গলদা চিংড়ি চাষ, সম্ভাবনার দিগন্ত

722

গলদা

মন্মথ নাথ সরকার: গলদা চিংড়ি বাংলাদেশে একটি বিশাল সম্ভাবনারময় রপ্তানিপণ্য। যার উপযোগিতা একদিন খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে । গলদা চিংড়িতে বাগদাচিংড়ির মতো রোগ বালাইয়ের ঝুঁকি নেই । পরিবেশের সাথে সাংঘর্ষিকও নয়। যেকোনো মিঠাপানি বা নোনা পানির মাছের সাথে চাষযোগ্য।

মূল্যবান ,আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদাসম্পন্ন এবং ব্যক্তি পর্যায় থেকে বাণিজ্যিকভাবে চাষের উপযোগী বিধায় গলদাকে নতুন করে সজ্ঞায়িত করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে ।

চিংড়ি রপ্তানি থেকে বর্তমান আয় চার হাজার কোটি টাকার মধ্যে গলদার অবদান (২৫ শতাংশ ) যা আছে অনেকগুণ বেশি অর্থাৎ দশ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব শুধুমাত্র গলদা চিংড়ি রপ্তানি করে । আর এতে করে সুচিত হতে পারে অর্থনীতির এক নতুন অধ্যয় ।

গলদা চিংড়ি এমন একটি শিল্প যেখানে তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে বিশাল এক কর্মযজ্ঞে। যেখানে কোনো প্রকার বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ ব্যতিত বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বিরাট সুযোগ বিদ্যমান ।

আসলে এটা কোনো কঠিন কাজ নয়, সাধারণ মানুষ পরিশ্রম করে উৎপাদন করবে প্রক্রিয়াজাতকারক কোম্পানিগুলো উপযুক্ত মূল্যে কিনে নেবে আর একটি সংস্থা যেমন উপজেলা পরিষদ মৎস্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সমন্বয়কারির ভূমিকা পালন করবে।

গলদা চিংড়ি আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচুর চাহিদা, অপরদিকে কাঁচামালের অভাবে রপ্তানিকারকদের ফ্যাক্টরি অচল পড়ে আছে। এর চেয়ে আর দুঃখের কথা কি হতে পারে? একরপ্রতি এক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে । কেজিপ্রতি উৎপাদন খরচ সর্বোচ্চ দুইশ টাকা আর কেজি প্রতি বিক্রয়মূল্য কমপক্ষে পাঁচশ টাকা পাওয়া যাবে।

বাণিজ্যিকভাবে গলদা চাষের মূল প্রযুক্তি হলো পুরুষ গলদার একক চাষ । বছরে মাত্র একটি ফসল। হ্যাচারিতে উৎপাদিত বা প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগৃহীত গলদা পি. এল মাত্র দুই /তিন মাস নার্সারিতে প্রতিপালন করে তারপর পুরুষ গলদা বাছাই করে আলাদা পুকুরে চাষ করতে হবে। ভালোমানের খাদ্য ব্যবহার করতে হবে । চাষ পুকুর/ঘর বা ঘোনার মাটি ও পানির গুণমান রক্ষা করতে হবে । ছয় থেকে আট মাসের একটি ফসল । এলাকাভেদে প্রযুক্তি সামান্য হেরফের হতে পারে । তাতে ভীত হবার কোন কারণ নেই ।

মোটকথা গলদা চাষে অহেতুক ভয়-ভীতি দূর করতে পারলেই সাফল্য অর্জন করা যাবে । কোন একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই কর্মযজ্ঞে সামিল হয়ে সাফল্য লাভ করতে পারবে না । একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গলদা চাষের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে । গলদা চাষের ক্ষেত্রে একবার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারলে এর জন্য অর্থের কোনো অভাব হবে না । রপ্তানিকারকরা অগ্রিম মূল্যে গলদা কিনে নেবে । এখানে একটি পরিকল্পনার রুপরেখা প্রদান করা হলো । চলবে…

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪.কম/এম