কাঁচাবাজারে দাম বাড়ছেই, স্বস্তি নেই গরু ও মুরগির মাংসের বাজারেও

155

সবজির বাজার চড়া; সেই সঙ্গে মাছ, গরু ও মুরগির মাংসের বাজারেও কোনো সুখবর নেই। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছিল ১৯০-২০০ টাকায়। তবে নতুন করে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকায়।

অন্যদিকে কক মুরগি, সোনালি মুরগি, গরুর মাংস, খাসির মাংসসহ সব ধরনের মাছের দাম আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে নতুন করে এসব পণ্যের দাম না বাড়লেও আমিষের চাহিদা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মেরাদিয়া হাট, খিলগাঁও বাজার ও সিপাহীবাগ বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ২১০ থেকে ২২০ টাকার নিচে ব্রয়লার মুরগি মিলছে না। কক মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, লেয়ার মুরগি প্রতিকেজি ৩৮০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি প্রতিকেজি ৩৪০-৩৫০ টাকায়।

মুরগির মাংসের পাশাপাশি ডিমের দামও এখন বাড়তি। গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১০-১৫ টাকা দাম বেড়ে এলাকাভেদে প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকায়। আর হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির ডিম প্রতি ডজন ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পোলট্রি বাজারের এমন পরিস্থিতির জন্য বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করছেন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা।

এসব বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই মাস আগেও ব্রয়লার মুরগি কেনা যেত ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। কিন্তু এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকায়। মাস চারেক আগেও যেখানে কক মুরগি বা সোনালি মুরগি প্রতিকেজি ২৫০-২৬০ টাকায় কেনা যেত, তারও দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকায়। দেশি মুরগির বিকল্প হিসেবে আগে কক মুরগির বিক্রি বেশি হলেও বর্তমানে দাম বাড়ায় এর বিক্রিতে কিছুটা টান পড়েছে। ফলে মুরগির বাজারে এখন চাহিদার শীর্ষে আছে ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি। বাজারে এক কেজি সোনালি মুরগি কিনতে লাগছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা। পাশাপাশি দেশি মুরগির দাম উঠেছে ৫৫০ টাকা কেজি।

বেসরকারি চাকরিজীবী মিলন হাওলাদার। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি তার, তাই মেরাদিয়া হাটে এসেছিলেন ব্রয়লার মুরগি কিনতে। তিনি জানান, গত দুই মাসের মধ্যে ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিকভাবে ৫০-৭০ টাকা বাড়লেও সে তুলনায় দাম কমে-বাড়ে ১০-১৫ টাকা করে। আগে ব্রয়লার মুরগি খেতে কিছুটা ঝামেলা হতো। কিন্তু ব্রয়লারের মতো অন্য সব মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন কিছুটা কমে ব্রয়লারই কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিটি দোকানে ব্রয়লার মুরগি বেশি বিক্রি হচ্ছে, কারণ আগের চেয়ে ব্রয়লারের চাহিদা অনেক বেড়েছে।

অন্যদিকে দুই মাসের ব্যবধানে কেজিতে ২০০ টাকা বেড়ে খাসির মাংস এখন বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকায়। আর ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকায়। আগের বাড়তি দামেই গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭৮০-৮০০ টাকায়।

এদিকে মাছের বাজারে হাইব্রিড তেলাপিয়া মাছ গত সপ্তাহে ছিল কেজিপ্রতি ২০০ টাকা, যা এ সপ্তাহে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। পাঙাশ প্রতিকেজি ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, দেশি কই মাছ প্রতিকেজি ৪৫০ টাকায়, শিং প্রতিকেজি ৫০০ টাকায়, আইড় মাছ প্রতিকেজি ১৪০০ টাকায়, রূপচাঁদা প্রতিকেজি এক হাজার ৬০০ টাকায়, আকারভেদে পুঁটি মাছ প্রতিকেজি ৫০০-৭০০ টাকায়, বড় সাইজের গলদা চিংড়ি প্রতিকেজি ১৩০০-১৪০০ টাকায় এবং বাইলা মাছ প্রতিকেজি এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা সোহেল মিয়া বলেন, দেশি নদীর মাছ বাজারে এখন কম আসছে। চাহিদাও বেশি, তাই দেশি সব মাছের দাম বর্তমানে কিছুটা বেশি। আড়াই থেকে তিন কেজির দেশি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা কেজিতে। আড়াই কেজির মধ্যে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৩০-৩৪০ টাকায়।

মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাছের দাম নাগালের মধ্যেই আছে। ক্রেতারা বলছেন, মুরগি ও গরুর মাংসের দাম বাড়ায় মাছের দিকেই ঝুঁকছেন বেশির ভাগ ক্রেতা।