এবার পাখি তাড়াতে ডিজিটাল কাকতাড়ুয়া!

1337

9858ef123796000222222

গ্রামগঞ্জে পাখি তাড়ানোর জন্য খড়ের কাঠামোর মাথায় একটা মাটির হাঁড়ি আর তাতে এঁকে দেয়া হয় ভুতের চোখ মুখ। নাম তার কাকতাড়ুয়া। পাখিরা যাতে ক্ষেতের ফসল নষ্ট করতে না পারে সেজন্যই এ ব্যবস্থা।

কিন্তু সময় তো পাল্টিয়েছে। সমগ্র কৃষি ব্যবস্থা যখন প্রযুক্তির আওতায় তখন কাকতাড়ুয়া নয় কেন?

চার বছর আগেই এই কাকতাড়ুয়ার অত্যাধুনিক সংস্করণ বের করেছেন ‘ডাচ বার্ড কন্ট্রোল’ গবেষকরা। দেশটির সেন্টার ফর এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সেন্টারে ‘এগ্রিলেজার’ প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন তারা। বাংলায় এ প্রযুক্তিকে বলা যায় ‘লেজার কাকতাড়ুয়া’। কারণ, যন্ত্রটির কর্মকাণ্ড পুরোপুরি লেজারভিত্তিক। তবে এই লেজার পাখিদের কোনো ক্ষতি করে না, শুধু ভয় দেখায়।

প্রচলিত কিংবা সনাতনী ধারার কাকতাড়ুয়া কিন্তু খুব বেশি কার্যকর নয়। ফসলের মাঠে বাতাসের দোলায় কাকতাড়ুয়া নড়াচড়া না করলে পাখিরা সেভাবে ভয় পায় না। তা ছাড়া এ পদ্ধতিতে পাখিরা একসময় অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু ‘এগ্রিলেজার’ পাখিদের সে সুযোগ দেবে না। যন্ত্রটির সবুজ লেজার রশ্মি ফসলের মাঠে পাখিদের সব সময় তাড়া করবে। এই লেজার রশ্মিকে ‘শিকারি’ পাখি বা জন্তু ভেবে ফসলের ক্ষতিকর পাখপাখালি পালিয়ে যাবে।

যন্ত্রটির লেজার রশ্মির রং সবুজ-পাখিরা সবুজ রঙে কখনো অভ্যস্ত হতে পারে না। তবে এই লেজার রশ্মি মানুষ কিংবা পাখির শরীরকে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। চারপাশে ৩৬০ ডিগ্রি কোণে এক মাইল দূরত্বের মধ্যে কাজ করবে ‘এগ্রিলেজার’। চাইলে এই দূরত্ব আপনি কমবেশি করতে পারেন। দিনে-রাতে যেকোনো সময় ‘এসি’ (অলটারনেটিভ কারেন্ট) আর সৌরবিদ্যুতে চলবে ‘এগ্রিলেজার’। ১০ হাজার ডলার মূল্যের এই যন্ত্র দিয়ে আপনি গোটা একটা খামারের ফসলি জমির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন।

404016726c399769b328342f360

নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের মধ্যে ‘এগ্রিলেজার’ ভীষণ সাড়া ফেলেছে। যাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে যন্ত্রটি কেনার সামর্থ্য নেই, তারা কিনছেন সমবায়ের ভিত্তিতে। বাংলাদেশের কৃষিব্যবস্থায় এ প্রযুক্তি কাজে লাগানো যেতে পারে। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকেরই তা কেনার সামর্থ্য নেই। সমবায়ের ভিত্তিতে তা হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয়, দেশের প্রযুক্তিবিদেরা যদি শুধু ‘লেজার রশ্মি’ ধারণাটি দিয়ে বাংলাদেশি কাকতাড়ুয়ার সংস্কার সাধন করেন, তাহলে অন্তত নিষ্প্রাণ মানবদেহের গড়ন নিয়ে হ্যাংলা-পাতলা প্রহরীটি আরেকটু বেশি কার্যকর হবে। সূত্র: ফিউটুরিজম, বার্ডকন্ট্রোল গ্রুপ, এবিসি।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন