গরুর খাদ্য ও পুষ্টি পর্যালোচনা: নেপিয়ার/সুপার নেপিয়ার ঘাস
গরুর খাদ্য হিসাবে ‘নেপিয়ার ঘাস’ : বাণিজ্যিকভাবে গরু পালনের জন্য জনপ্রিয় ঘাস হিসাবে বিশ্বের সব দেশে পরিচিত করতে ভূমিকা রাখায় জিম্বাবুয়ের সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল নেপিয়ারের নামের সাথে মিল রেখে নামকরণ করা ‘নেপিয়ার’ ঘাস বিশ্বে পশুপালনে সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘাস। নেপিয়ার ঘাস সাধারণত শুকনা জমিতে এবং বেলে দোয়াশ মাটিতে সবচে ভালো ফলন হয়। এই ঘাস কাটিং রোপনের মাধ্যমে চাষ করা হয়। বিশ্বের এমন কোন গরুপালনকারী দেশ নাই যেখানে নেপিয়ার ঘাস চাষ করা হয়না। টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উন্নয়ন করা #হাইব্রিড_নেপিয়ার যেমন, #পাক_চং, #CO4 ঘাস; এগুলো মূলত একই জাত এবং পুষ্টিমান ও প্রায় সমান। তবে থাইল্যান্ডের প্রানীসম্পদ বিভাগে উদ্ভাবিত পাক চং ঘাসে সুগারের পরিমান বেশী থাকায় পুষ্টিমান ও ফলন তুলনামূলক বেশী। ইন্ডিয়ার মাদ্রাজ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবিত CO4 হাইব্রিড নেপিয়ার থাই পাক চং এর সমমানের ঘাস। যেকোন ভ্যারাইটির নেপিয়ার ঘাসে রয়েছে গড়ে ১৮ থেকে ২২% ড্রাই ম্যাটার, ৮ থেকে ১২% ক্রুড প্রোটিন এবং ২% ক্রুড ফ্যাট। ঘাস যত কচি হবে পুষ্টি উপাদান তত বেশি হবে।
#নেপিয়ার ঘাসের গড় পুষ্টি উপাদান :- (% ড্রাই ম্যাটার)
ড্রাই ম্যাটার : ১৮
হজম যোগ্য শক্তি : ৫৮
ক্রুড প্রোটিন : ৯.৭
ক্রুড ফাইবার : ৩৬.১
ক্রুড ফ্যাট (ইথার এক্সট্রাক্ট) : ২.০
নিউট্রাল ডিটারজেন্ট ফাইবার : ৭১.৫
এসিড ডিটারজেন্ট ফাইবার : ৪২.৫
লিগনিন : ৫.৭
অ্যাশ (ছাই) : ১৩.৮
গ্রস এনার্জি : ১৭.৪ মেজুল/কেজি
হজম যোগ্য এনার্জি : ১০.২ ”
বিপাকযোগ্য এনার্জি : ৮.২ ”
#মিনারেলস (খনিজ উপাদান) :- (প্রতি কেজি ড্রাই ম্যাটারে)
ক্যালসিয়াম : ৩.৬ গ্রাম
ফসফরাস : ২.৯ ”
পটাসিয়াম : ২৯ ”
সোডিয়াম : ০.৩ ”
ম্যাগনেসিয়াম : ৩.০ ”
ম্যাঙ্গানিজ : ৯১ মিগ্রা/কেজি
জিংক : ৪৫ ”
কপার : ১১ ”
আয়রন : ৪১৩ ”
#এমাইনো_এসিড :- (%/ ক্রুড প্রোটিন)
অর্গানাইন : ২.৫ %
হিস্টিডাইন : ১.৬ %
লাইসিন : ৫.৭%
মেথিওনিন : ৩.১%
থ্রিওনাইন : ৩.৬%
ভ্যালাইন : ৫.১%
ক্ষতিকর উপাদান :
নাইট্রেট : মাটি ভেদে ৩.৯ মিগ্রা/গ্রাম থেকে ২৮.৩ মিগ্রা/গ্রাম।
মাত্রা ও সতর্কতা : ঘাস গরুর প্রধান খাবার এবং গরুকে দৈনিক খাবারের পুরাটাই নেপিয়ার ঘাস দিয়ে পূরণ করা সম্ভব। তবে শুধু মাত্র নেপিয়ার ঘাসের উপর নির্ভর করলে অনেক সময় নাইট্রেট বিষক্রিয়া হতে পারে। মাটি ভেদে নেপিয়ার ঘাসে ৩.৯ মিগ্রা/গ্রাম থেকে ২৮.৩ মিগ্রা/গ্রাম নাইট্রেট জৌগ থাকতে পারে। বর্ষাকালে প্রথম বৃষ্টির পরে, মেঘলা আবহাওয়ায় এবং ইউরিয়া সার প্রয়োগের পরে নাইট্রেটের মাত্রা বেড়ে যায়।
দ্রস্টব্য : আবহাওয়া, জমির গুনাগুন, ভ্যারাইটি বা উপজাত ভেদে পুষ্টিমানে সামান্য তারতম্য হতে পারে।