ইঁদুরের উৎপাতে দিশাহারা সুবর্ণচরের কৃষকেরা

122

ইঁদুরের উৎপাতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন সুবর্ণচরের কৃষকেরা। ফলন ঘরে তোলার সময়ে ইঁদুরের এমন উৎপাতে শঙ্কায় দিন কাটছে তাদের।

সরেজমিনে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ইঁদুরের উৎপাত অনেক বেশি, যা কোনো রাসায়নিক বা পরিবেশসম্মত দমন পদ্ধতিতেও কাজে দিচ্ছে না।

উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের চরবৈশাখী গ্রামের কৃষক জমির উদ্দিন জানান, তিন একর জমিতে আমন ধান চাষ করে ফলন ভালো হলেও ১৫-২০ শতাংশ ধান ইঁদুর খেয়ে ফেলেছে। এতে লোকসান গুনতে হবে তাকে। একই মন্তব্য করেছেন পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের কৃষক ফারুক হোসেন। চার একর জমির আমন ধানের ফলন পাকার আগেই ২০ শতাংশের বেশি ইঁদুরের আক্রমণের শিকার হয়েছে।

এদিকে চর আমান উল্লাহ ইউনিয়নের ইব্রাহীম খলিল জানিয়েছেন, এবার ইঁদুর দমনে রাসায়নিক বা পরিবেশসম্মত দমন পদ্ধতি কোনোটাই কাজে দিচ্ছে না। সুবর্ণচরের প্রায় আমন ধানচাষির একই অবস্থা দেখা গেছে।

জাতীয় উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইংয়ের তথ্যমতে, একটি ইঁদুর বছরে ৪০-৫০ কেজি শস্য ক্ষতি করে। এ ক্ষতির পরিমাণ বছরে ৭৫ হাজার থেকে এক লাখ মেট্রিক টন, যা গড়ে মাঠ ফসলের পাঁচ-সাত ভাগ। বছরে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ফলন ইঁদুর নষ্ট করে, যা ৫০ থেকে ৫৪ লাখ লোকের এক বছরের খাবার। এছাড়া ইঁদুর ৬০টির বেশি রোগের জীবাণু বহন করে। তাদের মতে, এক জোড়া পূর্ণবয়স্ক ইঁদুর বছরে দুই হাজার পর্যন্ত বংশধর সৃষ্টি করতে পারে।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, এ বছর ইঁদুরের উৎপাত বেশি। তবে এ উপলক্ষে ইঁদুর নিধন অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দরকার রাসায়নিক বা পরিবেশসম্মত দমন পদ্ধতির ব্যবহার। এছাড়া ধানক্ষেতে প্যাঁচা বসার জন্য পর্যবেক্ষণ টাওয়ার বসালে ইঁদুরের উৎপাত কমবে। তার মতে, মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ইঁদুর দমনে সচেতন করতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।