কোরবানিতে পশুর টার্গেট ৫০ হাজার, ধীরগতি আমদানিতে

328

কুরবানীর-গরুৎ

জুন মাসে মিয়ানমার থেকে প্রায় ১৫ হাজার গরু-মহিষ আমদানি করা হয়েছে। এর বিপরীতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে জুলাই মাসে এসেছে ৬ হাজার পশু। আর আগস্টের প্রথম চারদিনে এসেছে ১ হাজার ৬৮০টি গবাদি পশু।

অথচ ঈদুল আজহা উপলক্ষে মিয়ানমার থেকে ৫০ হাজার গরু-মহিষ আমদানির টার্গেট নিয়েছে টেকনাফের পশু আমদানিকারকরা। সেই টার্গেট পূরণের জন্য মিয়ানমারের ব্যবসায়ীদের অগ্রিম টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে পশু রাখার স্থান। কিন্তু বাধ সেজেছে প্রতিকূল আবহাওয়া আর বাজার দর।

ভারত থেকে কোরবানি উপলক্ষে পশু আমদানি বেড়ে যাওয়ায় বাজারে দরপতন ঘটেছে। এ কারণে ঈদের আগেও টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে পশু আমদানিতে আগ্রহ পাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা।

টেকনাফ পশু আমদানিকারক সমিতি সূত্র জানায়, শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে জুন মাসে ১২ হাজার ৭৪০টি গরু ও ২ হাজার ৩৭২টি মহিষ আমদানি করা হয়। এরপরের মাসের বাজার দরের কারণে আমদানি অর্ধেকে কমে গেছে। জুলাই মাসে তা কমে ৪ হাজার ৬০১টি গরু ও ১ হাজার ৫০৫টি মহিষ আনা হয়েছে। আর চলতি মাসের প্রথম দুইদিন প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কোনো পশু আমদানি হয়নি। তবে ৩ ও ৪ আগস্ট দুইদিনে ১ হাজার ১৩২টি গরু ও ৫৪৮টি মহিষ এসেছে এপারে।

জানা যায়, করিডোর সংলগ্ন নানা জায়গায় হাজারও গরু-মহিষ মজুদ রয়েছে। তবে তা অপ্রতুল। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গুটিকয়েক ব্যবসায়ী এই হাটে এসেছেন।

শাহপরীর দ্বীপের ব্যবসায়ী মো. ইসমাইল বলেন, ব্যবসায়ীরা সরকারকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব দিলেও করিডোর ও পশু রাখার স্থান নিয়ে নানা সমস্যা রয়েছে। মনের মতো করে পশুগুলো রাখা যাচ্ছে না।

শাহপরীর দ্বীপের স্থানীয় মেম্বার ও গরু ব্যবসায়ী মো. শরীফ বলেন, বাজার দর কম থাকায় পশু মজুদ করা হচ্ছে। আর মজুদ করা কিছু পশুর মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এসব দেখার জন্য পশু বিভাগের পরীক্ষাগার থাকলেও সংশ্লিষ্ট কাউকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে দেখা যায়নি।

টেকনাফ উপজেলা পশু আমদানিকারক সমিতির সভাপতি আব্দুল্লাহ মনির জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মিয়ানমার থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার পশু আমদানির টার্গেট রয়েছে। সেভাবে টার্গেট নিয়ে পশু আমদানিকারকরা শত কোটি টাকা অগ্রিম দাদন ইতোমধ্যে পাঠিয়েছেন। কিন্তু বর্ষার মূল সময় হওয়ায় বৈরী আবহাওয়া ও অন্যদিকে কেনাবেচায় পশুর দামে তারতম্য হওয়ায় আমদানিও আগের চেয়ে কম। দাম যা-ই হোক আমদানিকারক হিসেবে দায়িত্বের খাতিরে হলেও লক্ষ্য পূরণে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কেনার সঙ্গে বেচা সমান্তরাল হলেও নিত্যদিন ট্রলার বোঝাই আমদানি পশু আসবে।

আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় পশু কম আসছে জানিয়ে টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল আছাদুদ জামান চৌধুরী বলেন, এখন পশু আসা শুরু হয়েছে। আমরা ব্যবাসয়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। পশু আমদানি বাড়াতে বিজিবির পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।

টেকনাফ শুল্ক স্টেশন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কোরবানির ঈদের আর মাত্র বাকি ১৭/১৮ দিন। ঈদের চাহিদা পূরণে পর্যাপ্ত পশু আমদানি হবে এটা আমাদের প্রত্যাশা। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে এ সময়ে যে পরিমাণ পশু আমদানি হয়েছিল চলতি বছরে তার সিঁকি ভাগও এখনও হয়নি। আমদানি পশুর বাজারে বিক্রয় মূল্য কম থাকায় হতাশায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। সূত্র:বিএন

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন