কবুতর পালন আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে

1434

[su_slider source=”media: 1984,1983″ title=”no” pages=”no”]

পৃথিবীতে প্রায় ১২০ জাতের কবুতর পাওয়া যায়। বাংলাদেশে প্রায় ২০ প্রকার কবুতর রয়েছে। বাংলাদেশের সর্বত্রই এসকল কবুতর পাওয়া যায়। বাংলাদেশের জলবায়ু এবং বিস্তীর্ণ শষ্যক্ষেত্র কবুতর পালনের জন্য অতন্ত উপযোগী। পূর্বে কবুতরকে সংবাদ বাহক, খেলার পাখি হিসাবে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এরা পরিবারের পুষ্টি সরবরাহ, সমৃদ্ধি , শোভাবর্ধনকারী এবং বিকল্প আয়ের উৎস হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এদের সুষ্ঠ পরিচর্যা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সঠিকভাবে প্রতিপালন করে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা যায়।

কবুতর পালনের প্রয়োজনীয় তথ্যবলী:

প্রাপ্ত বয়স্ক কবুতরের দৈহিক ওজন (জাতভেদে) ২৫০-৮০০ গ্রাম, প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার সময়কাল ৫-৬ মাস, কবুতর প্রতিবার ১ জোড়া ডিম দেয় (প্রথম ডিম দেওয়ার প্রায় ৪৮ ঘন্টা পর দ্বিতীয় ডিম দেয়), বাচ্চা উৎপাদনের বয়সকালে ৫-৬ বৎসর, ৪-৫ দিনে বাচ্চার চোখ ফোটে, ১৭-১৯ দিন বাচ্চা ফোটার জন্য ডিমে তা দেয়, ১০-১২ দিনে পালক গজায়, ২৮-৩০ দিন বাজারজাতকরণের বয়স, জীবনকাল ১৫-২০ বৎসর।

 কবুতর পালনের সুবিধা:

  • বিনিয়গ কম, প্রতিপালন অত্যন্ত সহজ এবং সংক্ষিপ্ত প্রজননকাল।
  • বেকার যুবক এবং দুস্থ মহিলাদের আয় বর্ধনের উৎস হতে পারে।
  • অল্প জায়গায় এবং সল্প খাদ্যে পালন করা যায় এবং রোগবালাই কম।
  • মাংশ সুস্বাদু, পুষ্টিকর, সহজে পাচ্য এবং প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পুরণের উৎস।
  • মল জৈবসার হিসাবে ব্যবহার করা যায়।

কবুতরের বাসস্থান:

উত্তম নিস্কাশন, পর্যাপ্ত সূর্যালোক এবং বায়ুচলাচল আছে এরূপ উঁচু এবং বালুময় মাটিতে কবুতরের ঘর করতে হবে, যা খামারীর আবাসস্থল থেকে ২০০-৩০০ ফুট দূরে এবং দক্ষিণমূখী হওয়া উচিত। মাটি থেকে ঘরের উচ্চতা ২০-২৪ ফুট এবং খাঁচার উচ্চতা ৮-১০ ফুট হওয়া ভালো। একটি খামারের জন্য ৩০-৪০ জোড়া কবুতর আদর্শ। এরূপ ঘরের মাপ হবে ৯ ফুট ৮.৫ ফুট। কবুতরের খোপ ২-৩ তলা বিশিষ্ট করা যায়। এরূপ খোপের আয়তন প্রতিজোড়া ছোট আকারের কবুতরের জন্য ৩০ সে.মি. ৩০ সে.মি. ২০ সে.মি. এবং বড় আকারের কবুতরের জন্য ৫০ সে.মি. ৫৫ সে.মি. ৩০ সে.মি. । ঘর স্বল্প খরচে সহজে তৈরী এবং স্থানান্তরযোগ্য যা কাঠ, টিন, বাঁশ, খর ইত্যাদি দিয়ে তৈরি করা যায়। খামারের ভিতরে নরম, শুস্ক খড়-কুটা রেখে দিলে তারা ঠোঁটে করে নিয়ে নিজেরাই বাসা তৈরী করে নেয়। ডিম পাড়ার বাসা তৈরীর জন্য ধানের খড়, শুকনো ঘাস, কচি ঘাসের ডগা জাতীয় দ্রব্যাদি উত্তম। খোপের ভিতর মাটির সরা বসিয়ে রাখলে কবুতর সরাতে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফুটায়।

চলবে…..
সূত্র: বিএলআরআই