চট্টগ্রাম ক্যাবের বৈঠক: ইফতারিতে ও শিক্ষার্থীদের টিফিনে ডিম অন্তর্ভুক্তির তাগিদ

301

ক্যাব

ডিম বিভিন্ন পুষ্টিতে ভরপুর ও সহজলভ্য একটি অসাধারণ খাদ্য উপাদান। রমজানে সারা দিন পানাহার ত্যাগ করার ফলে শরীরের ঘাটতি মেটাতে ডিম একটি অতি উপকারী খাদ্য উপাদান যা পুরো দিনের ক্ষয়কে সহজে পুষিয়ে দিতে পারে।

এছাড়াও ডিম শরীরে অনেকগুলি রোগের প্রতিরোধ শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে শিশুর বেড়ে উঠা ও বাড়ন্ত শরীরের পুষ্টির যোগানে ডিমের বিকল্প নেই। কিন্তু নানাবিধ কুসংস্কার ও ভ্রান্ত তথ্যের কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী দেশের অধিকাংশ মানুষ ডিম খায় না। যার কারণে মেধার বিকাশ যেমনি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি সুস্থ ও মেধাবী জাতি গঠন প্রতিবন্ধকতায় পড়ছে। এ অবস্থায় পবিত্র রমজানের ইফতারির আইটেম ও স্কুলের টিফিনের আইটেমে ডিম যুক্ত করার তাগিদ দেয়া হয়েছে চট্টগ্রামে ক্যাব’র পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্পের উদ্যোগে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সাথে অনুষ্ঠিত অ্যাডভোকেসি সভায়।

ইউকে এইড, বৃটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় প্রকাশ প্রকল্পের কারিগরি সহযোগিতায় পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্প, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম আয়োজনে ২৭ মে নগরীর খুলসীতে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল হক জসিম। আলোচনায় অংশ নেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন, অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাহিদা আকতার, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ আবদুল মান্নান, ক্যাব পাঁচলাইশের সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব চট্টগ্রামের ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মশিউর রহমান প্রমুখ।

সভায় স্কুল টিফিনে ডিম যুক্ত করার বিষয়ে স্কুলের কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, শিক্ষা প্রশাসনসহ শিক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

সভায় আরো বলা হয়, স্কুল টিফিনে বর্তমানে যা বাজার থেকে কেনা হয় তার অধিকাংশই অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি। যা কোমলমতি শিশুদের জন্য অনেক সময় উপকারের পরিবর্তে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে। সেখানে ডিম অতি সহজে, স্বল্পমূল্যে ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিহীনভাবে পরিবেশন করা যাবে।

সভায় পবিত্র রমজানে রোজাদাররা পুরো দিন পানাহার ছেড়ে ইফতারিতে ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনিসহ বিভিন্ন ভাজাপোড়া খেয়ে থাকেন। যার কারণে অ্যাসিডিটির পরিমাণ অনেক সময় বেড়ে যায়। সেখানে বর্তমান উপকরণের সাথে ডিম যুক্ত করলে অ্যাসিডিটির সম্ভাবনা কমাবে এবং শরীরের কার্বোহাইড্রেড ও পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে সহায়ক হবে। যা ছোলা, পেঁয়াজু ও বেগুনির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে সহায়ক হবে।

এ বিষয়ে রোজাদার ও ইফতার মাহফিল আয়োজকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

সভায় চট্টগ্রামে পোল্ট্রি শিল্পে খাদ্য-পণ্যের মান পরীক্ষায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানসমুহ এবং এখাতে কর্মরত বিশেষজ্ঞদের মাঝে অধিকতর সমম্বয় জোরদার করার জন্য একটি থিমেটিক গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যেখানে ভেটেইরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় অত্যাধুনিক পরীক্ষাগার, প্রাণিসম্পদ বিভাগের কোয়ারেন্টাম, কৃষি বিভাগের কোয়ারেন্টাম, বিএসটিআই ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের খাদ্য পণ্য পরীক্ষাগার ও খাদ্যপণ্যের মান পরীক্ষায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে কার্যকর যোগাযোগ সৃষ্টি সম্ভব হবে।

মানপরীক্ষার পর সে বিষয়ে ফলাফলও জনসাধারণের মাঝে পৌঁছানের কার্যকর নেটওয়াকিং তৈরি হবে। এছাড়াও খাদ্য পণ্যের মান পরীক্ষায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও স্বাস্থ্য, কৃষি, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য, বিশেষজ্ঞ, ক্যাব ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা অর্ন্তভুক্ত থাকবে। এই থিমেটিক গ্রুপ নিয়মিতভাবে আলাপ আলোচনা করে জনগণের মাঝে নিরাপদ খাদ্য, বিশেষ করে পোল্ট্রি খাদ্য পণ্যের মান বিষয়ে প্রকৃত তথ্য তুলে ধারার প্রয়াস চালাবেন।

Rafid

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন