পোল্ট্রি খামারে রোগ নিরাময়ে মধুর ব্যবহার আমরা অনেকেই জানি না। মধুতে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন। পোল্ট্রি খামারে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে মধু বেশ কাজে আসে। চলুন জেনে নেই পোল্ট্রি খামারে রোগ নিরাময়ে মধুর ব্যবহার সম্পর্কে-
১। মধুতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ যা পোল্ট্রির যকৃতে গ্রাইকোজেনের রিজার্ভ গড়ে তোলে।
২। মধু নির্ভেজাল খাদ্য। এর শর্করার ঘনত্ব এত বেশি যে, এর মধ্যে কোনো জীবাণু ১ ঘণ্টার বেশি সময় বাঁচতে পারে না। এতে ভিটামিন এ, বি, সি প্রচুর পরিমাণ বিদ্যমান। অনেক প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানও আছে। যেমন- এনজাইম বা উৎসেচক, খনিজ পদার্থ (যথা পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ), এছাড়াও প্রোটিন আছে। যা পোল্ট্রির দেহ গঠনে অপরিহার্য ভূমিকা রাখে।
৩। পোল্ট্রির সকালের প্রথম খাবারের আগে ১ চা চামুচ ১ লিটার পানিতে মধু মিশিয়ে খাওয়ালে তা পোল্ট্রির লিভার পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করবে।
৪। মধুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, আয়োডিন, জিংক ও কপার সহ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যা পোল্ট্রির দেহের বাহ্যিক দিকের জন্যই নয়, দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সুরক্ষায় কাজ করে।
৫। শরীরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে মধু। কারণ মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা পোল্ট্রির শরীরকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু পানিতে খাওয়ালে ঠাণ্ডা লাগা, কফ জমা, মুখ দিয়ে লাল পড়া ইত্যাদি সমস্যা কমে যায়।
৬। হজমের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন সকালে পোল্ট্রিকে মধু খাওয়ান খুব ভালো প্রয়াস। মধু পেটের অম্লভাব কমিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
৭। মধুতে আছে প্রাকৃতিক চিনি যা পোল্ট্রির শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীরকে প্রাণবন্ত রাখে।
৮। মধুর ভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা উচ্চ। যেকোন প্রকারের ক্ষত সারাতে মধু খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন রিসার্চ এ দেখা গেছে অধিকাংশ ক্ষত ও জখম উপশমে মধু ডাক্তারী ড্রেসিং-এর চেয়েও বেশি কার্যকর।
৯। পোল্ট্রির চোখে ঘা হয়েছে, এক ফোঁটা করে মধু দিনে ৩ বার চোখে লাগালে, খুব দ্রুত সেরে উঠবে।
১০। মধু একটি চমৎকার জীবাণু এবং ব্যাথা নাশক। কোন ক্ষত বা ফোড়া বা বসন্তের উপর মধুর সাথে দারুচিনি গুড়া মিশিয়ে লাগালে খুব দ্রুত ব্যাথা কমে যায়।
১১। নিয়মিত মধু খাওয়ালে পোল্ট্রির শরীরের বিষক্ত উপাদান বের হয়ে যায় ।
১২। সমপরিমান আদা রস এবং মধুর মিশ্রণ পোলট্রি কে খাওয়ালে ঠান্ডা, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং মুখে বা জিহ্বায় ক্ষত নিরাময় হয়।
১৩। মধু পোল্ট্রির শরীরের রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ায় এবং শরীরের ভেতরে এবং বাইরে যেকোনো ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতাও জোগান দেয়। মধুতে আছে একধরনের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধকারী উপাদান, যা অনাকাঙ্ক্ষিত সংক্রমণ থেকে পোল্ট্রিকে রক্ষা করে।