করতোয়ার বুকে সোনালি ধান: কৃষকের মুখে হাসি

334

সেখ জিয়াউর রহমান পঞ্চগড় থেকে: পঞ্চগড় শহরের বুক চিরে বয়ে চলা করতোয়া নদীতে সোনালি ধান কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।

১৪ মে দুপুরে করতোয়া সেতুর ওপর থেকে একজন কৃষকের ধান কাটার দৃশ্য হঠাৎ চোখে পড়ে যায়। এ সময় কৃষক মজিবর রহমানের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি একজন ভূমিহীন কৃষক। প্রায় ১৬ বছর তিনি এ নদীর তীরে ধান রোপণ করে আসছেন। এতে বেশ লাভবানও হয়েছেন। এ বছর তিনি প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ ধান রোপণ করেছেন। এর আগে তিনি ১০-১২ দিন বালি কেটি জমি তৈরি করেছেন। বালি কাটতে ৩ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করেতে হয়েছে। তাদের একবেলা খাওয়াসহ জনপ্রতি হাজিরা ছিল ৩শ টাকা। এছাড়াও ধান রোপণের এক মাস পর সার প্রয়োগ করতে প্রায় আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ধান রোপণের জন্য বীজতলা নদীর তীরেই করতে হয়েছে। এতে ৩৫ টাকা কেজি দরে বীজ সংগ্রহ করে বীজতলায় ছিটিয়ে দেন তিনি।

এ বছর ধান কেমন হবে জানতে চাইলে মুচকি হেসে বলেন ভালোই হবে। আল্লাহর রহমাতে কোনো বছর ঠকি নাই। ধানের শীষ দেখে মনে হয় ৩০ থেকে ৩৫ মণ ধান পাওয়া যাবে। ধান বিক্রি না করলে আমার ৬ সদস্যের পরিবারে সারা বছর চাল কেনা লাগে না। তিনি দুই বছরের ছোট ভাতিজাকে পাশে রেখে বিভিন্ন গল্পের সাথে ফুর্তিতে ধান কেটেই চলছেন। মজিবর রহমান শহরের পুরাতন ক্যাম্প এলাকার মৃত নবী হোসেন খানের ছেলে। তিনি এক সময় ভাঙ্গারি ব্যবসা করতেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শামছুল হক বলেন, এ বছরে জেলায় ১শ ৭০ হেক্টর নদীর তীরবর্তী বালুতে ধান চাষ হয়েছে। তবে আবাদি জমির তুলনায় বালু মাটিতে কিছুটা ধান কম হবে। এতে হতাশ হবার কিছু নেই। এর মাধ্যমে অনেক ভূমিহীন মানুষ অন্তত নিজের পরিবারের খাদ্যের চাহিদাটুকু নিশ্চিত করতে পারছেন।