আনারসের রোগ বালাই দমনে করণীয়

1157

5jZS5

বিশ্বে বাণিজ্যিক ফলসমুহের মধ্যে আনারস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফল। বাংলাদেশে সৌন্দর্যের জন্য এ ফলকে “স্বর্ণকুমারী” বলে অ্যাখায়িত করা হয়। আকর্ষণীয় সুগন্ধে ও অম্লমধুর স্বাদের জন্য এ ফল সকলের নিকট সমাদৃত। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫-২০ হাজার হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয় এবং প্রায় ১৫০-২০০ হাজার মেট্রিক টন ফল উৎপাদন হয়।

প্রতি বছর আনারস চাষী ও ব্যবসায়িরা ব্যাপক পরিমাণ ক্ষতির শিকার হয় : (১) সঠিক পরিচর্যার অভাব ও রোগ-পোকামাকড় দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এবং (২) ফল পাকার সময় সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাত করণ, পরিবহন ও বাজারজাত করণের সময়। তাই আমাদের কৃষক ভাই এবং কৃষি বিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্রদের জন্য উক্ত সমস্যা সমাধান আলোচনা করা হলো :

(ক) রোগ দমন
ফল পচা: আনারসের জন্য এ রোগ খুবই মারাত্বক। সেরাটোসাইটিস প্যারাডোসা (ঈবৎধঃড়পুং:রং ঢ়ধৎধফড়ীধ) নামক এক প্রকার ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগের কারণে উৎপাদন শুন্যের কাছাকাছি আসতে পারে।

রোগের লক্ষণসমুহঃ
(ক) ফলের উপর পানি ভেজা দাগ পড়ে পরে উহা হলুদ হয়ে গাঢ় বাদামী ও কালচে রং ধারন করে। (খ) আক্রান্ত অংশের টিসু (কোষসমুহ) নরম হয়ে পচে যায়। (গ) পাকা ফল আক্রান্ত হলে একটি বৈশিষ্টপূর্ণ গন্ধ পাওয়া যায়। (ঘ) পাতা আক্রান্ত হলে সম্পূর্ণ গাছ কাল হয়ে পছে যায়।

দমন ব্যবস্থাঃ
(১) বাগান পরিস্কার রাখতে হবে। (২) রোপন দ্রব্য রোগ প্রতিরোধী জাতের সাকার ব্যবহার করতে হবে। (৩) রোপণের পূবে সাকার দুই ঘন্টা হালকা রোদে শুকে নিলে এ রোগের সম্ভবনা কম থাকে। (৪) সংগ্রহকৃত আনারস প্যাকিং এর পূর্বে ঝুড়িকে ৩ % ফরমালিন দ্বারা রোগ মুক্ত করতে হবে। (৫) ফলের কর্তিত গোড়ায় ১০ % বেনজোইক এসিড দ্রবণে ডুবিয়ে নিতে হবে।

কান্ড পচাঃ
এ রোগ ফাইটোপথোরা প্যারাসাইটিকা (চযুঃড়ঢ়যঃযড়ৎধ ঢ়ধৎধংরঃরধ) নামক এক প্রকার ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে।

রোগের লক্ষণসমুহ : (ক) প্রথমে পাতা হলুদ ও পরে বাদামী হয়ে যায়। (খ) কান্ডের গোড়ার অংশ ও মুল কাল বর্ণ ধারণ করে পচতে শুরু করে। (গ) এক পর্যায়ে সম্পূর্ণ গাছ মরে যায়।

দমন ব্যবস্থাঃ
(১) বাগান পরিস্কার পরিছন্ন রাখতে হবে। (২) রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে। (৩) বাগানে যেন পানি না জমে সে ব্যবস্থা করতে হবে। (৪) রোগ প্রতিরোধের জন্য রোপণের পূবে ৪ : ৪ : ৫০ অনুপাতে বোর্দোমিক্সচার দ্রবণে চারা ডুবিয়ে নিতে হবে।

(খ) পোকা-মাকড় দমন
ছাতরা পোকা বা মিলিবাগঃ
(ক) এ পোকা গাছের পাতা, কান্ড, ফল প্রভৃতি থেকে রস চুষে খেয়ে সেখানে ত সৃষ্টি করে। (খ) মুল বা কান্ড ও মুলের সংযোগস্থলে আক্রমণ হলে গাছ নেতিয়ে পড়ে। (গ) ফল আক্রান্ত হলে পচে যায়। (ঘ) আক্রান্ত স্থান দিয়ে ভাইরাস প্রবেশ করে অ্যানাসা উইল্ট রোগ সৃষ্টি করে।

দমন ব্যবস্থাঃ
(১) রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে (যেমন- কুইন, পানামবুকো, স্প্যানীশ প্রভৃতি)। (২) ফল সংগহ্র কারার পর শুকনো লতাপাত পুড়িয়ে ফেলতে হবে। (৩) ম্যাথিয়ন-৫৭ ইসি ৮ সিসি ২.৫ লিটার পানিতে মিশে স্প্রে করতে হবে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/৩১মার্চ২০