আম, পেয়ারার পর এবার কলা চাষে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি চালু হলো। ফলে ভোক্তাদের আর জোর করে পাকানো কলা খেতে হবে না। বিষমুক্ত কলা পাওয়া যাবে হাতের নাগালেই। কলা উৎপাদনে সাধারণত কীটনাশকসহ নানা রকম সারের ব্যবহার করা হয়।
ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি বলতে গাছে ফল থাকা অবস্থায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে বা বয়সে বিশেষ ধরণের ব্যাগ দ্বারা ফলকে আবৃত করাকে বুঝায়। ব্যাগিং করার পর থেকে ফল সংগ্রহ করা পর্যন্ত গাছেই লাগানো থাকে ব্যাগটি।
কলা চাষে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিঃ
আম, পেয়ারার পর এবার কলা চাষে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি চালু হলো। ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশেও বর্তমানে ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তির মাধ্যমে কলার বাণিজ্যিক উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে কলা চাষ শুরু হয়েছে নাটোর ও রাজশাহী অঞ্চলে।
কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই শতভাগ রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণমুক্ত কলা উৎপাদনের জন্য ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি বর্তমানে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। জমিতে ও পুকুরের চার ধারে সারি সারি কলা গাছ রোপণ করা হয়ে থাকে।
গাছ গুলোতে এখন ঝুলছে বিশেষ ধরনের পলিথিন। এই পলিথিন দিয়েই মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কলার কাদি। কলার আকার বড় করতে এবং পোকামাড়ক মুক্ত কলা চাষের জন্য আগে প্রচুর পরিমাণে কীটনশাক ব্যবহার করার প্রয়োজন হতো।
কিন্তু এই পদ্ধতিতে কলা চাষে কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে না। যার কারণে বিষমুক্ত কলা উৎপাদন করা সম্ভব হবে এবং কৃষকদের উৎপাদন খরচও কমে যাবে।
পাশাপাশি মানব দেহ রোগ বালাই থেকে রক্ষা পাবে। ফলে পুকুরের ধার ও পতিত জমিতে স্বল্প খরচে কলা চাষের দিকে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে কলা চাষিরা।
জমি ও পুকুরের চারপাশে সারি সারি কলা গাছ রোপণ করা হয়। গাছগুলোতে এখন ঝুলছে বিশেষ ধরনের পলিথিন এবং প্লাস্টিকের বস্তা ঝুলতে দেখা যায়। এ পলিথিন ব্যাগ দিয়েই মুড়িয়ে দেওয়া হয়ে থাকে কলার কাদি। এছাড়াও কলার কাঁদি বিশেষ ধরনের সাদা ও বাদামি রঙের কাগজের ব্যাগ দিয়েও মোড়ানো হয়ে থাকে।
কলার ছড়ি বের হওয়া শুরু হলেই একটি ছত্রাকনাশক দিয়ে স্প্রে করে ব্যাগিং করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিচের প্রান্ত খোলা রাখতে হবে। তবে কলার ছড়ি বের হওয়া সমাপ্ত হলেও ব্যাগিং করা যাবে। সেক্ষেত্রে নিচের প্রান্তও বেঁধে দিতে হবে।
কলার ব্যাগগুলো পরিবেশবান্ধব কাগজ দিয়ে তৈরি এবং এটা ছিঁড়ে না যাওয়া পর্যন্তব্যবহার করা যাবে। এই পদ্ধতিতে কলায় কোনো ধরনের দাগ পড়ে না এবং কলার মানও উন্নত থাকে।
এই পদ্ধতিতে কলায় রোগ ও পোকার আক্রমণও কম হয়। এতে করে বাজারের অন্যান্য কলার তুলনায় ব্যাগিং পদ্ধতির কলার দামও বেশি পাবেন কলা চাষিরা।
ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে বিষমুক্ত কলা উৎপাদন সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। এতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও বিষমুক্ত কলা রপ্তানি করা সম্ভব।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২২জুলাই২০