বর্ষাকালে মাছ চাষে লাভবান হতে হলে যা যা করবেন

631

বর্ষাকালে মাছ চাষে লাভবান হতে হলে যা যা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে সেগুলো মাছ চাষিদের জেনে রাখা দরকার। মাছ চাষ আমাদের দেশে বেশ লাভজনক পেশা হিসেবে পরিচিত। ঋতুভেদে মাছ চাষে কিছু আলাদা আলাদা পদক্ষেপ নিতে হয়। তেমনই বর্ষাকালে মাছ চাষেও বেশ কিছু বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়।

জেনে নিন বর্ষাকালে লাভবান হতে হলে মাছ চাষে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবেঃ
বর্ষাকালে পুকুরে মাছ চাষ করার জন্য পুকুর পাড় অনেক উচু করতে হবে। এমনভাবে পুকুরের পাড় নির্মাণ করতে হবে যাতে কোনভাবেই বাইরে পানি প্রবেশ করতে না পারে। পুকুরের পাশে বড় গাছপালা থাকলে গাছের ডালপালা ছেটে দিতে হবে। ডাল পাতা যেন কোনো ক্রমেই পুকুরে না পড়ে। আর প্রয়োজন হলে পুকুরের চারদিকে নেট দিয়ে উচু করে বেড়া দিয়ে দিতে হবে। এতে পুকুরের মাছ বাইরে যেতে পারবে না।

এছাড়া খাবারের বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেকে মুরগির বিষ্টা ব্যবহার করে থাকে সেগুলো না দেয়া থেকে শতর্ক থাকতে হবে। চাষিরা মনে করে এটা কম দামে পাওয়া যাচ্ছেএটা দিলেই মনে ভালো হবে। কিন্তু এটা দেয়ার জন্য মাছের নানান ধরণের রোগের সমস্যা হয়। যেমন এ্যামনিয়া, নাইট্রজেন বেড়ে যায়। যার ফলে মাছগুলো অনেক সময় মারা যায়।

বর্ষাকালে মাছ চাষের সময়ে বৃষ্টির পানিতে মাছ চাষের পুকুর পরিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে। সেজন্য মাছ চাষের পুকুর থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এতে পুকুরে পূর্ণ হয়ে মাছ বের হয়ে যেতে পারবে না। এছাড়া বড় মাছগুলো বর্ষার আগে বিক্রি করে দেয়া উচিৎ। বা অন্য পুকুরে দিতে হবে যেই পুকুরে অন্য স্থানের পানি প্রবেশ না করে । বা নেট দিয়েও পুকুরের চারিপাশ ঘিরে দেয়া যায়। তবে এটা দেয়ার সময় পুকুরের ভেতরে ৪ থেকে ৬ ইঞ্চ মাটির ভেতর দিতে হবে। এতে করে মাছগুলো ভেসে যাওয়া সম্ভবনা কম থাকে।

বর্ষাকালে পুকুরের পানির রং পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। আবার কখনও কখনও পুকুরের পানি ঘোলা হয়ে যেতে পারে। সেজন্য এই সময়ে পুকুরের পানি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বর্ষাকালে মাছের রোগ:
বর্ষাকালে মাছের বিভিন্ন জটিল রোগ দেখা দিতে পারে। সেজন্য কয়েকদিন পর পর পুকুর থেকে মাছ তুলে এনে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে মাছের কোন রোগ হয়েছে কিনা। কোন মাছ রোগে আক্রান্ত হলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন পুকুরের পানি প্রবেশে মাছের ক্ষত রোগের সৃষ্টি হয়। এতে অনেক মাছ মারা যেতে পারে। এছাড়া পাখনা পঁচা , ফুলকা পচা রোগের সৃষ্টি হতে পারে।

বাইরের পানি এসে গেলে করণীয়:
বাইরের পানি এসে গেলে পুকুরে মাছ থাকলে বিঘা প্রতি ৬ থেকে ১০ কেজি চুন প্রয়োগ কররে আর সমস্যা হয়না। আর মাছ না থাকলে প্রতি শতাংশে ১ কেজি করে দিলেই হবে। তবে দুই মাস বা এক মাস পর পর চুন ব্যবহার করলে পুকুরের পরিবেশ ভালো থাকে।

বর্ষাকালে মাছ চাষে লাভবান হতে হলে যা যা করবেন শিরোনামে লেখাটি লিখেছেন, রাজশাহী পবা উপজেলার সিনিয়র কর্মকর্তা মোঃ মোজাম্মেল হক।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ১৭ আগস্ট ২০২১