সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে উটপাখির মাংস

305

পৃথিবীর সর্ববৃহৎ পাখি উটপাখি। বাংলাদেশে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে এই উটপাখির মাংস। বিদেশে লালনপালন করা হলেও সম্প্রতি ঢাকার সাভারে অবস্থিত বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) এই পাখির মাংস উৎপাদনে গবেষণা শুরু করেছে।

বাণিজ্যিকভাবে গরুর মাংসের পাশাপাশি পাখির মাংস উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছেন তারা। এই শিল্পটিকে এদেশের আবহাওয়ায় প্রতিষ্ঠিত কর‍তে প্রথমবারের মতো গবেষণার মাধ্যমে উটপাখি লালন-পালন শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আফ্রিকা থেকে ২২টি উটপাখি এনে সেগুলো বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী করে গড়ে তুলে তা থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য হাতে নেওয়া হয়েছে এই গবেষণা প্রকল্প।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের আবহাওয়া উটপাখি পালনের জন্য উপযোগী বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, তবে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করা যাবে কিনা – তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরও বছর দেড়েক।

জানা গেছে, একটি প্রাপ্তবয়স্ক উটপাখি ১৬০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। এক বছরের উটপাখিগুলো ১২০ থেকে ১৩০ কেজি ওজন হয়। একটি ডিমের ওজন ১২০০ থেকে ১৮০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। সদ্যজাত বাচ্চার ওজন হয় ৭০০ থেকে সাড়ে ৯ শ’ গ্রাম।

বিএলআরআই এবং উটপাখি গবেষকদের সূত্রে জানা যায়, সাউথ আফ্রিকার আবহাওয়ার সাথে বাংলাদেশের আবহাওয়ার অনেকটা মিল থাকায় উটপাখি পালনে একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাউথ আফ্রিকা থেকে৷কিছু উটপাখি নিয়ে আসা হয় বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে। দুই বছর পর গবেষণা শেষে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর পর উটপাখি দেশের বিভিন্ন খামারিদের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে পাঠানো হবে।

এদিকে দেশের কোথাও কৃত্রিম পদ্ধতিতে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো সম্ভব না হলেও হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর ড. আব্দুল গাফফার মিয়া এবং তার পিএইচডি ফেলো খন্দকার তৌহিদ ইসলাম ইনকিউবেটরের মাধ্যমে কৃত্রিম পদ্ধতিতে ডিম ফুটানোর জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

উটপাখি পোলট্রি ফিডসহ লালশাক, পালংশাক বিভিন্ন ঘাস এবং লতাপাতা, কাঁঠালগাছ ও শজনে গাছের পাতা খায় এবং দ্রুত বড় হয়। উটপাখি পালনে খরচ কম তাই এটি বাংলাদেশে একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে বিএলআরআই এর পোলট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) ড. সাজিদুল করিম সরকার জানান, উটপাখির গোশতের প্রোটিন ও মান অনেক ভালো। ফ্যাট কোলেস্টেরলের পরিমাণ অন্য গোশতের চেয়ে কম। এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হলে দেশের অর্থনীতিতে একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ১৫সেপ্টেম্বর ২০২১