গরুর শীতকালীন পরিচর্যা করবেন যেভাবে

767

আবহাওয়ার পৰিৱর্তনের সাথে সাথে প্রাণীর অভ্যন্তরীণ বিপাকীয় এবং অভ্যাসগত পরিবর্তনের ফলে গরুর স্বাস্থ্যে এবং উৎপাদনে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। আমাদের দেশের জেবু জাতের গরু গরম আবহাওয়ায় অধিক সহনশীল হওয়ায় শীতকালে তুলনামূলকভাবে বেশি স্বাস্থ্যগত ও অভ্যাসগত পরিবর্তন হয়। অন্যদিকে ইউরোপিয়ান বস টোরাস যেহেতু ঠান্ডা আবহাওয়ায় অধিক সহনশীল, তাই এই জাতের শীতের সাথে যুদ্ধ করার ক্ষমতাও বেশি। তারপরেও দেশি জাতের সাথে সংকরায়ণের ফলে এদের শীত সহ্য ক্ষমতা তুলনামূলক কমে যায়। তাই শীতকালে গরুর স্বাস্থ্যের দিকে কিছু বিষয়ে বাড়তি মনোযোগ জরুরি। যেমন :

খাদ্য_অভ্যাস : শীতকালে প্রাণী শরীরে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ফলে দুধের উৎপাদন ও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বাড়তি উৎপাদনের জন্য চাই বাড়তি শক্তি। তাই শীতকালে গরুকে অধিক খাবার দেয়া জরুরি। তবে একই সাথে এটাও মনে রাখতে হবে শীতকালে গরুর শরীরে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের প্রবলতা দেখা যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে থেকে রক্ষা করতে গরুকে অধিক আশযুক্ত খাবার যেমন ঘাস খড় দেয়া আবশ্যক।https://www.facebook.com/118282556740487/posts/119268959975180/

পানি : শরীরবৃত্তীয় কাজে কম পানি দরকার হওয়ায় এবং অধিক ঠান্ডা হওয়ায় শীতকালে সকল প্রাণী পানি পানের পরিমান কমিয়ে দেয়। এই সমস্যা উত্তরণের জন্য গরুকে ট্যাংকে সংরক্ষিত বাসি ঠান্ডা পরিবেশন থেকে বিরত থাকতে হবে। গরুর জন্য বিশুদ্ধ ফ্রেশ পানির ব্যবস্থা করতে হবে।প্রয়োজনে কুসুম গরম পানি খাওয়ানো যায়।

বাসস্থান : শীতকালে ঠান্ডা বাতাস যেন সরাসরি গরুর গায়ে না লাগে এইজন্য ঠান্ডা বাতাস প্রবেশের রাস্তা গুলো চটের বস্তা অথবা পলিথিন বা অন্য কোন উপায়ে বন্ধ করে দিতে হবে। ঠান্ডা বাতাসে গরুর নিউমোনিয়া সহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে। প্রয়োজনে গরুকে পুরান কম্বল বা পাটের বস্তা এই জাতীয় জিনিস দিয়ে রাতে জড়িয়ে রাখতে হবে।

পরিষ্কার_পরিচ্ছন্নতা: ঠান্ডায় গরুর শেডে যেন পানি জমে না থাকে অথবা গরুর প্রস্রাব জমে না থাকে এবং ফ্লোর যেন অধিক শুষ্ক থাকে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। দরকার হলে ফ্লোর ম্যাট ব্যবহার করতে হবে।

রোগ_ব্যাধি : শীতকালে গরু নিউমোনিয়া, কাশি সহ ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এই রোগের বিষয়ে বিশেষ সচেতন থাকতে হবে। ঠান্ডা জনিত কোনো সমস্যার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা করতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাতের কাছে বিশুদ্ধ মধু এবং তুলসী গাছ রাখতে হবে।

বাছুরের_যত্ন : ঠান্ডায় সবচে বেশি আক্রান্ত হয় নবজাতক বাছুর। যেহেতু বাছুরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাই ঠাণ্ডাজনিত রোগের শিকার ও সবচে বেশি হয়। তাই শীতকালে অবশ্যই বাছুরকে গরম কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখতে হবে এবং গরম এবং শুষ্ক জায়গা রাখতে হবে। কোনো প্রকার ঠান্ডা জনিত সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
শীতে আপনার বিশেষ যত্নই আপনার খামারকে শীতকালীন সমস্যা থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। আর এজন্য আপনার সচেতনতা সবচে বেশি জরুরি।

ধন্যবাদ।
আপনি কি গরুর খামার করবেন বলে ভাবছেন? আপনার গরুর ফার্মে কি লাভ হচ্ছে না?
তাহলে যোগাযোগ করুন

ডা মোঃ শাহীন মিয়া
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা
বিসিএস প্রাণিসম্পদ
০১৭১৬১৬২০৬১(ইমো)
[email protected]

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৪নভেম্বর২০২০