কুড়িগ্রামে ১৩২০ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে

36

চলতি বন্যায় কুড়িগ্রামে এক হাজার ৩২০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে পাট, আউশ ধান, চীনাবাদাম, কাউন, আমনের বীজতলাসহ বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি। পানি দ্রুত নেমে না গেলে এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে শুক্রবার থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় দ্রুত কমছে নদনদীর পানি। এতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে, গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি কমে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি উল্লেখযোগ্য হারে কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি কমলেও নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের পানি এখনও নামেনি। এসব এলাকার বাড়ির পাশ দিয়ে পানি অবস্থান করছে। ফলে এসব এলাকার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। তারা নৌকা এবং ভেলা দিয়ে চলাচল করছে। এসব চরাঞ্চলের ফসল এক সপ্তাহ থেকে পানিতে ডুবে রয়েছে। ফলে এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছেন কৃষকরা।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাস ইউনিয়নের ফান্দের চরের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, বানের পানিতে তার পাট এবং সবজিসহ আমনের বীজতলা তলিয়ে গেছে। এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। বিশেষ করে আমনের বীজতলা নষ্ট হলে আমন চাষ নিয়ে বিপাকে পড়বেন তারা।

একই এলাকার দুলু মিয়া বলেন, তার বাড়ি নিচু এলাকায় হওয়ায় পাঁচ দিন হলো পানি উঠেছে। এ কদিন থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনোমতো রাত-দিন কাটাচ্ছেন। এছাড়া বাড়ির আশপাশে লাগানো সব সবজির গাছ মরে গেছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলতি বন্যায় জেলায় এক হাজার ৩২০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যা শেষে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, সব নদ-নদীর পানি কমছে। দু-এক দিনের মধ্যে পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ১৪৪ মেট্রিক টন জিআর চাল ও নগদ ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ত্রাণ হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এগুলো বন্যাকবলিতদের মাঝে বিতরণ শুরু হয়েছে।