আড়াই বিঘা দিয়ে শুরু এখন ২২০ বিঘা আমবাগানের মালিক রফিকুল!

283

আমচাষি
বিরামপুর (দিনাজপুর) থেকে: দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমি লিজ নিয়ে আমের বাগান করে সাফল্য অর্জন করেছেন রফিকুল ইসলাম নামের এক আমচাষি।

রফিকুল ইসলাম মাত্র আড়াই বিঘা জমি নিয়ে আমের বাগান শুরু করলেও এখন তিনি ২২০ বিঘা জমিতে আমের বাগান করেছেন। তার এ সফলতায় আম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে এলাকার বেকার যুবকেরা।

রফিকুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে মাস্টার্স পাস করে কিছুদিন এনজিওতে চাকরি করেন। কিন্তু পারিবারিক সমস্যার কারণে চাকরি ছেড়ে দেন। পরে স্থানীয় একটি কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি। কিন্তু সে কলেজে এমপিও না হওয়ায় জীবিকার তাগিদে ২০০৬ সালে মাত্র আড়াই বিঘা জমির আম বাগান লিজ নিয়ে তার কৃষি খামারের যাত্রা শুরু করেন। এতে লাভবান হওয়ায় নিজের জমি না থাকায় নবাবগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অন্যের পতিত জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজ নিয়ে কৃষি অফিসের পরামর্শে বাণিজ্যিকভাবে আমের চারাগাছ লাগিয়ে আম চাষ শুরু করেন।

আমচাষি রফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে প্রায় ২২০ বিঘা জমিতে তিনি আমের বাগান গড়ে তুলেছেন। আমের বাগানের ভেতরে সাথী ফসল হিসেবে বাদাম, বিভিন্ন ধরনের সবজি, নিপিয়ার ঘাস, ধান আবাদ ও ভেড়াপালন করে বাড়তি আয় করছেন।

তিনি বলেন, তার কৃষি খামারে এখন প্রায় ৫০ জন শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। মৌসুমে তার বাগানের আম এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশে বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়।

গত বছর এই আমবাগান থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা তিনি আয় করেছেন। চলতি মৌসুমে আম বাগান থেকে তিনি ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা আয় করবেন আশা করছেন রফিকুল ইসলাম। তার সফলতা দেখে এখন অনেকেই তার কাছে পরামর্শ নিতে আসেন। এরই মধ্যে তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক কৃষি খামার গড়ে তুলে সাবলম্বী হয়েছে। ফলে রফিকুল ইসলাম এখন হয়ে উঠেছে এলাকার বেকার যুবকদের অনুকরণীয়।

রফিকুল ইসলাম জানান, চাকরির পেছনে না ছুটে দৃঢ় মনোবল নিয়ে কৃষি খামার গড়ে তুলে বেকারত্ব দূরীকরণ সম্ভব।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল কবীর জানান, যে জমিতে আগে কোনো ফসল হতো না সেসব জমি লিজ নিয়ে আমের বাগান গড়ে তুলে এলাকার বেকার সমস্যা দূরীকরণে ভূমিকা রেখেছে সফল খামারি রফিকুল ইসলাম।

নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু রেজা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, এবার নবাবগঞ্জ উপজেলাতে ৮১০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির আম এবং ৩৬০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির লিচু চাষ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে ভালো আমচাষি রফিকুল ইসলাম। কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক তার বাগানের বিভিন্ন প্রজাতির ফলের বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে। সূত্র: কেকে।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন