আকাশ পথে পরিবহন ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে বাচ্চা যদি বিলম্বে পৌছে তবে এমন অস্বাভাবিক অবস্থার কারণে বাচ্চার উপর যথেষ্ট ধকল পড়ে। ফলে, একদিন বয়সের বাচ্চার মৃত্যুর হার স্বাভাবিকভাবে সঠিক সময়ে অবতরণের হার অপেক্ষা বেশি হয় এবং একই কারণে প্রথম সপ্তাহে বাচ্চার মৃত্যুর হার তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। এসব ক্ষেত্রে নিম্নে উল্লিখিত বিষয় সমূহের প্রতি গুরুত্ব দিলে খামারে ক্ষতির প্রভাব যতদূর সম্ভব কমাতে সাহায্য করবে।
বিমান বন্দরে জরুরিভাবে করণীয়
কোনো কারণবশত বাচ্চা পরিবহনের বিমানটির অবতরণে যদি দেরী হয়, তবে তাৎক্ষণিকভাবে বিমান বন্দরের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে কাস্টমার চিকে ট্র্যাকের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে বিমান অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাগুলি চিক ট্রাকের লোড দিয়ে বিমান থেকে কার্গো সেন্টারে দ্রুত নিয়ে আসা যায়। এখানে মনে রাখা দরকার যে, বিমান থেকে বাচ্চাগুলি নামানোর পর আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রার একটা বড় ধরনের তারতম্য ঘটে এবং চূড়ান্তভাবে ঘোষণাপত্র পেতেও খুব দেরী হয়। কার্গো সেন্টারে বাচ্চাগুলি অত্যন্ত খারাপ এবং প্রতিকূল অবস্থায় থাকে। এ সময় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কার্গো সেন্টার থেকে বাচ্চাগুলি চূড়ান্তভাবে ডেলিভারী নেয়ার জন্য বিমানের প্রতিনিধির সাথে পূর্বে থেকেই একটি ব্যবস্থা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
কার্গো সেন্টারে বহনযোগ্য ফ্যানের ব্যবস্থাকরণ
কার্গো সেন্টার থেকে বাচ্চা চূড়ান্তভাবে ডেলিভারী পেতে সাধারণত বেশ সময় লেগে যায়। এ সময় বাচ্চাগুলি অত্যন্ত গরম ও প্রতিকূল পরিবেশে অত্যন্ত কষ্ট পেতে থাকে। এ অবস্থা থেকে বাচ্চাদেরকে সাচ্ছন্দ্য প্রদানের জন্য মুক্ত বাতাসের প্রয়োজন হয়। এজন্য গরমের আধিক্য থেকে এদেরকে রক্ষার জন্য বহনযোগ্য ফ্যান চালু করা উচিত। প্রকৃত অর্থে বিমান বন্দর থেকে বাচ্চা গ্রহণের পর কাটুর্ন গাড়িতে তোলা, পরিবহন ও ব্রুডিং রুমে নামানো পর্যন্ত বহনযোগ্য ফ্যান চালু রাখতে হবে।
পানিশূন্যতা রোধ
গরমের আধিক্যহেতু বাচ্চাদের দেহে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এ সমস্যা থেকে বাচ্চাদের রক্ষার জন্য কার্গো সেন্টার থেকে পরিবহনকালীন পূর্ণাঙ্গ সময়ে কাটুর্নের মাঝে rehydration gel সরবরাহ করা প্রয়োজন। তাহলে এই জেল থেকে বাচ্চারা পানি গ্রহণ করে সুস্থ থাকবে। এরপর বাচ্চাদের ব্রুডারে ছেড়ে দিলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক হবে এবং এরা পরিমিত পুষ্টি পাবে। এর ফলে বাচ্চাদের স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করবে। এসময়ে বাচ্চাদের পা সবল, মোটাতাজা ও চকচকে দেখাবে। এরূপ সঠিক ব্যবস্থাপনায় বাচ্চা ঠিকমতো খাবে এবং এদের খাদ্যথলি পরিপূর্ণ ও নরম থাকবে।
বাচ্চা পরিবহন ও ব্যবস্থাপনা
বাচ্চার নিরাপত্তা ও সাচ্ছন্দ্যের জন্য নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কার্গো সেন্টার থেকে খামার পর্যন্ত বাচ্চা পরিবহনের জন্য অবশ্যই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহন/যানবাহন ব্যবহার করতে হবে। বাচ্চাদের নিরাপত্তা, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, সাচ্ছন্দ্য ও সুস্বাস্থ্য রক্ষার্থে পরিবহনকালে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাসমূহ প্রতিপালন বিশেষভাবে জরুরিঃ
» বাচ্চা বহনের পূর্বে পরিবহনের গাড়িটি অবশ্যই জীবাণুনাশক দ্বারা ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।
» পরিবহনের গাড়িতে অবশ্যই বায়ু চলাচলের ভালো ব্যবস্থা থাকতে হবে যাতে বাচ্চারা পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন পেতে পারে এবং স্বাস্থ্যকর অবস্থা বজায় থাকে।
» কম জায়গায় বেশি বাচ্চা বা বাচ্চার কাটুর্ন গাদাগাদি করে রাখা মোটেও ঠিক নয় কারণ এর ফলে বাতাসের প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হবে ও গরমের আধিক্য দেখা দিবে।
» বাচ্চা পরিবহনকালে গাড়ির চালককে সংযত হয়ে গাড়ি চালাতে হবে কারণ গাড়ির গতি বেশি হলে ঝাঁকুনি বেশি হয়। এতে বাচ্চাদের কষ্ট হবে। তাছাড়া গাড়ির গতি বেশি থাকলে ব্রেক চাপার সময় স্বভাবতই ধাক্কা লাগে। এতে বাচ্চারা একে অপরের উপর গিয়ে পড়ে। এ ধরনের সমস্যা বেশি হলে বাচ্চারা hock joint এ আঘাত প্রাপ্ত হয় ও সেখানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। পরবর্তী পর্যায়ে সেখানে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে। এর ফলে ব্রুডিং এর সময় বাচ্চা খোঁড়া ও অন্যান্য সমস্যায় ভুগতে থাকে।
বাচ্চার সুস্বাস্থ্য রক্ষার্থে প্রারম্ভিক পুষ্টির গুরুত্ব
বাচ্চার মৃত্যুহার কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও এদের দৈহিক বৃদ্ধি যথাযথ রাখার জন্য প্রারম্ভিক পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। হ্যাচারীতে বাচ্চা ফোটার পর দীর্ঘসময় পরিবহনের মাধ্যমে খামারে বাচ্চা আনীত হয়। এর ফলে বাচ্চার দেহের সঞ্চিত শক্তি ও বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয়। এজন্য খামারে বাচ্চা পৌছানোর পরই পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য সরবরাহ করে এই ঘাটতি পূরণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তাই খামারে বাচ্চা পৌছানোর পর ১-৩ দিন দ্রবণীয় (soluble) ও সহজপাচ্য পুষ্টিকর খাদ্য প্রদান করা উচিত। এ ক্ষেত্রে extruded feed খাওয়ানো উত্তম। এর ফলে ব্রুডিং এর সময় খোঁড়া, বিকলাঙ্গ বা অসমভাবে বেড়ে ওঠা বন্ধ হয়ে বাচ্চারা সুষমভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবে।
