কৈ, মাগুর ও শিং মাছের পোনা পরিবহণ পদ্ধতি

1817

মাছ চাষের ক্ষেত্রে সবচে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ভালো মানের পোনা সংগ্রহ করা। আর সেই পোনা সংগ্রহ করার সাথে সাথে যে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে তা হচ্ছে পরিবহণ। কারণ সঠিকভাবে পরিবহণ না করলে পোনা নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা যেমন রয়েছে তেমনি মারাও যায় অনেক পোনা।

যে কোনো উৎস থেকে পোনা সংগ্রহ ও পরিবহনের ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে ঝুঁকি কম থাকে। সাধারণত কৈ, শিং ও মাগুর মাছের পোনা পরিবহণ একটু ব্যতিক্রম। কারণ মাছগুলো কাঁটাযুক্ত হওয়ায় বড় আকারের পোনা অক্সিজেন ব্যাগে পরিবহণের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থাকতে হয়। শিং ও মাগুরের ছোট পোনা অক্সিজেন ব্যাগে পরিবহণ করাই ভালো।

এ পদ্ধতিতে পলিথিন ব্যাগে পানি এবং অক্সিজেনসহ পোনাকে প্যাকেট করে পরিবহণ করা হয়। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে ৬৬ সেমি x ৪৬ সেমি আকারের পলিথিন ব্যাগে পোনা পরিবহণ করা হয় এবং প্রতিটি প্যাকেটে ২টি করে পলিথিন ব্যাগ দিতে হয় যাতে একটি ব্যাগ ছিদ্র হয়ে গেলে দ্বিতীয়টি পানি, অক্সিজেন ও পোনা রক্ষা করতে সাহায্য করে।

পোনা প্যাকিং করার সময় সমান আকারের দুটি পলিথিন ব্যাগ নিয়ে একটি অন্যটির ভেতর ঢুকিয়ে তার একতৃতীয়াংশ পানি দ্বারা ভর্তি করতে হবে এবং ব্যাগের উপরের অংশ এক হাত দিয়ে আটকে এবং অন্য হাত দিয়ে ব্যাগটিকে উল্টেপাল্টে দেখতে হবে। যেন কোন ছিদ্র পথে পানি বেরিয়ে না যায়।

কৈ, শিং ও মাগুরের পোনা ৪-৬ ঘণ্টার ভ্রমণে ১-১.৫ কেজি পর্যন্ত প্রতিব্যাগে পরিবহন করা যায়। আর যদি পরিবহণের সময় এর চেয়ে বেড়ে যায় সেক্ষেত্রে পোনার পরিমাণ কমাতে হবে। পরিবহণ সময় ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা হলে ২০-২১ দিনের কৈয়ের পোনা ২৫০-৩০০ গ্রাম এবং ৩০-৪০ দিনের শিং ও ২৫-৩০ দিনের মাগুর ৩০০-৪০০ গ্রাম (১৫-১৬শ’) পোনা পরিবহণ করা যাবে।

প্রয়োজনীয় পোনা পানিসহ পলিথিন ব্যাগে রেখে পলিথিনের বাকি অংশ অক্সিজেন দিয়ে পূর্ণ করে সুতলি বা রাবার ব্যান্ড দিয়ে ভালোভাবে বেঁধে নিতে হবে, যাতে অক্সিজেন বেরিয়ে যেতে না পারে। পোনা পরিবহনের জন্য পানির তাপমাত্রা ২২-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা উচিত। পানির তাপমাত্রা বেশি হলে অক্সিজেন ধারণ ক্ষমতা কমে যায়।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৯এপ্রিল২০