তড়কা রোগটি কি?
তড়কা বা এনথ্রাক্স গবাদি পশুর একটি মারাত্মক রোগ। এ রোগের জীবানু দ্বারা সংক্রমিত খাদ্য খেয়ে সাধারণত বিভিন্ন প্রাণী আক্রান্ত হয়। গবাদি প্রাণি থেকে মানুষও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
প্রচলিত নাম:-
তড়কা, উবামড়কী, তীলাজ্বর, ধড়কা বা গলি।
রোগের কারণ :-
ব্যাসিলাস এনথ্রাসিস ( Bacillus anthracis) নামের এক প্রকার গ্রাম পজেটিভ ব্যাকটেরিয়া।
রোগের লক্ষণ :-
১. অত্যাধিক জ্বর হয় (১০৩-১০৭ ডিগ্রী ফাঃ)।
২. শ্বাসকষ্ট ও দাঁত কটকট করে।
৩. শরীরের লোম খাড়া হয়ে ওঠে।
৪. আক্রান্ত প্রাণি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে।
৫. ক্ষুধামন্দা, পেটফাঁপা, পেটে ব্যথার কারণে লাথি মারে, রক্ত মিশ্রিত প্র্রস্রাব ও তরল পায়খানা হতে পারে।
৬. রোগের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে মল আলকাতরার মতো কালো ও প্র্রস্রাব শক্ত হয়ে যায়।
৭. রোগের চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রাণি নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
৮. খিঁচুনি হয় ও অবশেষে প্রাণি মারা যায়।
৬. লক্ষণ প্রকাশের ১-৩ দিনের মধ্যে আক্রান্ত প্রাণি হঠাৎ পড়ে মারা যায় এবং নাকমুখ ও মলমূত্রের ছিদ্র পথ দিয়ে কালো রক্ত নির্গত হয়।
চিকিৎসা :-
১. সাধারণত চিকিৎসা করার সুযোগ পাওয়ার আগেই আক্রান্ত গরু মারা যায়।
২. যদি আক্রান্ত গরু পাওয়া যায় তবে উচ্চ মাত্রার পেনিসিলিন, স্পেপটোমাইসিন, টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা যেতে পারে।
প্রতিরোধ :-
১. ভ্যাক্সিন দেয়ায় এ রোগ প্রতিরোধের একমাত্র উপায়। গরুকে প্রতি বছরে একবার ভ্যাক্সিন দিলে এই রোগ হবেনা।
২. এই রোগের জীবানু পরিবেশে অনেকদিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। তাই রোগে মৃত প্রাণির দেহ, গোবর, লালা, প্রস্রাব, রক্ত ইত্যাদিসহ ২ মিটার গভীর গর্তে পর্যাপ্ত কলিচুন সহযোগে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
৩. মৃত প্রাণির চামড়া কখনোই ছাড়ানো যাবে না। মনে রাখবেন এই রোগের জীবাণু দ্বারা মানুষও আক্রান্ত হয়।
৪. কোন প্রাণির আক্রান্ত হলে তাকে পৃথক করে চিকিৎসা দিতে হবে।
৫. প্রাণিজাত দ্রব্য অর্থাৎ মিট বোনমিল থেকেও জীবাণু ছড়াতে পারে বলে আক্রান্ত প্রাণির উপজাত থেকে মিট বা বোনমিল তৈরী করা উচিত নয় ।
৬. পূর্বে আক্রান্ত প্রাণির গোয়াল ঘরে জীবাণুর Spore সৃষ্টির পূর্বেই গোয়াল ঘরকে গরম ১০% NaOH (60° c ) দিয়ে ধুলে জীবাণুর মৃত্যু ঘটে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৬সেপ্টেম্বর২০