বাচ্চা খামারে পৌছানোর পর অতি দ্রুত পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য প্রদানের কারণ হচ্ছে মাতৃগর্ভ থেকে প্রাপ্ত ডিমের কুসুম থলির উপর নির্ভর না করা। এর কারণ হচ্ছে, কুসুম থলি থেকে প্রাপ্ত পুষ্টি বাচ্চা ফোটার পর কিছু সময় পর্যন্ত বাচ্চাকে পুষ্টি জোগান দেয়। এজন্য বাচ্চাকে দ্রুত পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার সরবরাহ না করলে এদের পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি সাধন ব্যাহত হবে ও প্রয়োজনীয় দৈহিক বৃদ্ধি থেকে বাচ্চারা বঞ্চিত হবে।
আমরা জানি, বিভিন্ন ধরনের এন্টিবডি সৃষ্টিতে বার্সা অব ফেব্রিসিয়াস (Bursa of Fabricius) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এই কার্যক্রম চালুর জন্য বাচ্চা ফোটার ৪ দিনের মধ্যে বার্সা সব ধরনের কাজ শুরু করে। এর ফলে বাচ্চা ফোটার সময় বার্সাল নালী (Bursal Lumen) উন্মুক্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরিবেশের এন্টিজেনসমূহ বার্সাল লুমেনে প্রবেশ করে ও পরবর্তীতে লিস্ফয়েড ফলিকুলস এ একক ও ঘূর্ণায়মান চোষক হিসাবে অবস্থান করে। ধারণা করা হয়, বার্সাল পেরিফেরাল অঙ্গের কাজ হলো এন্টিজেনের বিরুদ্ধে স্টেম সেলকে (Stem cell) সক্রিয় করে দ্রুত বিস্তার ঘটানো। এর ফলে সৃষ্ট এন্টিবডি এন্টিজেনকে প্রতিরোধে সক্ষম হয়।
বাচ্চা ফোটার পরবর্তী পর্যায়ে পরিপাকতন্ত্র অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় থাকে। কারণ এ সময় পরিপাকতন্ত্রের পূর্ণ সিস্টেমটি অকার্যকর অবস্থা থেকে কার্যকর হবার প্রক্রিয়ায় থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাচ্চা ফোটার পরবর্তী পর্যায়ে খাদ্যের প্রভাব ক্ষুদ্রান্তের উন্নতি সাধন করে। বিজ্ঞানী ডিবনার্স এর মতে বাচ্চা ফোটার পরবর্তী পর্যায়ে খাদ্যের প্রয়োগ বার্সার উন্নয়ন সাধন করে।
প্রারম্ভিক বয়সে পুষ্টি বাচ্চার দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে কার্যকর প্রভাব ফেলে। গবেষণায় দেখা গেছে বাচ্চা ফোটার ১ম দিন থেকে সব ধরনের সিস্টেম উন্নয়নের জন্য একটি সংকটপূর্ণ সময় অতিবাহিত হয়। এ কারণে দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের জন্য বাচ্চা ফোটার প্রথম দিন থেকে পরিমিত পরিমাণ পুষ্টি নিশ্চিত করা এবং সঠিক পরিচর্যা এতো গুরুত্বপূর্ণ। প্রারম্ভিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করলে বাচ্চার পরিপাকতন্ত্রের গঠন, ইমিউন সিস্টেম (Immune System), বার্সার উন্নয়ন, তাপ সহিষ্ণুতা এবং পেশী বৃদ্ধি সঠিক সময়ে উপযুক্তভাবে সুগঠিত হবে।
পানি সরবরাহের গুরুত্ব
একদিন বয়সের বাচ্চা ফার্মে পৌছানোর সাথে সাথে বাচ্চাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরিষ্কার পানি পানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সরবরাহকৃত বাচ্চার পানযোগ্য পানির তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অধিক ঠান্ডা পানি বাচ্চার দেহের তাপমাত্রা অতি শীঘ্রই কমিয়ে ফেলে এবং তা প্রতিহত করার মত ক্ষমতা বা পর্যাপ্ত শক্তি কোনটিই বাচ্চার দেহে থাকে না। আবার বাচ্চা গরম পানিও পান করতে পছন্দ করে না। কাজেই বাচ্চার জন্য সরবরাহকৃত খাবার পানির তাপমাত্রা ২০-২৫০ সে এর মাঝে সংরক্ষণ করতে হবে।
এই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে ছোট ছোট পানির পাত্র সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে নিপল ড্রিংকার ব্যবহারকারীদের নিপল থেকে সরবরাহকৃত পানির চাপ কমাতে হবে; যাতে বাচ্চাগুলি ফোঁটায় ফোঁটায় ঝলমলে পড়া পানি পান করতে আকৃষ্ট হয়। বিশেষ করে ধকল পীড়িত বাচ্চা যে গুলোর নড়াচড়া করার মত শক্তি থাকে না সে বাচ্চাগুলো নিপলে পানির চাপ যদি বেশি হয়, তাহলে তা পান করতে পারে না। সুন্দর বা সহজ ব্যবস্থাপনার জন্য অতিরিক্ত কিছু ছোট ছোট পানি ভর্তি পানির পাত্র, প্ল্যাস্টিক ট্রে, ব্যবহারিক ট্রে এবং ব্রুডার ব্যবস্থাপনায় অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সবর্দা প্রস্তুত রাখা দরকার।
মুরগীর বাচ্চা
সঠিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম ৮ ঘন্টা পর বাচ্চার খাদ্য থলির ৮০% পূর্ণ হয়
বাচ্চার সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রচুর পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রয়োজনে পানির সাথে ইলেকট্রোলাইট বা চিনি মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করে খাওয়ানো যেতে পারে। তবে নিপল ব্যবস্থাপনায় এই মিশ্রণ ব্যবহারের সময় পানির রাস্তায় আঠার মত লেগে অনেক সময় পানির লাইন বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কাজেই এমন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি যাতে না হয় সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
খাদ্য সরবরাহ
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার পর খাদ্য পরিবেশন করতে হবে। একদিন বয়সের বাচ্চা সাধারণত কার্বোহাইড্রেট সহজভাবে হজমের মাধ্যমে তাদের দেহে শক্তি সঞ্চার করে এবং এভাবে তাদের ব্যয়িত শক্তির ঘাটতি পূরণ করে থাকে। পানির পাত্রের সরবরাহ কম হলে বাচ্চা পানির পাত্র খুঁজে পায় না। ফলে ক্ষুধা নিবারণের জন্য তাড়াহুড়ো করে শুকনা খাদ্য খেয়ে অনেক সময় বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে। এ ধরনের সমস্যা থেকে বাচ্চাকে নিরাপদে রাখার জন্য একই সাথে পানি এবং খাদ্য সরবরাহ করা উচিত।
প্রতিবারই খাদ্য এবং পানি সরবরাহের পর কিছু খাদ্য ভিজে নষ্ট হয়। এই পানিতে ভিজা খাদ্য পুনরায় খাদ্য সরবরাহের সময় পরিষ্কার করে শুকিয়ে খেতে দেয়া উচিত। অন্যথায় ঘরের উচ্চ তাপমাত্রায় খাদ্যে ব্যাকটেরিয়া এবং মোল্ড অতি দ্রুত জন্মাতে পারে। প্রয়োজনে বাচ্চাকে চিনির দ্রবণ ভিটামিনের সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। বাচ্চার জন্য ভাত সহজপাচ্য এবং বাচ্চা এটা হতে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট পেতে পারে। এছাড়া ভাঙ্গা কর্ণও বাচ্চাকে খাওয়ালে একই ফল পাওয়া যাবে।সঠিক ব্যবস্থাপনায় প্রথম ২৪ ঘন্টা পর বাচ্চার খাদ্য থলির ৯০% পূর্ণ হয়
