কীটনাশক ছাড়াই বেগুন চাষে সফলতা পেয়েছেন দিনাজপুরের চাষিরা। কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই বিশেষ পদ্ধতি ‘সেক্স ফেরোম্যান ট্রাপ’ গ্রহণ করে বেগুন চাষে সফলতা পেয়েছে তারা। পরিবেশ বান্ধব, জৈব বালাই দমন ফাঁদ বা ‘সেক্স ফেরোম্যান ট্রাপ’ বিষ মুক্ত যে কোন ফসল উৎপাদনে বেশ কার্যকর। খুব কম খরচে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ফসলকে বিভিন্ন বালাই মুক্ত করা যায়।
এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছে খানসামা উপজেলার অনেক কৃষক।এই পদ্ধতি কৃষিতে ব্যবহারে আকৃষ্ট করতে পারলে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে দেশের কৃষক এবং বিষমুক্ত হবে ফসল।
খানসামার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের গোবিন্দপুর ব্লকে কৃষক মাহমুদুল হাসান ২ বিঘা জমিতে পারপোল কিং জাতের বিষমুক্ত বেগুন আবাদ করেছেন। এই বেগুন বিক্রির জন্য ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। প্রায় সারাবছরই এ বেগুন পাওয়া যাবে বলে ওই কৃষক জানান।
কৃষক মাহমুদুল হাসান জানান, ২ বিঘা জমিতে লাল তীর কোম্পানির পারপোল কিং জাতের বেগুন আবাদ করেছি। গত রমজান মাসের দিকে বেগুন চাষ শুরু করি। আর গত কুরবানী ঈদের পর থেকে এই বেগুন বিক্রি শুরু করেছি। আড়াই লাখ টাকা খরচ হলেও এ পর্যন্ত ৫ লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। বর্তমানে ৪০০ টাকা মন ধরে বেগুন বিক্রি করছি। এই বিষমুক্ত বেগুন ব্যবসায়ীরা কিনে ঢাকায় নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, বেগুন ক্ষেতকে পোকার হাত থেকে রক্ষার জন্য উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের শরণাপন্ন হই। তাদের পরামর্শে জৈবিক বালাই দমন ফাঁদ বা সেক্স ফেরোম্যান ট্রাপ পদ্ধতি গ্রহণ করি। আমার জমিতে ৩৯টি সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়েছে। সফলতাও পেয়েছি।
খানসামার কৃষি কর্মকর্তা ওবায়দুল ইসলাম জানান, বিষমুক্ত ফসল আবাদে সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ একটি কার্যকর পদ্ধতির। বিভিন্ন ফসলের ফল ও ডগা ছিদ্রকারী পুরুষ পোকাগুলো সেক্স ফেরোমেন ফাঁদে দেওয়া স্ত্রী পোকার গায়ের গন্ধ ছড়ানোর ফলে পুরুষ পোকা আকৃষ্ট হয়ে ফাঁদে দেওয়া সাবান পানিতে পড়ে মারা যায়। এতে করে পোকার বংশ বিস্তার রোধ হয়। প্রতি ২ শতাংশ জমির জন্য ১টি সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়। তবে ফসলের প্রকার ভেদে ব্যবহার পদ্ধতি ভিন্ন হয়ে থাকে।