ঝিনাইদহে করোনার প্রভাবে বিপাকে পড়েছেন গো খামারীরা। অন্যদিকে গো খাদ্যের দাম বাড়ায় ক্ষতির মুখে তারা। এই অবস্থা দীর্ঘমেয়াদী হলে পথে বসার আশঙ্কা তাদের। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধনঞ্জয়পুর গ্রামে ২০১৪ সালে ৪ একর জমির উপর এম আর এইচ এগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি গো খামার তৈরী করেন রোকনুজ্জামান রিপন।
সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ৭টি গাভী নিয়ে কর্মকান্ড শুরু করেন তিনি। বর্তমানে ছোট বড় ৪২ টি গরু রয়েছে তার ফার্মে। এর মধ্যে ২২টি গাভী আছে। যা থেকে প্রতিদিন দুধ হচ্ছে ১২০ লিটার। ব্র্যাক ডেইরি ফার্ম ও হোটেলে দুধ বিক্রি করলেও এখন তা বন্ধ রয়েছে। এতে পানির দামে স্থানীয়ভাবে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে তাকে। রোকনুজ্জামান রিপনের মতো ঝিনাইদহের বিভিন্ন অঞ্চলের খামারীদের একই অবস্থা। কোম্পানির বাইরের অতিরিক্ত দুধ এতোদিন মিষ্টিসহ বিভিন্ন খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে দেয়া হতো।
করোনার কারণে সেসব বন্ধ ও হাট-বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় ধস নেমেছে দুধের বাজারের। শুধু তাই নয় যানবাহনের কারনে গোঁ খাদ্য আনা নেওয়ার সমস্যার পাশাপাশি বেড়েছে দাম। ফলে সঠিকভাবে খাদ্য দিতে না পারায় দুধের উৎপাদনও কমেছে। বর্তমানে ২২টি গাভী থেকে ৬০ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। খামারী রিপন জানান, তার খামারে ৫/৬জন শ্রমিক কাজ করে। তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া এবং গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। ব্যাংক থেকে ১ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে সুদ দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তার । খামারী শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারি প্রণোদনাসহ ঋণের সুদ মওকুফের দাবি তার।
এই খাতটি দেশের মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। সরকার আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন এমনটাই দাবি দুগ্ধ খামারীদের। এ ব্যাপারে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আনন্দ কুমার অধিকারি বলেন, করোনায় খামারীরা লোকসানের বিষয়টি সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনাসহ খামারীরা সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা পাবে বলে আশা করছি। ঝিনাইদহ প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে জেলায় ছোট বড় প্রায় ৫০ হাজার দুগ্ধ খামার রয়েছে। প্রতিদিন দুধ উৎপাদন হয় ২৮৪ মেট্রিক টন।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৩জুন২০