দুধ উৎপাদন করার জন্য ডেইরি খামার অথবা গরু মোটাতাজাকরণ, যে ব্যবসাই করতে চান না কেন কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। আমরা ঠিক তেমনি গরুর খামার ব্যবসার জন্য ৫টি চ্যালেঞ্জ বা সম্যসা খুঁজে পেয়েছি, এবং সাধ্যমত তার সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি।
ভাল জাতের গরু: আমরা প্রথম চ্যালেঞ্জ খুঁজে পেয়েছি। ভাল জাতের গরু কোথায় পাব, নাম কি, দুধ বা মাংস কেমন দেয় ইত্যাদি। আপনি দুধ উৎপাদন করতে চান তাহলে নির্বাচন করুন– আয়ারসায়ার ক্যাটল, ব্রাউন সুইস, ডেইরি শর্টহর্ন। এদের মধ্যে ব্রাউন সুইস ২৫ লিটার পর্যন্ত দুধ দিতে সক্ষম। এসব জাতের গরু সাভার এলাকার মুশুরী খোলা, বাঘাবাড়ীঘাট মিল্কভিটা এলাকা, কেরানীগঞ্জ উপজেলার আটি এলাকা, টাঙ্গাইল, সৈয়দপুর, ঠাকুরগাঁও ইত্যাদি অঞ্চলে পাবেন। চায়নিয়া ষাঁড়, বিফ মাস্টার ইত্যাদি জাতের গরু মাংস উৎপাদন করার জন্য আদর্শ।
গরুর খাবার: দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো খাবার সমস্যা। যেমন-কি খাবার খাওয়াবেন, খরচ কেমন, সব সময় পাওয়া যায় কিনা ইত্যাদি। আপনি যতটা খাদ্যে খরচ কমাতে পারবেন ততটা লাভের পরিমাণ বেশি হবে। তবে মনে রাখতে হবে গাভী যেন খাবার কম না পায়। একটি খামারে মোট ব্যায়ের ৬০ ভাগই চলে যায় খাবারের পিছনে। সেক্ষেত্রে নিজে খাবার বানাতে জানতে হবে, যাতে পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে এবং খরচ কম হয়।
সীমিত মূলধন: এটি একটি অন্যতম সেরা সম্যসা। সীমিত মূলধন নিয়ে এই ব্যবসা করাটা একটু ঝুঁকিপূর্ণ। আপনি যখন ব্যবসা শুরু করবেন তখন কিছু টাকা আলাদা রাখতে হবে। যেমন-আপনি ১০ লাখ টাকা দিয়ে গরুর খামার ব্যবসা শুরু করতে চান। সেক্ষেত্রে আপনাকে ৫ লাখ টাকা গরু কিনতে, ৩ লাখ টাকা খাবারের জন্য এবং বাকি ২ লাখ টাকা আলাদা রাখতে হবে যা পরবর্তীতে ধাপে ধাপে খরচ হবে।
গরু বাজারজাতকরণ: গরুর খামার ব্যবসা করতে যে ৭টি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় তার মধ্যে অন্যতম। বিশেষভাবে গরু মোটাজাতাকরণ ব্যবসায় এই সমস্যায় পড়তে হয়। কোরবানির সময়ে ইন্ডিয়ান গরু আমাদের দেশে আসে যার ফলে দেশি খামারীরা লাভের পরিমাণ কম দেখে। এই ক্ষেত্রে যেসব এলাকায় ইন্ডিয়ান গরু আসে না সেই সব এলাকায় দেশি গরু ছড়িয়ে দিতে হবে।
দক্ষ লোকবল: গরুর ব্যবসা এমন একটি ব্যবসা যা আপনি একা একা করতে পারবেন না। খামারের পরিধি অনুযায়ী আপনাকে যথেষ্ট লোকবল নিতে হবে। বিশেষভাবে ডেইরি খামারে প্রতি ৪টি গরুর জন্য ১ জন কর্মী দরকার। শুধু গরুর খামার নয়, যেকোনো ব্যবসায় চ্যালেঞ্জ নিতেই হবে। আর এসব চ্যালেঞ্জ নেয়ার মানসিকতা থাকলেই আপনি সহজে সফল হবেন। আর নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করতে পারবেন। অতএব মনোস্থির করুন আর ছোট করে হলেও শুরু করুন।