খামার করে ১০ বছরেই কোটিপতি!

765

Untitled-1-696x388

যে যুবকটি মাত্র ১০ বছর আগেও ছিলেন বেকার, হতাশাগ্রস্ত; আজ তিনি কোটিপতি। মেধা, শ্রম আর অধ্যাবসায় যে একটি মানুষকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেয় তার বাস্তব উদাহরণ বাগেরহাট সদর উপজেলার এস এম আকরাম। আধুনিক পদ্ধতিতে হাস-মুরগি পালন আর মাছ চাষ করে দারিদ্র্যকে জয় করার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছেন ৩৮ বছরের এ যুবক। বেকারত্বের গ্লানিকে দুমড়েমুচড়ে জীবন সংগ্রামে কীভাবে জয়ী হওয়া যায়, তা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন।

পরিবারের অভাব অনটনের কারণে এসএসসির বেশি লেখাপড়া করতে পারেনি আকরাম। তারপরও নিজের লক্ষ্য, ইচ্ছা শক্তি আর শ্রম তাকে এনে দিয়েছে সফলতা। প্রথম দিকে হোঁচট খেলেও থেমে যাননি। বুকে ছিল এগিয়ে যাবার প্রত্যয়।

আকরাম হোসেন ১৯৯৯ সালে মাত্র ৪০ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেন মুরগি পালন। অদক্ষতার কারণে সেবার পাকা খামারি হয়ে ওঠা হয়নি তার। লোকসান হয় ব্যাপক। কিন্তু সেই হতাশা তাকে একটুও গ্রাস করতে
পারেনি। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে প্রশিক্ষণ নেয়ার পর ২০০৬ সালে আবার পুরোদমে শুরু করেন স্বপ্নযাত্রা।

আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি আকরামকে। বাড়তে থাকে একের পর এক প্রকল্প। বাগদা ও গলদা চিংড়ির পোনা উৎপাদন, সবজি চাষ, মাছ চাষ, বাঁশ চাষ, বায়োগ্যাস উৎপাদনসহ নানা প্রকল্প হাতে নেন তিনি। ১০ বছর আগের বেকার আকরামের খামারে এখন কাজ করছেন ২০ জনেরও বেশি শ্রমিক। মাত্র দু’বিঘা জমি লিজ নিয়ে মুরগির খামার শুরু করলেও বর্তমানে তার সমন্বিত প্রকল্পে নিজস্ব জমির পরিমাণ ৬ একরে দাঁড়িয়েছে।

তরুণ উদ্যোক্তা এস এম আকরাম নিজের সাফল্য নিয়ে বললেন, ‘বাগেরহাট যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০০৬ সালে আধুনিক প্রযুক্তিতে মুরগির খামার করি। এতে বেশ লাভবান হই। ২০১২ সালে বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গলদা হ্যাচারি ও বাগদা নার্সারি তৈরি করি। বর্তমানে আমার খামারের বাৎসরিক আয় প্রায় ৮০ লাখেরও বেশি।’

স্থানীয় যুবকদের কাছেও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছেন আকরাম। কেবল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই সফলতার চাবিকাঠি নয়, শ্রম আর মেধাকে কাজে লাগাতে পারলেই আসে সফলতা, এমন বিশ্বাস থেকেই আজ কোটিপতি আকরাম। জীবন সংগ্রামে পিছিয়ে পড়া বেকার হতাশাগ্রস্তদের জন্য তিনিই হতে পারেন অনুপ্রেরণার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