কুড়িগ্রামে বস্তায় আদা চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে

129

কুড়িগ্রামে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষ করে অধিক লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। বাড়ির আঙিনা, সুপারিবাগান, কলাবাগান, বাড়ির ছাদ, অনাবাদি ও পতিত জমিসহ বিভিন্ন জায়গায় বস্তায় মাটি ভরে কিংবা টবে আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। তা দেখে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে বস্তায় আদা চাষের।

জানা যায়, অল্প পরিচর্যা আর কম খরচে বস্তায় আদা চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে অনেক পরিবার। এছাড়া আদা চাষে সেচ, কীটনাশক ও সার প্রয়োগসহ অন্যান্য খরচ কম হয় বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি আদার মূল্য ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। খাবারের স্বাদ বাড়াতে আদার ব্যবহার করে থাকেন রাঁধুনীরা। এছাড়া বিভিন্ন রোগে ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার করা হয় আদা। তাই বাজারে আদার চাহিদাও অনেক বেশি।

উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের মাগুরমুড়া কানিপাড়া এলাকার কৃষক রিয়াজুল ইসলাম জানান, তিনি ৪০ শতক জমি ও কলাবাগানে এক হাজার ৬০০ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। বস্তাপ্রতি উৎপাদন ব্যয় হয়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। প্রতিটি বস্তায় দুই থেকে তিন কেজি আদার উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি আরও জানান, ইউটিউবে বস্তায় আদা চাষের ভিডিও দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সুপারি বাগানে ও বাড়ির আঙিনায় পরিত্যক্ত বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষ শুরু করেছেন। তার চাষাবাদ দেখে আশেপাশের অনেকের মাঝেই আদা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। ওই ইউনিয়নের কইয়াপাড়া এলাকার বিজয় চন্দ্র ২০০টি বস্তায় চাষ করছেন আদার। নাগেশ্বরী পৌরসভার পূর্ববাগডাঙ্গা (গুন্ডিরচর) এলাকার আবু বকর সিদ্দিক জানান, গত বছর সুপারি বাগানে পরীক্ষামূলকভাবে ১০টি বস্তায় আদা চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছেন। তাই এ বছর ৭০টি বস্তায় আদা চাষ করছেন। এছাড়া বাড়ির আঙিনার পাশের প্রায় তিন শতক পরিত্যক্ত জমিতে স্বাভাবিক নিয়মে আদা চাষ করছেন তিনি। তাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সেনপাড়া এলাকার প্রদীপ সেন তার বাড়ির বাউন্ডারির পাশের পরিত্যক্ত জায়গায় ২০০টি বস্তায় আদা চাষ করেছেন। এতে খরচও হয়েছে অনেক কম। ফলন ভালো হওয়ায় কয়েকগুণ লাভের আশা করছেন তিনি।

এ বিষয়ে নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি অফিসার শাহরিয়ার হোসেন বলেন, গত বছর ৯৫ হেক্টর জমিতে চাষ হলেও এ বছর ১৩০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে আদার। মসলাজাতীয় এই আদার চাষে রোগবালাই নিরাময়সহ যাতে আদার ফলন ভালো হয়ে কৃষকরা লাভবান হন, সে ব্যাপারে তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।