গাভী নিয়ে খামার শুরু করলেও দশ বছরে এমন ক্ষতির মুখে পড়িনি। দেড় মাস আগে আমার খামারের গরুগুলো লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ভ্যাকসিন দিয়ে সুস্থ হতে না হতেই খুরা রোগে আমার সর্বনাশ হয়ে গেলো। লাম্পি স্কিনের ভ্যাকসিনের সঙ্গে অফিস থেকে আমার খামারের সব গরুকে খুরা রোগের ভ্যাকসিনও দেওয়া হয়। তারপরও একের পর এক গরু মারা গেলো।
তিনি আরও বলেন, ২ সেপ্টেম্বর রাতে প্রথম একটি ফ্রিজিয়ান গাভী মারা যায়। এরপর ৭ দিনে আমার খামারে সাতটি গাভী ও ১৩ টি বাছুর মারা যায়। বাছুরগুলোর বয়স ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে। সাতটি গাভীই প্রতিদিন দুধ দিতো। এর মধ্যে চারটি গাভী অল্প কয়দিনের মধ্যে বাছুর জন্ম দিত। এতে আমার খামারের প্রায় ৪০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো সুস্থ হওয়া গাভীগুলো আর আগের মত দুধ দিচ্ছে না। যে গাভী দিনে ২০ লিটার দুধ দিতো সেটি এখন ১০ লিটার দুধ দিচ্ছে। খামারে গরুগুলোর মৃত্যুর আগে দিনে ২৫০ লিটার থেকে ২৮০ লিটার দুধ পাওয়া যেত। এখন দিনে পাই ৩৫-৪০ লিটার। আমার দিনে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। এই ক্ষতি আমি কীভাবে পোষাবো।
এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, খামারটি পরিদর্শন করা হয়েছে। নিয়মিতই ভ্যাকসিন দেই তাদের গরুগুলোকে। আমরাও তাদের নিয়মিত পরামর্শ ও পর্যবেক্ষণ করি। পদ্মা ক্যাটেল ফার্মের গরুগুলো পর পর দুবার দুটি আলাদা রোগে আক্রান্ত হয়। প্রথমে লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হলে ভ্যাকসিন ও পরিচর্যায় ঠিক হওয়ার পরপরই খুরা রোগে আক্রান্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন দিলেও কয়েকটি গরু মারা যায়। অন্য খামারিদের জন্য আমাদের ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন চালু করেছি। সেই সঙ্গে মশা-মাছির কামড় থেকে দূরে ও পরিষ্কার স্থানে লালন-পালন করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।