অবশেষে হাসি ফুটল সেই কৃষকের মুখে, বিক্রি হলো ক্ষেতভরা তরতাজা ক্যাপসিকাম। প্রথমবার চাষেই বাম্পার ফলন হলেও এলাকায় এই সবজির চাহিদা না থাকায় বিক্রি করতে না পেরে হতাশায় ভেঙে পড়েছিলেন জামালপুরের ইসলামপুরের কৃষক হƒদয় হাসান।
তবে তরুণ এই কৃষকের ক্যাপসিকামগুলো অবশেষে বিক্রি হয়েছে। ফসল ডটকম লিমিটেড নামের একটি এগ্রিটেক কোম্পানি ক্যাপসিকামগুলো কিনে নিয়েছে। এখন ৪০ শতাংশ জমির ক্যাপসিকাম বিক্রি করতে পেরে খুশি এই কৃষক পরিবার।
তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা হƒদয় হাসান ও তার বাবা আবু সাঈদের সঙ্গে ফসল ডটকম লিমিটেড চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের যমুনার চর চেঙ্গানিয়া এলাকায় ফসল ডটকম লিমিটেডর একটি টিম কৃষকের বাড়িতে গিয়ে ফসল কেনার জন্য তাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়।
‘ক্যাপসিকামের ব্যাপক ফলন, বিক্রি করতে না পেরে কাঁদছেন কৃষক’ এ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদের পড়ে প্রতিনিধির মাধ্যমে সেই কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই এগ্রিটেক কোম্পানির একটি টিম।
ফসল ডটকম লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) মামুননুর রশিদ বলেন, আমরা ওই কৃষকের কথা জানতে পেরেছি। এর পরই আমাদের টিম সেখানে গিয়েছে। তার টোটাল প্রোডাক্ট আমরা কিনে নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, দেশের অনেক কৃষকই বিভিন্নভাবে পরামর্শ নিয়ে বিভিন্ন ফসল চাষ করছেন। কিন্তু তারা একবারও ভাবে না দেশের বাজারে কোনো জাতের সবজির চাহিদা ভালো। এর ফলে ফলন ভালো হলেও চাহিদা না থাকায় কৃষক তার উৎপাদিত সবজির সঠিক দাম পান না। এতে কিন্তু ওই কৃষকই লোকসানে পড়েন। ওই কৃষক যে ধরনের ক্যাপসিকাম উৎপাদন করেছেন, বাজারে সেটার চাহিদা কম। কৃষক ভাইদের আরও জেনে-বুঝে ফসল ফলানো উচিত। তাহলে তারা লাভবান হবেন। আমরা ওই কৃষকসহ সব কৃষকেই বলব, তাদের উৎপাদিত কোনো প্রোডাক্ট যদি বিক্রি করতে না পারেন, তাহলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। আমরা তাদের সব প্রোডাক্ট নিয়ে নেব।
কৃষক হƒদয় হাসানের বাবা আবু সাঈদ বলেন, জমি থেকে আজ ক্যাপসিকামগুলো বিক্রি করতে পেরে খুবই আনন্দ লাগছে। আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া। ফসল ডটকম নামে একটি প্রতিষ্ঠান আমার ক্যাপসিকাম কিনে নিয়েছে। গাছে আগে বেশি ক্যাপসিকাম ছিল, সে সময় বিক্রি না করতে পেরে অনেক ক্যাপসিকাম নষ্ট হয়েছে। আগে আমি বিক্রির জায়গা খুঁজে পাইনি। প্রতিটি গাছে তিন চার কেজি করে ফল থাকার কথা ছিল কিন্তু সেটা নেই। এখন প্রতি গাছে এক কেজি মতো ক্যাপসিকাম রয়েছে।
উল্লেখ্য, কৃষক হƒদয় হাসান বেকারত্ব দূর করতে ক্যাপসিকাম চাষ করেন। ফলনও হয় বাম্পার। তবে জেলায় নেই ক্যাপসিকামের চাহিদা না থাকায় বিক্রির বাজার না পেয়ে হতাশা হয়ে পড়ে কৃষক পরিবারটি। বিক্রি সঠিক সময় না করতে পেরে খেতেই নষ্ট হয়েছে অনেক ক্যাপসিকাম।