আগাম পালং শাক চাষ করে লাভবান হওয়ার উপায়

32

পালং শাক একটি জনপ্রিয় পাতা জাতীয় সবজি।এটা খেতে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।সেজন্যে এর চাহিদা শহর গ্রাম সব খানেই আছে।তাই বানিজ্যিক ভিত্তিতে পালং শাক চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরন করার পাশাপাশি অতিরিক্ত উৎপাদন বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা সম্ভব।পালং শাক এর ইংরেজি নাম Spinich।শীতকালে পালং শাক উৎপাদন করা হয়। আমাদের দেশে পালং শাকের ফলনও খুব ভাল হয়।বাংলাদেশের সব জায়গায় পালং শাক চাষ হয়ে থাকে।

পুষ্টিগুণ
পালংশাকে প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ আছে।

মাটির প্রকৃতি
ভাদ্র-আশ্বিন (আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি) মাসের মধ্যে বীজ বপন করা হয়।
দো-আঁশ এবং এঁটেল মাটি পালংশাক চাষের জন্য উপযোগী।

জমি তৈরি ও বীজ বপন
১. পালং শাক চাষ করার আগে চাষ ও মই দিয়ে জমির মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে তৈরি করে নিতে হবে।
২. পালং শাকের বীজ ছিটিয়ে ও সারিতে রোপণ করা যায়। তবে সারিতে বপন করা সুবিধাজনক।
৩. এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব ২০ সে.মি. রাখতে হবে।
৪. একটি কাঠির সাহায্যে ১.৫-২.০ সে.মি. গভীর লাইন টেনে সারিতে বীজ বপন করে মাটি সমান করে দিতে হবে।

সার প্রয়োগ
কৃষকদের মতে গুণগত মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে হলে পালং শাক চাষের জমিতে যতটুকু সম্ভব জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। মাটি পরীক্ষা করে মাটির ধরণ অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে। তবে জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ উভয়ই ভালো থাকবে। বাড়িতে গবাদি পশু থাকলে সেখান থেকে গোবর সংগ্রহ করা যাবে। নিজের গবাদি পশু না থাকলে পাড়া-প্রতিবেশি যারা গবাদি পশু পালন করে তাদের কাছ থেকে গোবর সংগ্রহ করা যেতে পারে। এছাড়া ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে আবর্জনা পচা সার ব্যবহার করা যেতে পারে। বাড়ির আশে-পাশে গর্ত করে সেখানে আবর্জনা, ঝরা পাতা ইত্যাদি স্তুপ করে রেখে আবর্জনা পচা সার তৈরি করা সম্ভব।

সেচ ও নিষ্কাশন
১. জমিতে রস কম থাকলে অবশ্যই সেচ দিতে হবে।
২. জমিতে পানি যাতে না জমে সেজন্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

চাষের সময় পরিচর্যা
১. নিড়ানির সাহায্যে জমির ঘাস সময়মত বাছাই করতে হবে।
২. মাটি ঝুরঝুরে করে দিতে হবে।
৩. বীজ বপনের ১৫-২০ দিন পর গাছ উঠিয়ে পাতলা করে দিতে হবে।

উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ
প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ২.৫ টন পালং শাক পাওয়া সম্ভব।

কীটনাশক
প্রয়োজন অনুসারে জৈব বা রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।

প্রশিক্ষণ
পালং শাক চাষের আগে এ চাষে অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে পালং শাক চাষের বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। এছাড়া চাষ সংক্রান্ত কোন তথ্য জানতে হলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্ধারিত ফি এর বিনিময়ে কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।