গাপালগঞ্জে বোরো ধানে প্রণোদনা পেয়েছেন ৭০ হাজার কৃষক

91

গোপালগঞ্জে বোরো ধান চাষাবাদে প্রণোদনা পেয়েছেন ৭০ হাজার কৃষক। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রবি মৌসুমে জেলার ৫ উপজেলায় ৪০ হাজার কৃষক বোরো হাইব্রিড চাষাবাদে ও ৩০ হাজার কৃষক বোরো উচ্চ ফলনশীল (উফশী) আবাদে প্রণোদনার ধান বীজ-সার বিনামূল্যে পেয়েছেন।

এ কর্মসূচির আওতায় ১জন কৃষক (৩৩ শতাংশ) ১বিঘা জমি চাষাবাদের জন্য ২ কেজি করে বোরো ধানের হাইব্রিড ধান বীজ পেয়েছেন। সে হিসাবে ৪০ হাজার কৃষক ৮০ হাজার কেজি বোরো হাইব্রিড ধান বীজ পেয়েছেন।

উচ্চ ফলনশীল (উফশী) বোরো ধান ১বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে চাষাবাদের জন্য ৫ কেজি করে বোরো ধানের উফশী ধান বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার ৩০ হাজার কৃষকের মধ্যে বিতরণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার এসব তথ্য জানিয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৭ হাজার ৮০০ জন কৃষকের মধ্যে ১৫ হাজার ৬০০ কেজি বোরো হাইব্রিড ধান বীজ বিতরণ করা হয়েছে। মুকসুদপুরে ৬ হাজার ৫০০ জন কৃষকের হাতে ১৩ হাজার কেজি বোরো হাইব্রিড ধান বীজ তুলে দেওয়া হয়েছে। কাশিয়ানী উপজেলায় ৫ হাজার ৭০০ জন কৃষকের মধ্যে ১১ হাজার ৪০০ কেজি বোরো হাইব্রিড ধান বীজ বিতরণ সম্পন্ন করা হয়েছে । কোটালীপাড়া উপজেলায় ১৩ হাজার কৃষক পেয়েছে ২৬ হাজার কেজি বোরো হাইব্রিড ধান বীজ । টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৭ হাজার কৃষক ১৪ হাজার কেজি বোরো হাইব্রিড ধান বীজ পেয়েছেন।

উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার আরো বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৬ হাজার কৃষক ৩০ হাজার কেজি বোরো উফশী ধান বীজ, ৬০ হাজার কেজি ডিএপি ও ৬০ হাজার কেজি এমওপি সার পেয়েছেন। মুকসুদপুরে ৫ হাজার ৩০০ জন কৃষকের মধ্যে ২৬ হাজার ৫০০ কেজি বোরো উফশী ধান বীজ, ৫৩ হাজার কেজি ডিএপি ও ৫৩ হাজার কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে। কাশিয়ানী উপজেলায় ৫ হাজার ২০০ জন কৃষকের হাতে ২৬ হাজার কেজি বোরো উফশী ধান বীজ, ৫২ হাজার কেজি ডিএপি ও ৫২ হাজার কেজি এমওপি সার তুলে দেওয়া হয়েছে।

কোটালীপাড়া উপজেলায় ৭ হাজার ৫০০ কৃষকের মধ্যে ৩৭ হাজার ৫০০ কেজি বোরো উফশী ধান বীজ, ৭৫ হাজার কেজি ডিএপি ও ৭৫ হাজার কেজি এমওপি সার বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৬ হাজার কৃষক ৩০ হাজার কেজি বোরো উফশী ধান বীজ, ৬০ হাজার কেজি ডিএপি ও ৬০ হাজার কেজি এমওপি সার পেয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুন্ডু বলেন, ৮০ হাজার কেজি বোরা হাইব্রিড ধান বীজ ও ১ লাখ ৫০ হাজার কেজি বোরো উফশী ধান বীজ দিয়ে ৭০ হাজার প্রান্তিক কৃষক জেলার ৭০ হাজার বিঘা জমিতে বোরো হাইব্রিড ও উফশী ধানের চাষাবাদ শুরু করেছেন। এতে জেলায় বোরো হাইব্রিড ও উফশী ধানের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে জেলায় বাড়ছে বোরো ধানের উৎপাদন। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে কৃষক লাভবান হবেন। এতে জেলার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে আমরা আশা প্রকাশ করছি ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ৭ হাজার ৮০০ জন কৃষকের জন্য ১৫ হাজার ৬০০ কেজি বোরো হাইব্রিড ধান বীজ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে আরো ১৭ দিন আগে । এছাড়া ৬ হাজার কৃষকের ৩০ হাজার কেজি বোরো উফশী ধান বীজ, ৬০ হাজার কেজি ডিএপি ও ৬০ হাজার কেজি এমওপি সার বিতরণ শেষ করেছি ১০ দিন আগে । আমরা প্রান্তিক কৃষকরে হাতে এসব তুলে দিয়েছি। এসব বীজ দিয়ে কৃষকরা ইতিমধ্যে বীজতলা তৈরী করেছেন। বীজ তলায় ভরে উঠেছে গ্রাম বাংলা।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী গ্রামের কৃষক রাজিব শেখ বলেন, আমি বিনামূল্যে ২ কেজি হাইব্রিড ধান বীজ পেয়েছি। এ ধান দিয়ে বীজতলা তৈরী করেছি। ১ বিঘা জমিতে এ ধান চাষাবাদের প্রস্তুতি নিয়েছি। ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারের সহযোগিতায় আমি এ চাষাবাদ করছি। এখানে উৎপাদিত ধান দিয়ে আমি সারা বছর সংসারের খাবারের খরচ চালাতে পারব।

কোটালীপাড়া উপজেলার কুরপালা গ্রামের হাসেম হাওলাদার বলেন, আমি প্রান্তিক কৃষক। আমার ১ বিঘা জমি আছে। এ জািম চাষাবাদের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাকে ৫ কেজি বোরো উফশী ধানবীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে দিয়েছে। এসব দিয়ে আমার ১ বিঘা জমি আমি নিজেই চাষাবাদ করছি। আমার ছোট পরিবার। আল্লাহ সহায় হলে এখানে উৎপাদিত ধান দিয়ে আমার সারা বছরের খাবার ধান হয়ে যাবে।