খাবারের স্বাদ বাড়ায় মটরশুঁটি

1490

মটরশুঁটি

মটরশুঁটি আমাদের অনেকেরই খুব প্রিয় সবজি। এটা কাঁচা, পাকা যেমন ইচ্ছা খাওয়া যায়। কচি আর কাঁচাগুলো এমনিতে ছিলে খেতে খুবই মজা আর স্বাদও অতুলনীয়, আবার নাড়ার আগুনে পুড়িয়ে বা সিদ্ধ করে খেতেও ভারী মজা লাগে। বড় যে কোনো ধরনের মাছ বা ছোট মাছ রান্না করার শেষের দিকে কিছু মটরশুঁটি দিয়ে দিলে যেন দিগুণ বেড়ে যায় তরকারির স্বাদ। বিশেষ করে রুই, কাতলা, পাবদা, কই, শোল, শিং, মাগুর ইত্যাদি। এ ছাড়া বিকেলের নাস্তায় মটরশুঁটি ভাজির তুলনা নেই। পাকা শুকানো মটরশুঁটির চটপটি, ফুচকা কার না প্রিয়। বিভিন্ন খাবারের স্বাদ বাড়াতে মটরশুঁটির জুড়ি নেই।

মটরশুঁটি বর্ষজীবী উদ্ভিদ। আমাদের দেশে শীতকালে মটরশুঁটির চাষ করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে মটরশুঁটির চাষ করা হয়ে থাকে। প্রতিটি মটরশুঁটির মধ্যে বেশ কয়েকটি বীজ থাকে, যদিও এটি এক প্রকারের ফল। গড়ে প্রতিটি মটরশুঁটির ওজন ০.১ থেকে ০.৩৬ গ্রাম। মটরশুঁটি লতানো গাছ। এই গাছ দুই থেকে আড়াই ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। মটরশুঁটির পাতা মিষ্টি ঘ্রাণ যুক্ত। ফুল অনেক সুন্দর দেখতে। মটরশুঁটির ক্ষেত যখন ফুলে ফুলে ভরে যায়, তখন সে দৃশ্য দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠে। আমাদের দেশে এখন বিভিন্ন জাতের মটরশুঁটির চাষ আবাদ করা হয়ে থাকে তার মধ্য আরকেল, বনভিল, গ্রিন ফিস্ট, আলাস্কা, স্নো-ফ্লেক, সুগার স্ন্যাপ উলেস্নখযোগ্য। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বারি মটরশুঁটি-১, বারি মটরশুঁটি-২ এবং বারি মটরশুঁটি-৩ নামের ৩টি জাত অবমুক্ত করেছে। মটরশুঁটি শীতপ্রধান ও আংশিক আর্দ্র জলবায়ুর উপযোগী ফসল। মটরশুঁটির জন্য দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো। মাটি অবশ্যই সুনিষ্কাশিত হতে হবে। বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে মটরশুঁটির চাষ হয়।

প্রতি ১০০ গ্রাম মটরশুঁটি থেকে প্রায় ৮০-১০০ কিলোক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়। এতে কার্বোহাইড্রেট ১৪.৫ গ্রাম, ফ্যাট ০.৫ গ্রাম এবং প্রোটিন ৫.৪ গ্রাম আছে। এ ছাড়া মটরশুঁটিতে আরও আছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্ক ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড, বিটাক্যারোটিন, ফসফরাস, ভিটামিন বি-কমপেস্নক্স। সামান্য পরিমাণে ভিটামিন কেও আছে। মটরশুঁটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ ও প্রোটিন। ফ্যাটের পরিমাণ খুব কম। এতে প্রোটিন, ফাইবার, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ আছে।

আমাদের দেশে শুকনো মটরশুঁটি ডাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই ডাল চটপটি এবং বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়া হয়। এ ছাড়াও কচি মটরশুঁটি সবজি এবং গাছের কচি ডগা শাক হিসেবে খাওয়া হয়। এই শাক খেতে দারুণ সুস্বাদু। আমাদের দেশে মূলত সবজি হিসেবে মটরশুঁটি রান্নায় ব্যবহৃত হয়।

ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