ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ার অন্যতম হাতিয়ার প্রাণিসম্পদ শিল্প

355

002
সাভার (ঢাকা) : বর্তমান সরকারের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ার অন্যতম হাতিয়ার হলো প্রাণিসম্পদ শিল্প। তাই এ খাতটির গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশের সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান প্রাণিজ আমিষসহ অন্যান্য পুষ্টির চাহিদা পূরণে কৃষি খাতে প্রাণিসম্পদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) আয়োজিত ‘মার্কেট বেসিড ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার (সিএসএ) অ্যাপ্রোচ ফর ডেইরি ডেভলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মো. রইছউল আলম মন্ডল এ কথা বলেন।

শনিবার ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথু রাম সরকারের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, “এই কর্মশালায় উপস্থিত দেশি-বিদেশি ডেইরি বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের মূল্যবান মতামতের আলোকে এদেশে ডেইরি সেক্টরের উন্নয়নের জন্য দিক নির্দেশনামূলক একটি গ্রহণযোগ্য সুপারিশমালা তৈরি হবে। প্রণীত দিক নির্দেশনা ও সুপারিশমালার আলোকে এদেশে ডেইরি উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আমরা মনে করি।”

তিনি বলেন, “বাস্তবসম্মত গবেষণা প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে খামারীদের সমস্যা নিরূপণের জন্য টেকসই ও যুগোপযোগী প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তর সম্ভব হবে। তবে প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও হস্তান্তরই শেষ কথা নয়, প্রযুক্তিগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে যথাযথভাবে সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার ওপরই নির্ভর করবে এর সফলতা।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, “বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার এবং কৃষি গবেষণা তথা প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সদা সচেষ্ট। আজকের এই অনুষ্ঠান ভবিষ্যৎ প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তরের যে সুযোগ সৃষ্টি করেছে, তা আমাদের বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণ কর্মীদের মনে রেখে গবেষণা পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন, যাতে খামারিদের সমস্যাভিত্তিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে সহজ হয় এবং খামারিরা উপকৃত হয়।”

600001

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, “ডেইরি সেক্টরের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। ইতোমধ্যে বিএলআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত বেশ কিছু প্রযুক্তি আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে যা আমরা মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণ করছি।”
আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভাপতির ভাষণে ড. নাথু রাম সরকার বলেন, “স্বল্প জায়গায় অধিক নিরাপদ আমিষের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অঞ্চলভিত্তিক সমস্যা নিরূপন করে নতুন নতুন গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে যা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত জরুরি ও প্রয়োজনীয়। দিনব্যাপী কর্মশালায় আমরা ৫টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছি যা ডেইরি ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে অংশ গ্রহণকারিদের পরামর্শে গবেষণা কার্যক্রম আরো ফলপ্রসূ হবে বলে আমরা মনে করি।”

এ কর্মশালায় বাংলাদেশের ডেইরি প্রেক্ষাপটে ৩টি প্রবন্ধ এবং সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় অস্ট্রেলিয়ার ২টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।

কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার শিক্ষক, বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মী ও উদ্যোগতাসহ প্রায় ২০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন