সাধারনত আমরা একটি গাভী থেকে দিনে ২ বার দুধ দোহন করে থাকি। তবে খেয়াল রাখতে হবে ১২ ঘন্টার বেশি যাতে ওলানে দুধের চাপ না থাকে। কারন ১২ ঘন্টা অতিবাহিত হলে ওলানের কোষ দুধ উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। ৮ ঘন্টা পরপর অর্থাৎ দিনে ৩ বার দোহন করলে দুধের উৎপাদন ৫-২৫% পর্যন্ত বেড়ে যায়। গাভীর দুধ দোহনে যেসকল বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে-
১. সবার আগে প্রথম বিয়ানের গাভী তারপর সুস্থ গাভী, তারপর যে গাভীর দুধে উচ্চ মাত্রায় সোমাটিক সেল বিদ্যমান এবং সবশেষে ওলান প্রদাহ রোগে আক্রান্ত হয়েছিল এমন গাভী পর্যায় ক্রমে দোহন করতে হবে।
২. প্রতিদিন একই সময়ে একই স্থানে এবং একই দোহনকারী দ্বারা গাভীর দুধ দহন সম্পন্ন করতে হবে। দোহনের পুর্বে গরুর ওলান পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে এবং শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।
৩. দোহনকারীকে অবশ্যই দায়িত্বশীল, সচেতন ও প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত হওয়া উচিত। যাতে ওলানের যেকোনো সমস্যা তাৎক্ষনিক ভাবে সনাত্নক করতে পারে। এবং দোহনকারীর শরীর, হাত জীবানুমুক্ত, ও নখ অবশ্যই ছোট রাখতে হবে।
৪. দুধ দহনের স্থান অবশ্যই পরিষ্কার পরিছন্ন, জীবানুমমুক্ত, দুর্গন্ধমুক্ত ও ঠান্ডা বা ছায়াযুক্ত হতে হবে।
৫. গাভী দোহনের জন্য প্রস্তুত করার ৮-১০ মিনিটের মধ্যেই দহন শেষ করা উচিত।
৬. দুধ দহনের পর বাঁট বিভিন্ন জীবানুনাশক যেমন ক্লোরহেক্সিডিন-০.৫% আইডোফর-০.৫-১% হাইপোক্লোরাইট-৪% ক্লোরাস এসিড, লিনিয়ার ডোডিসাইল বেন্ঞ্জিন সালফোনিক এসিড-১.৯৪% ইত্যাদি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
৭. Milking Machine এ দুধ দোহন করলে দৈনিক মেশিন পরিষ্কার ও পরীক্ষা করে নিতে হবে।
৮. অনেক গাভীর ওলানে লম্বা লোম হয়ে থাকে, এমন হলে নিয়মিত ২-৩ মাস পরপর লোম কেটে দিতে পারেন।
৯. দুধ দোহনের পর গাভীর বাচ্চাকে আর ওলানে লাগতে দেওয়া বা দুধ খাওয়া ঠিক না। এক্ষেত্রে দোহনের পূর্বেই বাচ্চাকে খাইয়ে নিতে হবে।
১০. সর্বশেষ করনীয় দোহনের পর দানাদার খাবার খাওয়ানো এবং আকর্ষনীয় খাদ্য যেমন ঘাঁস খেতে দিতে পারেন যাতে গাভী ৩০ মিনিট থেকে এক ঘন্টা দাড়িয়ে থাকে। এ সময়ের মধ্যে বাঁটের দুধনালী বা ছিদ্রপথ সংকুচিত বা বন্ধ হয়ে যাবে এবং শুয়ে পড়লেও কোন জীবানু প্রবেশ করতে পারবেনা।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ২০ মে ২০২১