এখন শীতের প্রায় শেষ পর্যায়। রাতের বেলা ঘুমাতে গেলে দেখা যায় পাতলা কাথা দিয়েই চলে। আর দিনের বেলা ফ্যান চালাতে হচ্ছে কোথাও কোথাও। দিনে গরম রাতে ঠান্ডা এসব মিলিয়ে আমরা নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আমাদের সাথে সাথে আবহাওয়াগত তারতম্যের কারনে খামারেও বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেকদিন পর আজ একটু বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করছি।
ট্রানজিশান পিরিয়ড হলো দুটা ভিন্ন ধরনের পরিবেশের মাঝামাঝি অংশ। বর্তমানে শীত এবং বসন্তের ট্রানজিশান হচ্ছে। শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ধীরে ধীরে বসন্তের দিকে রূপ নিচ্ছে।
এ সময় নিন্মলিখিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে:
বার্ড ফ্লু
রাণীক্ষেত
গামবোরো
কলিব্যাসিলোসিস
নিউমোনিয়া
রান্টিং স্টানটিং সিনড্রোম
ফাউল কলেরা
মূলত মুরগীর শ্বসনতন্ত্রে আক্রমণ হয় এমন রোগের হার বেশী পাওয়া যায়।
কি ঘটে?
এ সময় দেখা যায় বাচ্ছা আসার সময় বক্স মর্টালিটি হয়।
তারপর ব্রুডিং অব্যবস্থাপনাজনিত কারনে মুরগীর বাচ্চা মারা যায়।
১০-১২ দিন পার হলেই মুরগী গলা ডাকা আরম্ভ করে এবং এটা চলতেই থাকে।
লেয়ারে প্রোডাকশন কিছুটা কমে যায়।
শীতকালের মত কম জায়গায় বেশী মুরগী দেয়ার ফলে ওজন কম আসে।
পর্দা ব্যবস্থাপনার কারনে গ্যাস জমে এবং মুরগীর চোখে এ্যামোনিয়া বার্ন হয়, এসসাইটিস দেখা দেয়।
লেয়ারের চোখ ফুলে যায় এবং অনেকেই এটাকে করাইজা মনে করে চিকিৎসা শুরু করে দেন। প্রোডাকশন আরও কমে যায়।
হঠাৎ মুরগীর মড়ক দেখা দেয় এবং খামার নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
প্রতিকার
১। প্রথম এবং সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিতে হবে বায়োসিকিউরিটির প্রতি।
২। সঠিক ভাবে এলাকাউপযোগী ভ্যাকসিনেশন শিডিউল মেনে চলা।
৩। মুরগী অসুস্থ হলে সব ঔষধ বন্ধ করে পরিস্কার পানি দেয়া এবং দ্রুত ডাক্তারের শরনাপন্ন হয়ে চিকিৎসা নেয়া।
৪। হঠাৎ অনেক বেশী মড়ক দেখা দিলে অতিদ্রুত পার্শ্ববর্তী ল্যাবে পরীক্ষা করানো।
৫। ব্রুডিংয়ের সময় মুরগীর অবস্থা বুঝে তাপ দেয়া। যেমন বাচ্চা ব্রুডারের নিচে গাদাগাদি করলে তাপ বাড়িয়ে দেয়া।
৬। সবসময় জীবাণুমুক্ত পানি ব্যবহার করা।
৭। রাতের বেলা কোন মতেই যেন পানি গ্যাপ না পড়ে তার দিকে খেয়াল রাখা।
৮। যদি গ্যাপ পড়ে যায় এবং পাত্র খালি হয়ে যায় তা হলে পরের বার পানি দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই পানির পাত্র বাড়িয়ে দিতে হবে যেন পানি খেতে গিয়ে মুরগী মারা না যায়।
৯। প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করতে হবে ফার্মের চারপাশে।
ইনশাআল্লাহ সতর্কতার সাথে খামার পরিচালনা করলে যে কোন বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
নিজে সুস্থ থাকার জন্য পুষ্টিকর খাবার যেমন দুধ, ডিম এবং মাংস খান।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৫ফেব্রুয়ারি২০২১