২০২২-২৩ অর্থবছরের যে বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। ঘোষণাকৃত বাজেটে বিভিন্ন পণ্যের সম্পূরক শুল্ক, আমদানিশুল্ক অথবা মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) কমানো হয়েছে; ক্ষেত্র বিশেষে কমানো হয়েছে কর। ফলে বেশ কয়েকটি পণ্যের সাথে দাম কমতে পারে সব ধরণের ফিডের। তবে, ভিন্ন কথা বলছেন পোল্ট্রি সেক্টর সংশ্লিষ্টরা।
হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর খাবার তৈরির উপকরণে কর ছাড় দিয়েছে সরকার। এতে এসব পণ্যের উৎপাদন ব্যয় কমতে পারে। উৎপাদন খরচ কমলে ফিডের দাম কমতে পারে বলে আশা করছে সরকার।
এ বিষয়ে জানত চাইলে রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, পোল্ট্রি খাদ্য তৈরির যেসব উপাদান রয়েছে সবগুলোর দাম বেড়েছে। মূল উপাদান ভুট্টা এবং প্রোটিন। এসব বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এখন যদি সরকার এই বাজেটে কর ছাড় দেয় তাহলে বাইরের দেশে যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে তাতে দেশে প্রভাব পড়বে না।
তিনি আরো বলেন, সরকারকে পোল্ট্রি সেক্টরে বিশেষ নজর দিয়ে দেখতে হবে। বর্তমানে পোল্ট্রি ও ডেইরি উভয় খাতই সংকটে পড়েছে। সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপে এ থেকে উত্তরণ পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া সিন্ডিকেটের হাতে চলে যাবে এ সম্ভাবনাময় খাত।
কথা হয় বাংলাদেশ পোল্ট্রি খামার রক্ষা পরিষদের (বিপিকেআরজেপি) সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মোহসিনের সাথে। এই পোল্ট্রি সেক্টর বিশেষজ্ঞ বলেন, “সবকিছুর দাম বেড়েছে দ্বিগুণ হারে। সরকার গমের কর কমিয়েছে, মোলাসেসে কর কমিয়েছে। এসব মূলত পোল্ট্রি সেক্টরের নয়। পোল্ট্রি সেক্টরের মূল বিষয়ে খাদ্য। প্রোটিন ও ভুট্টার দাম কমলে খাদ্যের দাম কমবে । কিন্তু প্রোটিনের দাম আগের মতোই। ফলে দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়া পণ্যে সামান্য ছাড় দিয়ে কোন পরিবর্তন আশা করা যায় না। খাদ্যের দাম কমবে বলে মনে হয়না।”
তিনি আরোও বলেন,“সরকারের উচিত দ্রুত একটা সমাধান বের করা। পোল্ট্রি খাত নিয়ে আমরা চিন্তিত। সরকার ডিম-দুধ-মাংসের ঘাটতি যখন বুঝতে পারবে তথন আর কিছু করার থাকবে না। আগামী ৬ মাসের মধ্যে ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে সহজলভ্য প্রোটিনের উৎস। ডিম-দুধের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি হলে সাধারণ মানুষ কিনতে পারবে না। এতে অপুষ্টিতে ভুগতে হবে।”
এছাড়া দাম কমতে পারে বলে জানিয়েছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ও নন-এসি রেস্তোরাঁর ওপর ভ্যাট হার যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও ৫ শতাংশ এর পরিবর্তে উভয় ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। তবে তিন তারকা বা তদূর্ধ্ব মানের হোটেলে অবস্থিত রেস্তোরাঁয় এ ছাড় নেই। শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বিশেষায়িত হুইল চেয়ার আমদানিতে বিদ্যমান সকল ধরনের শুল্ককর বিলোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে হুইল চেয়ারের দাম কমতে পারে।
তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বাল্কে (একত্রে বিপুল পরিমাণে) বিক্রির উদ্দেশ্যে, বাল্কে কেনার ক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ের ক্রয়ে ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে। সুতার ভ্যাট কমানো হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের পড়ার উপকরণ ব্রেইল মুদ্রণের ওপর ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের কানে শোনার যন্ত্রে ব্যবহৃত ব্যাটারির ওপর প্রযোজ্য শুল্ক-কর কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১০জুন ২০২২