গরুর খাদ্য গ্রহণে অনীহা, যা করবেন

731

Shafiqul-1-1080x608
গরুর খাদ্য গ্রহণে অনীহায় করণীয় সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। আমাদের দেশে গবাদিপশু পালন একটি লাভজনক পেশা। গবাদিপশু পালন করে অনেক বেকার যুবক স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই গবাদিপশু পালন করা হয়ে থাকে।

গবাদিপশু পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গবাদিপশুর খাদ্য গ্রহণে অনীহা। আসুন জেনে নেই গবাদিপশুর খাদ্য গ্রহণে অনীহা দেখা দিলে করণীয় সম্পর্কে-

গরুর খাদ্য গ্রহণে অনীহা দেখা দিলে করণীয়:
সাধারণত অজীর্ণতা প্রধানত বেঁধে খাওয়ানো রোমন্থক পশুর একটি রোগ। এ রোগে সাধারণত অস্বাভাবিক খাদ্য খাওয়ানোর কারণে হয়ে থাকে। খাদ্যে অরুচি থেকে ক্ষুধামন্দা এ রোগের প্রধান বৈশিষ্ট।

রোগের কারণ:

পশু যে খাদ্য খেয়ে অভ্যস্ত হঠাৎ তার ব্যতিক্রমে, অত্যধিক খাবার খেলে, হজম করা কঠিন এরূপ খাবার খেলে, নিম্নমানের খাদ্য, বিনষ্ট খাদ্য এবং শস্য জাতীয় খাদ্য অধিক গ্রহণে পশুর বদহজম হতে পারে।

শুষ্ক ঋতুতে পানি হ্রাস পেলে এবং খরার সময় অপাচ্য খড় (যেমন–পশুর বিছানার খড়) খেলে অজীর্ণতা দেখা দেয়।
অপ্রাকৃতিক খাদ্য যেমন–গর্ভফুল, দীর্ঘ দিন এন্টিবায়োটিক বা সালফোনামাইড গ্রুপের ওষুধ খাওয়ানোর ফলে এইরূপ অজীর্ণতার সৃষ্টি হতে পারে।

রোগের লক্ষণ:

রুমেনের দুষ্প্রাচ্য খাদ্য জমা হওয়া, প্রোটিনযুক্ত খাদ্য পচন ইত্যাদি কারণে রুমেনের
স্পন্দন হ্রাস পেয়ে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।
খাদ্যের প্রতি পশুর আকষ্মিক অরুচি হয়
অধিকাংশ পশুর মল কঠিন বা সামান্য পাতলা এবং পরিমাণে কম হয়
ক্রমশ দেহের ওজন কমে যায় ও পশু দুর্বল হয়ে পড়ে।
রক্ত স্বল্পতা উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

চিকিৎসা: সাধারণ অজীর্ণতার কারণ দূর করলে ওষুধ ছাড়াই এ রোগ ভালো হতে পারে। সুনিদিষ্ট কারণ জানা না গেলে সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে রুমেনোটনিক ওষুধ যেমন- এপিভেট বা জাইমোভেট যেকোনো একটি ওষুধের প্রতি প্যাকেট প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে দিনে দুইবার করে দুইদিন খাওয়াতে হবে।

প্রাকৃতিক চিকিৎসা: প্রাকৃতিক চিকিৎসা হিসেবে গরুকে আদা বাঁটা, বিট লবণ, খাওয়ার সোডা ইত্যাদি একসাথে মিশিয়ে একটি কলাপাতায় মুড়ে দিনে দুইবার খাইয়ে দেয়া যেতে পারে।এভাবে ৩/৪ দিন খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি ১০০-১৮০ কেজি দৈহিক ওজনের একটি গরুকে আদা বাটা দিতে হবে ৫০ গ্রাম, জিরার গুড়া ২০ গ্রাম, বিট লবণের গুড়া ২০ গ্রাম।

প্রতিরোধ: পশুকে নিম্নমানের খাবার, হজম করা কঠিন এরূপ খাবার, নষ্ট খাদ্য খাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধপাতি দিতে হবে, গরুর খাদ্যে বিভিন্ন এনজাইমের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে যেমন-মোলাসেস বা চিটাগুড়, লবণ, খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন এবং বিভিন্ন প্রকার খনিজ উপাদান।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৪জানু২০২০