‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পে ভাগ্য বদলেছে আয়েশার

331

ebek-jobs-cover201601241008

এসএম মজিবুর রহমান, শরীয়তপুর থেকে: ‘একটি বাড়ি একটি খামার, বদলাবে দিন তোমার আমার’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ উদ্যোগের আয়েশার ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে।

২০১৫ সালের আগস্ট মাসে শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার রুদ্রকর গ্রামের ছিন্নমুল আয়েশা বেগম পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে ঢাকা থেকে শূন্য হাতে গ্রামে ফিরেন। তখন তার চারিদিকে শুধুই অন্ধকার। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খোঁজ মেলে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের রুদ্রকর গ্রাম উন্নয়ন সমিতির। তিনি সমিতির সদস্য হয়ে যান । ১ মাস পরে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে প্রথমে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে স্বামী আলমগীর মোল্লাকে দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমে ঝালমুড়ি ও ফুসকা তৈরী করে রুদ্রকর স্কুলের সামনে ছোট্ট পরিসরে শুরু হয় ব্যবসা। এরপর থেকে আয়েশা বেগমের অভাবদূও হতে থাকে।

ঢাকার টঙ্গীতে দিনমজুরের কাজ করা অবস্থায় ১৯৯৪ সালে আলমগীরে’র সাথে বিয়ে হয় আয়েশা বেগমের। নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার বেগমগঞ্জ গ্রামের জামাল উদ্দিন পাটোয়ারীর মেয়ে তিনি । দীর্ঘ দিন জীবন যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে ২০১৫ সালে সপরিবারে স্বামীর জন্ম স্থান রুদ্রকর গ্রামে ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি রুদ্রকর গ্রামের মধ্যপাড়ায় একটি পরিত্যাক্ত হিন্দু বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন ।

ঢাকা থেকে ফেরার পর পরিবারের সদস্যদের খাওয়া-পরা ছাড়াও ছেলে-মেয়ের লেখা-পড়া নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটছিল আয়েশার। প্রতিবেশীরাও তখন তাকে এড়িয়ে যেতো। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে প্রকল্পের কল্যাণে আয়েশা এখন অনেকটাই স্বাবলম্বী। পরিবারের সকল সদস্য মিলে ঝালমুড়ি ও ফুসকা তৈরীতে সহযোগিতা করে। আর স্বামী আলমগীর মোল্লা তা বিক্রি করেন রুদ্রকর বাজারে এবং স্কুলের সামনে। প্রতি মাসে তার পরিবারের আয় এখন ১২-১৫ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে রুদ্রকর বাজারে ৮০ হাজার টাকা সেলামি দিয়ে একটি স্থায়ী দোকানও বরাদ্দ নিয়েছেন। সবমিলে ব্যবসার মোট লগ্নি এখন প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। ঠিকঠাক মতো নতুন দোকান শুরু হলে মাসে তার আয় আরও ৫-৭ হাজার টাকা বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।

আগামীতে সঞ্চয় বাড়িয়ে জায়গা কিনে বাড়ি করার পরিকল্পনার কথাও জানালেন জীবন যুদ্ধের বিজয়ী আয়েশা।

তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে আকাশ মোল্লা শরীয়তপুর সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং ছোট মেয়ে তামান্না আক্তার রুদ্রকর নীলমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। বৃদ্ধা শাশুরীর দেখা-শুনা করেন। ছেলেমেয়েরা পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে মা-বাবাকে কাজে সহযোগিতা করে।

আয়েশা বেগমের স্বামী আলমগীর মোল্লা জানান, তিন বছর আগে আমার কোন সামাজিক মর্যাদা ছিল না। আমাকে দেখলে প্রতিবেশীরা মুখ ফিরিয়ে নিতেন। এখন বাজারে আমাকে দেখলে ডেকে চা খেতে বলেন। ‘একটি বাড়ি একটি খামার’, প্রকল্প আমাকে পারিবারিক স্বচ্ছলতা ও সামাজিক মর্যাদা দিয়েছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে কৃতজ্ঞ।

জীবন সংগ্রামে বিজয়ী নারী আয়েশা বেগম বলেন, আমি যখন হতাশায় ডুবে যেতে বসেছিলাম, তখন আমি একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প আমাকে রক্ষা করে । এ প্রকল্পের কল্যাণে দুই বছরের ব্যবধানে আজ আমি অভাবমুক্ত।

শরীয়তপুরের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী কল্লোল সরকার জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে অতি দরিদ্র ও ছিন্নমূল নারী-পুরুষ স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এই প্রকল্পের সদস্যরা এখন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে যাওয়ার। সূত্র: বাসস

চট্টগ্রামে ২ দিনব্যাপী ‘বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস’ পালিত

হাবিপ্রবিতে ৪র্থ এনডিএফ বিডি রংপুর বিভাগীয় বিতর্ক উৎসব-২০১৭ উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন

নড়াইলে আমন ধানের পোকা দমনে কৃষি বিভাগের উদ্যোগ গ্রহণ

বরগুনার আমতলীতে ফলদ গাছের চারা বিতরণ

Presentation of AntaPhyt MO at the 25th Latin American Poultry Congress

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম