পশুর আবাসনের জন্য স্থান নির্বাচন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্থান নির্বাচন সঠিক না হলে খামার লাভজনক করা যায় না। পশুর আবাসন মূলধন ও পশুর সংখ্যার সাথে সম্পর্কযুক্ত। গৃহপালিত পশুর আবাসন বা বাসস্থান এমন জায়গায় তৈরি করতে হবে, যেখানে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো বিদ্যমান থাকে।
» উঁচু ও বন্যামুক্ত এলাকা হতে হবে।
» বাজার, মহাসড়ক ও বসতি থেকে একটু দূরে হবে।
» দুধ ও মাংস বাজারজাত করার সুবিধা থাকতে হবে।
» ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা থাকবে।
» বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের সুবিধা থাকবে।
» গোয়াল ঘর বা খামার এলাকা থেকে সহজে পানি নিষ্কাশন হতে হবে।
» গোয়াল ঘরে যেন সূর্যালোক পড়ে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
» গোয়াল ঘরের চার পাশ পরিষ্কার হবে।
» পশুর জন্য খাদ্য ও পানি সরবরাহের বিষয়টি মনে রাখতে হবে।
» ভবিষ্যতে খামার বড় করার সুযোগ থাকতে হবে।
গরুর আবাসন
গুরুর আবাসনের জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো গোশালা বা গোয়াল ঘরে বেঁধে পশু পালন করা। গোয়াল ঘরের আকার পশুর সংখ্যার উপর নির্ভর করে। পশুর সংখ্যা ১০ এর কম হলে ১ সারি বিশিষ্ট ঘর এবং ১০ বা তার অধিক হলে ২ সারি বিশিষ্ট ঘর তৈরি করতে হবে।
ছাগল বা ভেড়ার আবাসন
ছাগল বা ভেড়ার বাসস্থান তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ এরা খাবারের জন্য সরাদিন মাঠে ঘুরে বেড়ায়। তবুও অধিক পশম ও মাংস উৎপাদনের জন্য এদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে হয়। ভেড়া ও ছাগল পালনের জন্য তিন ধরনের বাসস্থান ব্যবহার করা হয়। যথা,
ক. উন্মুক্ত
খ. আধা উন্মুক্ত ও
গ. আবদ্ধ ঘর।
আবহাওয়া ও জলবায়ুর কথা চিনত্মা করে ঘরের মেঝে ভূমি সমতলে বা মাচার তৈরি হয়ে থাকে।
উন্মুক্ত ঘর: যেসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম হয় সেখানে এ ধরনের ঘর উপযোগী। একটি নির্দিষ্ট জায়গার চারদিকে বেড়া দিয়ে উন্মুক্ত ঘর তৈরি করা হয়। এধরনের ঘরে কোনো ছাদ থাকে না। সারাদিন চরে খাওয়ার পর রাতে ছাগল বা ভেড়ার পাল এখানে আশ্রয় নেয়। এখানে মেঝেতে খড় ব্যবহার করা হয়।
আধা-উন্মুক্ত ঘর: উন্মুক্ত ঘরের নির্দিষ্ট স্থানের এক কোণে কিছু জায়গা যখন ছাদসহ তৈরি করা হয় তখন তাকে আধা-উন্মুক্ত ঘর বলে। যেসব এলাকায় মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হয় সেখানে আধা-উন্মুক্ত ঘর ব্যবহার করা যেতে পারে।
আবদ্ধ ঘর: যেসব অঞ্চলে প্রচুর ঝড়, বৃষ্টি হয় সেখানে এ ঘর বেশি উপযোগী। আবদ্ধ ঘরের পুরো অংশেই ছাদ থাকে। ঘরের পাশ দিয়ে প্রচুর আলো বাতাস প্রবাহের ব্যবস্থা থাকে। আবদ্ধ ঘরের মেঝে পাকা ও আধা পাকা হয়ে থাকে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২৭জুলাই২০