পৃথিবিতে প্রাপ্ত যত কালো মাংস জাতের মুরগি আছে তার মধ্যে আয়াম সিমানি অন্যতম। এটি ইন্দোনেশিয়া ও জাভা দ্বীপপুঞ্জের একটী প্রাচীন মুরগির জাত। ১২০০ শ্বতাব্দীর শুরু থেকে জাতটি পরিচিতি পায়। মূলত তখন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক কাজে এ জাতের মুরগি ব্যাবহৃত হত।
ডাচ কর্নেল সেটেলার এর মাধ্যমে প্রথম এ জাতের মুরগি সারা বিশ্বে পরিচিতি পায়। পরবর্তিতে ১৯৯৮ সালে আরেক ডাচ বিজ্ঞানী জ্যান স্টভেরিক এটি ইউরোপে নিয়ে ব্রিডিং করান। এর ফলে এটি ইউরোপেও পরিচিতি পায়।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে আয়াম সিমানি মুরগি পালন করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে এটি পাওয়া না গেলেও এর সমগোত্রিয় জাত কাদাখনাথ বেশ জনপ্রিয়।
আয়াম সিমানি মুরগির বৈশিষ্ট্য
আয়াম সিমানির পালক, ঠোঁট, পা, ঝুটী ইত্যাদি সব কালো রঙের। এমনকি এদের হাড়-মাংসও কালো রঙের হয়ে থাকে। তবে এদের রক্তের রঙ লাল। বিষেশ একধরনের হরমোন ও জেনেটিক বৈশিষ্টের কারনে এদের মাংস এমন কালো রঙের হয়। সাধারনত মোরগ ২ থেকে ২.৫ কেজি ও মুরগি ১.৫ থেকে ২ কেজি হয়ে থাকে।
এরা সাধারন মানের ডিম দিয়ে থাকে। যা বছরে প্রায় ১৮০-২০০ টা পর্যন্ত। ডিমের ওজন ৪৫ গ্রাম। ডিমের রঙ হালকা বাদামি ও নীলাভ। কালো মাংসের সিল্কি মুরগি ডিমে তা দিতে খুব পছন্দ করলেও আয়াম সিমানি সম্পূর্ন এর বিপরীত। এরা সাধারণত ডিমে তা দিতে পছন্দ করেনা।
আচরণ / মেজাজ
এরা বেশ চঞ্চল জাতের মুরগি। কিছুটা বুনো স্বভাব লক্ষনীয়। পোকামাকর ও শাকপাতা এদের প্রিয়। আবদ্ধ পরিবেশ এরা খুব একটা পছন্দ করেনা। মোরগ কিছুটা আক্রমনাত্বক হতে পারে। তবে এরা বেশ বন্ধুত্বপূর্ন। মানুষের ধারেকাছে এরা থাকতে পছন্দ করে।
নীচে আয়াম সিমানি মুরগির সম্পূর্ণ জাতের তথ্য একনজরে দেয়া হলো।
আয়াম সিমানি মুরগি >> জাতের তথ্যঃ
জাতের নাম আয়াম সিমানি (Ayam Cemani)
অন্য নাম ব্লাকবেন, কালিমাসি
পালনের উদ্দ্যেশ্য মাংস ও ডিম, সৌখিন, (Ornamental)
জাতের আচরণ শান্ত, বন্ধুত্বপূর্ণ, সহজে পালন।
আকার মাঝারী-বড়।
তা দেয়ার প্রবণতা কম, তেমন প্রবণতা নেই।
ঝুঁটি মাঝারী কালো।
জলবায়ু সহনশীলতা উষ্ণ জলবায়ু।
ডিমর রঙ বাদামী ক্রীম ও হালকা নীলাভ।
ডিমের আকার মাঝারি
ডিম উৎপাদনশীলতা মোটামুটি (১৬০-১৮০ ডিম/বছর) প্রায় ৬৫%
বৈচিত্র্য শুধুমাত্র কালো।
উৎপত্তিস্থল ইন্দোনেশিয়া, জাভা উপদ্বীপ।
কালো জাতের মুরগি
পৃথিবিতে মাত্র তিনটি পিউর কালো জাতের মুরগি দেখা যায়। তার মধ্যে একটি আয়াম সিমানি ও অন্য দুটি হচ্ছে কাদাখনাথ ও সিল্কি মুরগি। এদের সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের লেখাগুলি পড়তে পারেন।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২