করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পোলট্রি খাত

311

করোনাকালে দেশের পোলট্রি খাতে যে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু এই ক্ষতিগ্রস্ত খাতটির পুনর্গঠনে কোনো তাগিদ নেই উপর মহলের।

এ প্রেক্ষাপটে পোলট্রি খাতের দুটি সংগঠন-ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এবং বিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে এই মর্মে চিঠি দিয়েছে যে, পোলট্রি শিল্প পুনর্গঠনে কোনো পদক্ষেপের কথা বলা হয়নি প্রস্তাবিত বাজেটে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, নতুন করে কিছু ক্ষেত্রে ‘ভ্যাট ও উৎসে কর’ পরিবর্তনের কারণে আগামীতে পোলট্রি শিল্পোদ্যোক্তাদের ব্যয় বাড়বে। বেড়ে যাবে খাদ্যের খরচ। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে মুরগি ও ডিমের বাজারে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে-বর্তমানে পোলট্রি খাতে নতুন শিল্প স্থাপনের জন্য আমদানিকৃত যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও উপকরণের ওপর অগ্রিম কর এবং আগাম আয়কর আরোপ করা আছে। সাশ্রয়ী মূল্যে মুরগি ও ডিম উৎপাদনের স্বার্থে এবং পোলট্রি শিল্প পুনর্গঠনের জন্য এ দুই ধরনের কর প্রত্যাহার জরুরি।

করোনাকালে ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনে ভয়াবহ ধস নেমেছে। এতে পোলট্রি শিল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অথচ বিশেষত করোনা মোকাবিলায় সাধারণ মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রাণিজ আমিষের জোগান নিরবচ্ছিন্ন থাকা দরকার। তাই এ শিল্পকে বাঁচাতে এর পুনর্গঠন জরুরি হয়ে পড়েছে। পরিতাপের বিষয়, প্রস্তাবিত বাজেটে এ ব্যাপারে কোনো দিকনির্দেশনা বা পদক্ষেপের কথা বলা হয়নি।

ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি যুগান্তরকে বলেছেন, বাজেটে পোলট্রি শিল্পের জন্য নতুন কিছু নেই। উদ্যোগ নেওয়া হয়নি পোলট্রি খাদ্যের দাম কমানোর। তিনি আরও বলেছেন, এ শিল্পের উদ্যোক্তাদের আগাম কর দিতে হয়, বছর শেষে করপোরেট করের সঙ্গে সমন্বয় করে বর্ধিত টাকা ফেরত দেওয়ার বিধান রয়েছে, কিন্তু এ ধরনের অনেক টাকা এ শিল্পের উদ্যোক্তারা পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, এ থেকে উদ্ধারের একমাত্র উপায় হলো, আগাম কর দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা। আমদানিকারক বা সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কাঁচামাল ক্রয়ের ওপর বর্ধিত হারে উৎসে মূসক কর্তনের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন পোলট্রি শিল্পের উদ্যোক্তারা। আমরা মনে করি, পোলট্রি শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে হলে এ শিল্পের উদ্যোক্তাদের যুক্তিপূর্ণ দাবিগুলো বিবেচনা করা উচিত। মনে রাখা দরকার, আমিষের উৎস এই খাতটির সঙ্গে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ২৫ জুন ২০২১