এসএম আহসান হাবিব, খুলনা প্রতিনিধি: কৃষি সম্পর্কীত সংসদীয় কমিটির সাথে কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কৃষি কর্মকর্তাদের এক মতবিনিময় সভা গত ৩ মার্চ খুলনার খামারবাড়িস্থ ডিএই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেন এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ময়মনসিংহ-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো.মোসলেম উদ্দিন, নারয়নগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বাবু, বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন, নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরন, বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. নুরুল ইসলাম ওমর, কৃষি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ উইং) মো. মোশারফ হোসেন এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) সরেজমিন উইং’র পরিচালক চৈতন্য কুমার দাস। সভাপতি তাঁর বক্তৃতায় বলনে, বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনা নবম সংসংদে প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল কৃষি উন্নয়ন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাস্তবমুখি পদক্ষেপের ফলে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশে ১০০ ভাগ মানুষ কৃষক। সার্থক আমাদের নেতৃত্বদানকারী কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, এ অঞ্চলের কৃষি বিভিন্ন সমস্যা বিশেষকরে কোন কোন এলাকার জলাবদ্ধতার সমাধান এক দিনে সুরাহা হবে না। পরিকল্পনার মাধ্যমে ধাপে ধাপে এগুতে হবে। সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের কাজের গুরুত্ব ও গতি বেড়েছে। সংসদ সদস্য রেজাউল করিম তানসেন বলেন, এ সরকার কৃষি বান্ধব আর কৃষি মন্ত্রণালয় হচ্ছে উন্নয়নের অন্যতম মন্ত্রণালয়। কৃষিবিদদের মেধার মাধ্যমে দেশে আজ কৃষি বিপ্লব ঘটেছে। সাংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন বলেন, সংসদীয় কমিটির খুলনা অঞ্চলে সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে, কৃষি কর্মকান্ড দেখার, কিছু শেখার এবং আপনাদের প্রস্তাবনাগুলো ঢাকায় নিয়ে বাস্তবায়ন করা যায় কীনা তার প্রচেষ্টা নেয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হয়ে গেছে। এদেশের মানুষ তিন বেলা ভাত খেতে পারে। তা সম্ভব হয়েছে কৃষিবিদ ও মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে। পরিচালক বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি উৎপাদনে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে। তিনি ঘেরের জমি জরিপ করে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মাছ চাষ এবং ঘেরের পাড়ে ফসল উৎপাদনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। অতিরিক্ত সচিব মাছসহ ফসল উৎপাদনে কৃষি সুরক্ষা আইন করার কথা উল্লেখ করেন। সভায় ডিএইর অতিরিক্ত পরিচালক নিত্য রঞ্জন বিশ্বাস খুলনা অঞ্চলের কৃষির বিভিন্ন কার্যক্রম ও সমস্যা তুলে ধরেন এবং তিনি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরায় প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ অন্যান্য অসুবিধা সত্ত্বেও নতুন নতুন জাত নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ অঞ্চলে লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে লবণসহিষ্ণুর আরও জাত উদ্ভাবন করা দরকার। ক্রুটিপূর্ণ ভেড়িবাঁধ ও স্লুইজগেট ব্যবহার উপযোগি করা দরকার। যদিও ব্লুগোল্ড প্রকল্প সীমিত আকারে কাজ করছে। তবে ফসল উৎপাদনে কৃষি শ্রমিকের অভাব দেখা গেলেও খামার যান্ত্রিকীকরণের ফলে সে সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে। মতবিনিময় সভার আগে সংসদীয় কমিটি বাগেরহাটর মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের গবেষণা প্লট, ফকিরহাটের অর্গানিক বেতাগা গ্রাম, খুলনার বটিয়াঘাটার ব্লু গোল্ড কার্যক্রম পরিদর্শন ও চাষি সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।