এক একর জমিতে চুই চাষ করে বছরে আয় ৫ লাখ

1312

চুই

মসলা হিসেবে চুইগাছের শেকড় ও কান্ড ব্যবহার করা হয়। ভেষজ ওষুধ তৈরির জন্য ফল, বীজ ও লতা ব্যবহার করা হয়। শেকড় ও কান্ডের কালচে বাকল চেঁছে তুলে ফেলে লম্বা ফালি ফালি করে রান্নার সময় তরকারি বা মাছের ঝোলে, মাংসের কারিতে মিশিয়ে দেয়া হয়। এতে রান্নায় সুঘ্রাণ আসে, ঝাল হয় ও স্বাদ বেড়ে যায়। তা ছাড়া চুইগাছের ঝাল মরিচের চেয়ে উপকারী, স্বাস্থ্যসম্মত ও ভেষজ গুণসম্পন্ন।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে উপকূলীয় জেলাসমূহে চুইঝাল একটি পরিচিত ও জনপ্রিয় গুরুত্বপূর্ণ মসলা ফসল। বিশেষ করে বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, নড়াইল প্রভৃতি জেলায় চুইঝালের চাষ করা হয়। চুইঝালের চাষ প্রধানত বসতবাড়িতেই সীমাবদ্ধ।

চুইঝালকে সবাই চেনে ‘চই’ বা ‘চুই’ নামে। সাধারণ মানের এক কেজি চুইয়ের দাম দুইশ থেকে তিনশ টাকা। আর পুরনো মোটা বয়েসী পাকা চুই হলে তো কথাই নেই, আটশ টাকা কেজিও বিক্রি হয়। এ হিসাবে এক একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চুই চাষ করে বছরে প্রায় ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।

এ অঞ্চলের পুরনো লোকদের মুখে এখনো চুইয়ের স্বাদ লেগে আছে। এ অঞ্চলের লোকপ্রবাদ রয়েছে, কবিকা হচ্ছে কৈ মাছ আর চবিকা হচ্ছে চই বা চুই। এ দুয়ের মিলনে যেটা তৈরি হয় সেটা যেন রসমাধুরী। যশোরের মাথা মোটা কৈ যেমন এককালে বিখ্যাত ছিল, তেমনি অনেকের কাছে চুইও ছিল তেমন। এ অঞ্চলের বাজারে গেলে রোজই চুইয়ের দেখা পাওয়া যায়। উপাদেয় রান্নায় চুই এ এলাকার এক অন্যতম জনপ্রিয় মসলা ও সুগন্ধি ফসল। মরিচের ঝালের বদলে চুইকেই ঝাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চুইয়ের কান্ড শক্ত কাঠের মতো দেখালেও রান্নার পর তার মজ্জা মাখনের মতো গলে নরম হয়ে যায়। শজনে ডাঁটার মতো রান্না করা চুইঝালের টুকরো শিশিয়ে চিবোতে বেশ মজা লাগে।