আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মৎস্যখাতের অবদান

636

fish
ফার্মস এন্ড ফার্মার ২৪ ডেস্ক: প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ আবহমান বাঙ্গালী সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি অংশ। আমাদের প্রাণিজ আমিষের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র বিমোচন, বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন ও নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে মৎস্যখাত তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে। জিডিপিতে মৎস্য সস্পদের অবদান ৩.৬৯ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপিতে প্রায় ২২.৬০ শতাংশ। তাই মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাস্তবধর্মী ও সময়োপযোগি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রায় ৮৩ হাজার ৫২৪ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে দেশ আয় করেছে ৪ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা।

প্রাকৃতিক জলাশয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, জলজ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষন, পরিবেশ বান্ধব ও উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর মৎস্য চাষ ব্যবস্থাপনা ও সম্প্রসারনের মাধ্যমে দেশের মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩৫ লক্ষ ৪৮ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। তাই বাংলাদেশের রপ্তানি আয়েও মৎস্য খাতের উল্লেখ্যযোগ্য অবদান রয়েছে। আমাদের দৈনন্দিন আমিষের প্রায় ৬০ শতাংশ যোগান দেয় মাছ, যা প্রাণিজ আমিষ সরবরাহে একটি নিরাপদ ও সহজলভ্য উৎস্য হিসেবেই স্বীকৃত। দেশের জনগোষ্ঠির ১১ শতাংশের অধিক তথা প্রায় ১.৭৮ কোটি লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এ সেক্টরের বিভিন্ন কার্যক্রমে নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে। বিগত পাঁচ বছরে এখাতে বার্ষিক অতিরিক্ত কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৬ লক্ষাধিক লোকের।

দেশের অভ্যান্তরীন মুক্ত জলাশয়ের পরিমান প্রায় ৩৯ লক্ষ ১০ হাজার হেক্টর, বদ্ধ জলাশয়ের পরিমান ৭ লক্ষ ৮৯ হাজার হেক্টর, সামুদ্রিক জলাশয়ের পরিমান ১ লক্ষ ১৮হাজার ৮১৩বর্গ কিমি এবং সমুদ্র উপকূল রয়েছে ৭১০ কিমি। ১৯৮৩-৮৪ অর্থ বছরে দেশে মাছের মোট উৎপাদন ছিল ৭.৫৪ লক্ষ মেট্রিক টন। বিগত তিন দশকের ব্যবধানে এ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫.৪৮ লক্ষ মেট্রিক টন। তাই দেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ তথা কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে মৎস্যখাতের কাক্সিক্ষত উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে।