বকুল হাসান খান
খেসারিতে প্রচুর পরিমানে খাদ্যশক্তি ও প্রোটিন রয়েছে। খেসারি গরীবের ডাল নামে পরিচিত। তবে খেসারি ডাল অনেকের প্রিয় ডাল।
উপযুক্ত মাটিঃ- সুনিষ্কাশিত দো-আঁশ ও এটেল দো-আঁশ মাটি খেসারি চাষের জন্য বেশি উপযুক্ত। খেসারি প্রধানত বোনা আমন ধান কাটার আগে রিলে ফসল হিসেবে আবাদ করা হয়ে থাকে। সেজন্য জমি চাষের তেমন প্রয়োজন হয় না।
জমি তৈরি: একক ফসল হিসেবে জমি ৩-৪টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে ভালভাবে সমান করে তৈরি করতে হবে।
বীজ বপন পদ্ধতি: আমাদের দেশে বেশির ভাগ স্থানে রিলে ফসল হিসেবে ছিটিয়ে খেসারির বীজ বপন করে থাকে। একক ফষল হিসেবে বপন করা যায়। তবে সারি করে বীজ বপন করলে ভাল হয়। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দুরত্ব ৫০ সেন্টিমিটার রাখলে ভাল হয়। প্রতি হেক্টরে ৪০-৫০ কেজি বীজের দরকার। ছিটিয়ে বীজ বপন করলে বীজের পরিমাণ সামান্য বেশি দিতে হয়।
বীজ বপনের সময়: কার্তিক মাসের দ্বিতীয় থেকে মধ্য অগ্রহায়ণ সপ্তাহ (নভেম্বর) মাস পর্যন্ত খেসারি বীজ বপন করার উত্তম সময়।
সার ব্যবস্থাপনা: খেসারি রিলে ফসল হিসেবে চাষ করলে সারের প্রয়োজন হয়না। তবে একক ফসল হিসেবে চাষ করলে সারের প্রয়োজন । সারের পরিমাণ ।
সারের নাম হেক্টর প্রতি
১. ইউরিয়া ৪০-৪৫ কেজি
২. টিএসপি ৮০-৮৫ কেজি
৩. এমপি/পটাশ ৩০-৪০ কেজি
৪. অনুজীব সুপারিশমত।
সার প্রয়োগ পদ্ধতি: সম্পূর্ণ সার জমি শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। যে জমিতে পূর্বে খেসারি চাষ করা হয় নাই সে জমিতে প্রতি কেজি বীজের জন্য ১০০ গ্রাম হারে অনুমোদিত অনুজীব সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।
পরিচর্যা: বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে নিড়ানী দ্বারা আগাছা দমন করা যেতে পারে। অতিবৃষ্টি হলে জমিতে যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পানি বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
খেসারির ডাউনি মিলডিউ রোগ হলে প্রতিরোধী বারি খেসারি-১, বারি খেসারি -২ জাতের চাষ করতে হবে। এছাড়া রিডোমিল এম জেড (০.২%) ১২ দিন পরপর ২-৩ বার ¯েপ্র করতে হবে।
ফসল সংগ্রহ: ফাল্গুন (মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ) মাসে ফসল সংগ্রহ করা যায়।
বীজ সংরক্ষণ: বীজ ভালভাবে রোদে শুকিয়ে আর্দ্রতার পরিমাণ আনুমানিক ১০%এর নিচে রাখতে হবে। তারপর টিনের পাত্র ও পলিথিনের ব্যাগ বা চটের ব্যাগ অথবা আলকাতরার প্রলেফ দেওয়া মাটির পাত্রে বীজ সংরক্ষণ করতে হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৪মার্চ২০