খাঁচায় মুরগির বাচ্চা বড় করবেন যেভাবে

2452

শহর বা নগরে যারা বসবাস করেন তাদের আবাসস্থল গ্রামের তুলনায় অনেক কম থাকে। তাই ইচ্ছে থাকা সর্তেও অনেকেই পারিবারিক খামার গড়ে তুলতে পারেন না। তারপরও আপনারা যদি এই পোস্টটি ভাল ভাবে পরেন তা হলে অল্প জায়গায় আপনিও একটি ছোট মুরগির খামার গড়ে তুলতে পারবেন।

আজ আমরা আলোচনা করবো কিভাবে খাঁচায় মুরগির বাচ্চা বড় করবেন? বাচ্চা বড় করার জায়গা বা ঘরটা এমন হওয়া দরকার যেন সেখানে ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চা তার দরকারি জিনিস পর্যাপ্ত পরিমাণে পায়। এখানে বাচ্চার প্রাথমিক দরকার তাপ। ইংরেজীতে জায়গাটা বা ঘরটাকে বলা হয় ব্রডিং ইউনিট (brooding unit)।

৮ সপ্তাহ পরে বাচ্চাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাচ্চা পালন (গ্রুইং পেন-growing pen) ঘরে। এখানে বাচ্চা থাকবে ৮ সপ্তাহ থেকে ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত । এখন বাচ্চারা বেশ বড় হয়ে গেছে । ব্রয়লার মুরগি ৮ সপ্তাহ পরে যায় বিক্রির জায়গায়। আর বাচ্চা মুরগি বাচ্চা পালন ঘরে।

২০ সপ্তাহ পরে বাচ্চা মুরগি(pullets) যায় পাকাপাকিভাবে ডিমপাড়া ঘরে। ইংরেজিতে বলে লেয়িং পেনস(Laying Pens), ২০ সপ্তাহ পরে মুরগি পালন করবার জন্য খাচাও অনেকে ব্যবহার করেন। এখানে ডিম দেওয়া মুরগি ৭৮-৮০ সপ্তাহ থাকে। এরপরেই মুরগি বাজারে মাংস হয়ে বিক্রি হতে চলে যায়।

এই ধরনের খাচা বা ঝুড়ি নানা ধরনের জিনিস দিয়ে হতে পারে। প্যাকিং বাক্স, কাঠের বাক্স, ফুটোওলা গামলা, বড়ো টব প্রভূতি। এই খাচা দুই ফিট উচু হলেই যথেষ্ট।

তবে দেখতে হবে খাচা যেন খুকনো, টেকসই, সস্তা, জায়গাবহুল এবং নিরাপত্তাজনক হয় সস্তার কথা মনে রেখে। খাচার মোট জায়গা হবে ৪ বর্গ ফুটের মতো। উচ্চতায় সামনের দিকে ১৮”, মাথার দিকে ঢাকা কিন্তু ঢালু থাকবে।

মা এবং বাচ্চাদের খাবারঃ প্রথম সপ্তাহে বাচ্চা প্রতি অল্প পরিমাণ খাবার বারে বারে দিতে হবে। দুই ঘন্টা অন্তর হলে ভালো হয়। খাবার থাকবে বাচ্চা মুরগির সুষম খাদ্য যেটা পানিতে বা দুধে মিশিয়ে কাদা কাদা করে নিতে হবে। প্রথমে খাবার দিতে হবে সমতল কোনো পাত্রে।

পালিকা মুরগিকে দিতে হবে ভেজা অথবা শুকনো সুষম মুরগি খাদ্য। যে সুষম খাদ্যের মুরগিটির বাড় এনে দেবে। মুরগির খাবার এমনভাবে দিতে হবে যাতে বাচ্চা মুরগি সেখানে মুখ দিতে না পারে। বাচ্চা এবং ধাত্রী মায়ের জন্য প্রচুর পরিষ্কার ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা করতে হবে।

অন্যান্য পরিচর্যাঃ খাঁচা বা বাচ্চাদের আশ্রয় স্থান রীতিমত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং কীটনাশক ওষুধ দিয়ে উকুন, মাইট এবং টিক প্রভূতি রক্তচোষা পরজীবী কীটদের ধ্বংস করতে হবে। বাচ্চা যেখানে চরে বেড়াবে সে জায়গাটা জাল দিয়ে ঘেরা থাকবে। চরে বেড়াবার জায়গাটা যেন ইদুর বেড়ালে নষ্ট করে না দেয়। রাতের বেলায় বাদুড় এবং পেচায় উপদ্রব ঠেকাবার ব্যবস্থাও পাকাপাকি ভাবে করা উচিত।

প্রথম সপ্তাহে মারবে রোগ ৰং রাণীঙ্তে রোগের জন্য টিকা দিতে হব প্রথম সপ্তাহেই ঠোট ছেটে দিতে হবে। বাচ্চাদের বয়স ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ হলে মুরগি বসন্ত(Fowl Pox)এবং রানীক্ষেত রোগের বিরুদ্ধে টিকা নেওয়া।

মুরগির খাঁচা এবং ঘোরাফেরার জায়গা বদল করাঃ মুরগির বাচ্চাদের খাঁচা এবং বেড়াবার জায়গা মাঝে মাঝেই এক জায়গা থেকে অপর জায়গায় সিরয়ে নিয়ে যাওয়া ভালো। এর ফলে বাচ্চাদের রোগভোগ কম হবে এবং পরজীবী আক্রমণ কমে যাবে। দিনে একবার কি দুই বার পালিকা মা এবং বাচ্চাদের সুর্যস্নান করানো ভালো।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৯জুলাই২০