ধকল বা পীড়নজনিত কারণে যে বাচ্চা গুলো চোখ বন্ধ করে থাকে, সেগুলোকে ডুপালাইট (০.৯% সোডিয়াম ক্লোরাইড) অথবা সিরাম ইলেকট্রোলাইট চামড়ার নীচে ইনজেকশন করা যেতে পারে। বাচ্চার ঘাড়ের চামড়ার নীচে ১ মিলি করে ঝুঁকিমুক্তভাবে ইনজেকশন করা যেতে পারে। ভাল ফল পাওয়ার জন্য এটা একটা বিশেষ উপায়। বাচ্চা পৌছানোর পর বেশ কিছু সময় বিশ্রাম নেয়ার পর চমড়ার নীচে এই ইনজেকশন দেয়া যায়।সঠিক ব্যবস্থাপনায় খাদ্য গ্রহণের পর বাচ্চার খাদ্য থলির প্রকৃত অবস্থাতবে বাচ্চাগুলোকে সাধারণ পানি হতে দূরে রাখতে হবে। কোনো কারণে ইলেকট্রোলাইটের অভাব হলে সেক্ষেত্রে ম্যারেক ডায়লুয়েন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
অন্যান্য আবশ্যকীয় সরঞ্জামাদি
প্রথম দিনে ঘন্টা বাজিয়ে পানি ও খাদ্য সরবরাহের অভ্যাস করলে বাচ্চা অতি সহজে পানি এবং খাদ্য খুঁজে পেতে পারে। ফলে বাচ্চার ধকল বা পীড়ন অনেকটা কমে যায়। এমতাবস্থায় বাচ্চাদেরকে সম্পূর্ণ ব্রুডারের মাঝে ছেড়ে দেয়ার পর যদি এরা ব্রুডারের প্রান্ত দেশেও অবস্থান করে তথাপি এদের পানি ও খাদ্য খুঁজে খেতে অসুবিধা হয় না। তবে চেইন ফিডার ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে বাচ্চা এভাবে মেঝেতে ছেড়ে দেয়া যাবে না, কারণ বাচ্চাগুলি চেইনের উপর লাফালাফি করে থাকে। কিন্তু দুর্বল বাচ্চাগুলির শক্তি কম থাকায় ঐভাবে লাফালাফি করতে পারে না। চেইন ফিডার এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে বাচ্চা চেইনের নীচ দিয়ে যাতায়াত করতে পারে এবং সুন্দরভাবে বিচরণ করতে পারে বা অতি সহজভাবে খাদ্য ও পানি পানের সুবিধা পায়।
প্রথম সপ্তাহে বাচ্চাকে কাগজে ছড়ায়ে খাবার দেয়ার অভ্যাস করাটা উত্তম। একদিন বয়সের বাচ্চার ঘরে পানিশূন্যতা রোধ করার জন্য বাতাসের আর্দ্রতা কমপক্ষে ৬৫% নির্ধারণ করতে হবে। ঘরের একপাশে সর্বদা পানি ভর্তি বড় বালতি রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে বাচ্চাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ঝলমলে নিপল লাইনের ব্যবস্থা করতে হবে।
তাপমাত্রা
একদিন বয়সের বাচ্চাদের ধকল বা পীড়ন রোধ করা জন্য ব্রুডার ঘরে সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বাচ্চার সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ব্রুডার ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা অপেক্ষা ১-২০ সে বেশি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। উল্লিখিত সব ব্যবস্থাদি সঠিকভাবে সম্পন্ন করার পর বাচ্চার দেহের তাপমাত্রা নেয়া যেতে পারে। বাচ্চার দেহের উপযুক্ত তাপমাত্রা হবে ৪০০ সে। এখানে উল্লেখ্য যে, বাচ্চার সুস্বাস্থ্য রক্ষা এবং সার্বিক বৃদ্ধির জন্য দেহের প্রকৃত তাপমাত্রা ৪০০ সে এ নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি এবং এজন্য ব্রুডার ঘরের তাপমাত্রা অবশ্যই সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। রেকটাল তাপমাত্রা ইনফ্রারেড এয়্যার থার্মোমিটার দ্বারা অতি সহজেই নির্ণয় করা যায়।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ১৭অক্টোবর ২০২২