পদ্মায় কম থাকলেও বাজার ভরে গেছে ‘পদ্মার ইলিশে’

388

মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে গত কয়েক দিনের তুলনায় ইলিশের আমদানি কিছুটা বাড়লেও দাম কমেনি। এ ছাড়া বাজারে আসা বেশিরভাগ ইলিশ পদ্মা নদীর নয়। সেগুলো দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার। অনেক বাজারে এসব ইলিশ পদ্মার বলে বিক্রি করা হচ্ছে।

লৌহজং উপজেলায় পদ্মা নদীতে এখন তেমন ইলিশ পাচ্ছে না জেলেরা। মাছ ব্যবসায়ী, জেলে ও মৎস্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মা নদীর পানিদূষণ, নদীর নাব্য ও স্রোত কমে যাওয়ায় ইলিশের ঝাঁক আগের মতো পদ্মা নদীতে আসে না। তারপরও যেসব ইলিশ পদ্মায় পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো আকারে ছোট।

মুন্সীগঞ্জ সদর বাজারের ক্রেতা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, মিঠা পানির ইলিশ সুস্বাদু। এখানে পাওয়া যাচ্ছে লোনা পানির ইলিশ। দক্ষিণবঙ্গের ইলিশ লোনা পানির। তবে মাছ বড় হওয়ায় আঁশ বড় হয়। খেতেও কিছুটা সুস্বাদু। এখন মোটামুটি ভালো মানের ইলিশ কিনতে প্রতি হালিতে ছয় হাজার টাকা পড়ে।

মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে ছোট-বড় যেসব ইলিশ পাওয়া যায়, সেগুলো দক্ষিণাঞ্চলের দৌলতখাঁ, হাতিয়া ও রাঙাবালী এলাকার নদীর। বহু বছর ধরে এসব এলাকার মাছই পদ্মার ইলিশ বলে বিক্রি করেন তারা।

মাছ ব্যবসায়ী তপন বলেন, মুন্সীগঞ্জের রিকাবীবাজার থেকে পাইকারি দরে মাছ কিনে আনি। ১৭শ’ থেকে ১৮শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি করছেন ১৩-১৪শ’ টাকা কেজি দরে। ১২-১৩শ’ গ্রামের ইলিশ এক হাজার টাকা কেজি এবং ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তিনি।

প্রায় ৪০ বছর ধরে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া মৎস্য আড়তে ব্যবসা করছেন গগন দাস। তিনি জানান, ১১শ’ থেকে ১২শ’ গ্রাম ওজনের বড় মাছ এখন ১১শ’ থেকে ১৩শ’ টাকা কেজি। তবে আড়তে তুলনামূলক কম ইলিশ আসছে। মাওয়া আড়তে যেসব ইলিশ আসে, তার অর্ধেক মুন্সীগঞ্জের পদ্মার। সেগুলো আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট। বড় মাছ খুবই কম। ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বেশি।

পদ্মা নদীতে আগের তুলনায় ইলিশ কম পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আগে মুন্সীগঞ্জের পদ্মা নদীতে মুখ্য কয়েকটি পয়েন্ট ছিল। সেখানে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তো। কিন্তু নানা কারণে মাছ অন্যদিকে চলে গেছে। হয়তো নদীর নাব্য কমে স্রোত কমে যাওয়ায় ইলিশ অন্যদিকে চলে গেছে।

মৎস্যজীবী সমিতির মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মো. আমানউল্লাহ জানান, এখন ভরা মৌসুমেও ইলিশ আহরণ কম। জাটকা নিধনের কারণে পদ্মায় ইলিশের উৎপাদন কমে গেছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) টিপু সুলতান বলেন, জেলায় ইলিশের আহরণ কম। মূলত নদীদূষণ ও নদীর নাব্য কমে যাওয়ায় মুন্সীগঞ্জে ইলিশের আহরণ কমে গেছে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১