মুরগির ঠোঁট কাটতে ৯০ ভাগ খামারিরা যেসব ভুল করেন

948

মুরগির ঠোঁট কাটার সময় যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে তা আমাদের দেশের অনেক খামারিরাই জানেন না। লাভজনক হওয়ার কারণে দেশে দিন দিন মুরগির খামারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুরগি পালনের সময় ঠোঁট বড় হলে মুরগিকে ঠোকরা ঠুকরি করতে দেখা যায়। আজকের এ লেখায় আমরা জেনে নিব মুরগির ঠোঁট কাটার সময় যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে সে সম্পর্কে-

মুরগির ঠোঁট কাটার সময় যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবেঃ
মুরগির ঠোঁট বেশি লম্বা এবং সুঁচালো হলে এরা সহজেই খেতে পারেনা ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য নষ্ট হয়। অনেক সময় এদের মধ্যে ঠোকরা ঠুকরির প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। তাই নির্দিষ্ট বয়সে প্রতিটি মুরগির ঠোঁটের কিছু অংশ কেটে ফেলা হয়। একেই ডিবিকিং বলে।

মুরগির ঠোট কাটার উদ্দ্যেশ্যঃ

১। খাবারের অপচয় রোধ করার জন্য

২। ক্যানাবলিজম রোধ করার জন্য

৩। মুরগীর দৈহিক সমতা বৃদ্ধির জন্য

ঠোট কাটার সময়ঃ

১। যদি শুধু মাত্র খাচায় পালন করা হয় (অন্ধকার ঘরে যেখানে আলোর প্রখরতা কম) সেখানে বাচ্ছাকে প্রথম দিন অথবা ৭-১০ দিনে ছ্যাকা দিতে হবে।

২। খোলা মেলা পরিবেশে ৭-১০ দিনে ঠোট ছ্যাকা এবং ৮-১০ সপ্তাহের মধ্যে ঠোট কাটতে হবে।

ঠোট ছ্যাকা (৭-১০ দিন)

প্রথম অবস্থায় ঠোট কাটার সুবিধা এটাই যে এর ফলে মুরগীর দৈহিক বৃ্দ্ধিতে কোনরূপ বিরুপ প্রভাব পড়বে না।
ঠোট ছ্যাকা দেয়ার সময় সঠিক মাপের ছিদ্র বাছাই করতে হবে যেন নাকের অন্তত ২ মিমি আগে ছ্যাকা পড়ে।
ঠোট ছ্যাকা দেয়ার সময় ২-২.৫ সেকেন্ডের বেশী হওয়া যাবে না।
ব্লেডের তাপমাত্রা ৬০০-৬৫০ ডিগ্রি হতে হবে।
ঠোট কাটা (৮-১০ সপ্তাহ)

আলাদাভাবে উভয় ঠোট কাটতে হবে।
উভয় ঠোটের দৈর্ঘ্য সমান হতে হবে।
কাঠার পর ছ্যাকা দিতে হবে যেন রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়।
ব্লেডের তাপমাত্রা ৬৫০-৭৫০ ডিগ্রি হতে হবে।
কখন ঠোঁট কাটা উচিত নয়ঃ

১। মুরগির ধকল সৃষ্টি হলে।

২। ভ্যাকসিন প্রদানের দুই দিন আগে বা পরে বা ভ্যাকসিন প্রদানের দিন বা ঐ দিন।

৩। আবহাওয়ার পরিবর্তন বেশি হলে।

৪। মুরগি ডিম পাড়তে শুরু করলে।

৫। সালফার জাতীয় ঔষধ সেবনের দুই দিন আগে বা পরে।

ঠোট কাটাকালীন সতর্কতাঃ

১। তাড়াহুড়া করা যাবে না। যত বেশী তাড়াহুড়া করা হবে ভুল তত বেশী হবে।

২। ডিবেকারকে সুবিধামত জায়গায় বসতে দিতে হবে।

৩। মুরগীর জিহ্বায় যেন তাপ না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৪। একটি ব্লেড দিয়ে ৫০০০ এর অধিক মুরগীর ঠোট কাটা উচিত নয়।

ঠোঁট কাটার পরবর্তী সতর্কতাঃ

১। খাদ্য এবং পানির পাত্রে খাদ্য এবং পানি বাড়িয়ে দিতে হবে যেন মুরগী ব্যাথা না পায়।

২। দুইদিন পর থেকে স্ট্রেস কমানোর জন্য ভিটামিন সি দেয়া যেতে পারে।

৩। ভিটামিন কে এবং ভাল মানের নিরাপদ এন্টিবায়োটিক দিতে হবে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০৬ জুন ২০২১