এবার পঞ্চগড়ে আমনের বাম্পার ফলনের আশা

343

eBjxVOt

জেলায় আমন ক্ষেতে দোল খাচ্ছে সবুজ ধান গাছ জুড়ে মাঠে এখন শুধুই সবুজের সমারোহ। অথচ আজ থেকে এক মাস আগে কৃষকরা ভাবতেও পারেনি এই মৌসুমে তারা ক্ষেতে আমন ধান আবাদ করতে পারবেন। দেরীতে বৃষ্টি হলেও জমিতে চারা লাগিয়ে সকল বাধা কাটিয়ে তারা এখন আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছে।

পঞ্চগড়ের কৃষকদের প্রাণ, প্রকৃতি নির্ভর আমন ধান। তুলনামুলকভাবে উচু জমি এবং মাটিতে বালুর পরিমাণ বেশি হওয়ায় এখানে সেচ নির্ভর বোরো ধান অন্যান্য জেলার চেয়ে কম আবাদ হয়। তাই একমাত্র ভরসা আমন ধান। এই আমন ধান কৃষকের সারা বছরের খাবারসহ পরিবারের খরচের যোগান দেয়। আদিকাল থেকে চলে আসছে এই নিয়ম। কিন্তু প্রকৃতি এবার মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় সময়মত বৃষ্টিপাত হয়নি। বৃষ্টির অভাবে আমন চাষ নিয়ে শঙ্কায় পড়ে কৃষকেরা। অতিরিক্তি টাকা খরচ করে অনেক সামর্থ্যবান কৃষক সেচ দিয়ে জমিতে আমন চারা রোপণ করে। বৃষ্টি না হওয়ায় চারা রোপনের পরেও জমিতে সেচ দিতে হয়।

এরপর আগস্টের শুরুতে প্রকৃতি আবারও মানুষের সহায় হয়। অঝোর ধারার বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় মাঠ-ঘাট। আগে লাগানো এবং নদী পাড়ের নীচু এলাকার অনেক আমন ক্ষেত পানিতে ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাময়িক বন্যা দেখা দিলেও বৃষ্টি কমে গিয়ে পানি সরে যায়। কৃষকেরা তৈরি ক্ষেতে পুরোদমে আমন চারা লাগাতে শুরু করে। সেই থেকে কিছুদিন পর পর বৃষ্টি হচ্ছে। আর কয়েকদিন এমন আবহাওয়া বিরাজ করলে এবারও আমনের বাম্পার ফলন হবে আশা করছে কৃষকেরা।

পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার বেংহারি গ্রামের কৃষক দারাজ উদ্দীন জানান, এবার আমি ১০ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত করেছিলাম। বীজতলায় চারাও প্রস্তুত ছিল। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে জমিতে চারা লাগাতে পারিনি। বৃষ্টি হওয়া মাত্রই জমিতে চারা লাগিয়েছি। প্রয়োজনীয় সকল সার ও কীটনাশক দিয়েছ্ িএকমাসের মধ্যেই সবুজে ভরে গেছে আমন ক্ষেত। তিনি বলেন , এখনও জমিতে পানি জমে আছে, মাঝে মধ্যে বৃষ্টিও হচ্ছে। আর দুই-তিন সপ্তাহ এমন আবহাওয়া বিরাজ করলে পূর্ববর্তী বছরের মতই আমন ধান ঘরে তুলতে পারব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বাসসকে বলেন, চলতি আমন মৌসুমে পঞ্চগড় জেলায় ৯৬ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে মৌসুমের শেষে বৃষ্টিতে শেষ পর্যন্ত ৯৭ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপন করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ১৬৫ হেক্টর বেশি। তিনি আরও বলেন, গত মাসের বন্যায় এখানে ২৬১ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যার পানি সরে যাওয়ায় সেই ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেতেও নতুন করে চারা লাগানো হয়েছে। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। অন্য কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারও বাম্পার ফলনের আশা করছেন। সূত্র: বাসস

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম