করোনাকালেও চাষীদের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করছে আবুল খায়ের ট্যোবাকো

388

সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে তামাক কেনায় স্থানীয় তামাক কোম্পানি আবুল খায়ের টোব্যাকোকে জরিমানা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার লালমনিরহাটে ওই প্রতিষ্ঠানকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ওজন নিয়েও কৃষকদের সাথে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার আবুল খায়ের টোব্যাকোর তামাক ক্রয়কেন্দ্রে ওই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় এই তামাক কোম্পানিকে জরিমানা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এ. এস. এম মাসুদ-উদ-দৌলা। এ সময় সেখানে জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রতি বছর তামাকচাষীদের ন্যায্যমূল্যের অধিকার নিশ্চিত করতে তামাকের মূল্য নির্ধারণ করে দেয় সরকার। নির্ধারিত এ মূল্য অনুযায়ী এ বছর মানসম্পন্ন বার্লি-১ এর সর্বনিম্ন মূল্য ৯৫ টাকা, বার্লি-২ ৯১ টাকা, বার্লি-৩ ৮৮ টাকা এবং বার্লি গ্রেড বহির্ভুত তামাকের মূল্য দাম প্রতি কেজি ৪৬ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।

তবে কালীগঞ্জে সরকার নির্ধারিত ৯৫ টাকা কেজি দরের তামাক মাত্র ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় ক্রয় করছিল আবুল খায়ের টোব্যাকো। বিক্রয়কেন্দ্রে ছিল না নির্ধারিত মূল্যতালিকা। এছাড়া তামাক মাপার জন্য ডিজিটাল পাল্লা ব্যবহার করার কথা থাকলেও পুরানো পাল্লা দিয়েও ওজন করা হচ্ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তামাকচাষী জানান, ন্যায্য মূল্যের আশায় তামাক চাষ করলেও; প্রতি বছরই কম দামে তামাক কিনে নেয় আবুল খায়েরসহ স্থানীয় তামাক কোম্পানিগুলো। তামাক ঘরে তোলার পর, বিক্রি না করে কোনো উপায় থাকে না তাদের। এ কারণে গত বছরও লাভের মুখ দেখেননি তারা।

এই কৃষক জানান, করোনা মহামারির এ সময়ে সবাই ঘরে বসে থাকলেও তারা বসে নেই। তবে, ন্যায্য মূল্য না পেলে বিপদে পড়ে যাবেন তারা। কেননা, এই ন্যায্য মূল্যের ওপরই তাদের পরবর্তী ফসলের চাষাবাদ নির্ভর করছে।

এ ব্যাপারে এ. এস. এম মাসুম-উদ-দৌলা বলেন, ‘আমরা আমাদের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে অভিযান চালাই। সেখানে নির্ধারিত মূল্যের কোনো সাইনবোর্ড ছিল না। তামাকচাষীদের কাছ থেকে ৫৫ থেকে ৫০ টাকা দরে তামাক কিনছিলো। যেখানে সরকার নির্ধারিত মূল্য ৯৫ টাকা হওয়ার কথা। এছাড়া তামাক মাপার জন্যে সেখানে ডিজিটাল পাল্লার বদলে এনালগ পাল্লা ব্যবহার করা হচ্ছিলো। এ সময় আমরা আবুল খায়ের টোব্যাকোকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করি। এছাড়া জেলা বিপণন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে একটি মৌখিক অভিযোগও করে এসেছি।’

এছাড়া কৃষকের সব তামাক মাপার পর কয়েক কেজি তামাক জোরপূর্বক বিনামূল্যে নিয়ে নেয় বলেও অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান এ. এস. এম মাসুম-উদ-দৌলা।

তিনি আরো বলেন, ‘তামাকচাষীদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে- কোম্পানিগুলো নির্ধারিত মূল্যের বিলবোর্ড ঝুলাচ্ছে কিনা, সেই দাম অনুযায়ী তামাকচাষীদের কাছ থেকে কিনছে কিনা, ডিজিটাল পাল্লায় তামাকগুলো মাপা হচ্ছে কিনা; এ বিষয়গুলোকে আমরা জোর দিচ্ছি। তামাকচাষীদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ২৫ এপ্রিল ২০২১