পানামা রোগঃ এই রোগ কলাচাষির জন্য মারাত্মক সমস্যা। কারণ এ রোগের কারণে কলার উৎপাদন শূন্যের কাছাকাছি আসতে পারে। এ রোগ (Esarium oxysporum cubense) নামক এক প্রকার ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে।
রোগের অনুকূল অবস্থা :
(ক) আগের ফসলে রোগ থাকলে বা রোগাক্রান্ত গাছ থেকে চারা সংগহ্র করলে পরের বছর আবার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(খ) চারা রোপণের সময় বয়স কম হলে।
(গ) নিম্নমানের নিষ্কাশিত মাটি হলে।
(ঘ) অধিক আগাছা ও ঘাস হলে।
(ঙ) আন্তঃপরিচর্যার অভাব হলে এ রোগ হয়ে থাকে।
লক্ষণ :
(১) পুরনো পাতায় হলুদ বর্ণের দাগ দেখা যায়।
(২) পুরনো পাতা ক্রমান্বয়ে সমস্ত অংশ হলুদ হয়ে যায়। পাতার কিনারা ফেটে যায় ও বোঁটা ফেটে যায়। লিফব্লেট ( পাতা) ঝুলে পড়ে ও শুকে যায়।
(৩) দুই-তিন দিনের মধ্যে গাছের সব পাতা ঝুলে পড়ে (মধ্যের মাইজ বা হার্ট লিফ ছাড়া)।
(৪) কলাগাছের গোড়া মাটির লেভেলের কাছকাছি লম্বালম্বি ফেটে যায়।
(৫) আক্রান্ত গাছ থেকে অস্বাভাবিক থোড় বের হয়। (৬) আক্রান্ত গাছ ও রাইজোম উহার ভেতর কালচে বর্ণের দেখা যায়।
দমনব্যবস্থা :
(১) রোগমুক্ত মাঠ থেকে সাকার সংগ্রহ করতে হবে। (২) মাঠ থেকে রোগাক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
(৩) রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করতে হবে।
(৪) রোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয় এমন ফসল, যেমন- বেগুন, টমেটো, ঢেঁড়স প্রভৃতির সাথে ফসল চাষ না করা।
(৫) দুই-তিন বছর পর ফসল বদল করে শস্য পর্যায় অলম্বন করা।
(৬) চুন প্রয়োগ করে মাটির পি-এইচ (PH) বৃদ্বি করা। (৭) কীটনাশক প্রয়োগ করা। যেমন- করফুরান ৫ জি প্রতি গাছে ৫ গ্রাম হারে (১০কেজি/ একর) প্রয়োগ করতে হবে।
সিগাটোকা রোগঃ
কলার গাছে সিগাটোকা রোগের আক্রমণ হলে ফলন কমে যায়। এছাড়া এ রোগ দমন না করতে পারলে পুরো বাগানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। সঠিক পদক্ষেপ জরুরি।
লক্ষণ: এ রোগের আক্রমনে প্রাথমিকভাবে ৩য় বা ৪র্থ পাতায় ছোট ছোট হলুদ দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে দাগগুলো বড় হয়ে বাদামি রঙ ধারণ করে।
প্রতিকার: আক্রান্ত গাচের পাতা পুড়ে ফেলতে হয়। প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি.লি প্রপিকোনাজল ২৫০ ইসি গ্রুপের অথবা ২ গ্রাম কারবেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর স্প্রে করা দরকার।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ২৮ আগস্ট ২০২১