আমাদের কাছে অনেকেই জানতে চায় গাভী কেনো বার হিট আসে ? তাই আজকে আমরা আলোচনা করবো গাভী বারবার হিটে আসার কারণ লক্ষণ ও সমাধান নিয়ে কি কি করতে হবে। পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে দিন বন্ধুদের কাছে।
গাভী বা বকনা যদি স্বাভাবিক ইষ্ট্রাস চক্রে বারবার গরম হয় এবং তিনবারের অধিক পাল বা কৃত্রিম প্রজনন করা সত্ত্বেও গর্ভধারন না করে, তখন ঐ গাভীকে রিপিট ব্রিডিং (Repeat Breeding) গাভী বলা হয়। ডেয়রি খামার ধ্বংসের জন্য এই একটি কারণই যথেষ্ট।
গাভী বারবার হিটে আসার কারণ
অপুষ্টিতে ভুগলে।
জরায়ুতে জীবানুর সংক্রমন হলে।
Estrous সঠিকভাবে নির্নয় করতে না পারলে।
সময়মত ও যথাস্থানে Semen স্থাপন না হলে।
অপর্যাপ্ত ও নিন্মমানের Semen দ্বারা প্রজনন করালে।
অদক্ষ এ, আই কর্মী দ্বারা প্রজনন করালে।
যৌন অঙ্গের বিকলঙ্গতা
প্রজনন তন্ত্রের বিভিন্ন রোগ থাকলে।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও ওভারিয়ান সিস্ট ইত্যাদি।
গাভী বারবার হিটে আসার লক্ষণ
জরায়ু থেকে নিশ্রিত মিউকাসের রং অনেক সময় খুব পাতলা ও ঘোলাটে হতে দেখা যাবে।
যোনী পথে মিউকাসের পরিমান একেবারে কম অথবা খুব বেশি পরিমানে ভাংবে।
ডাকে আসা সময়কাল খুব কম অথবা অতিদীর্ঘ হতে দেখা যাবে।
নির্দিষ্ট ঋতুচক্রে গরম হলেও, প্রজনন করালে তা গর্ভধারন করবেনা।
প্রতিরোধ বা সমাধানে যা যা করতে হবে
স্বাস্থ্য সম্মত বাসস্থানে গাভীকে রাখা ও পরিমানমত সুষম খাবার সরবরাহ করা।
দৈনিক প্রচুর পরিমান কাচা ঘাস ও অবশ্যই শরিষার খৈল কমপক্ষে ৬০০ থেকে ৭০০ মিঃগ্রাঃ খায়াতে হবে।
বকনার ক্ষেত্রে প্রথম হিট মিস করে কৃমিমুক্ত করুন এবং রেনাসল এডিই ও ই-সেল ২০ মিঃলিঃ করে ১০ দিন খাওয়ান।
হিটে আসার সময় ১২ থেকে ১৮ ঘন্টার মধ্যে প্রজনন করা এবং পুনরায় ৬ ঘন্টা পর আবার প্রজনন করা।
প্রজনন করার পর ৫০ মিঃলিঃ ই-সেল এবং ৫ দিন পর আবার ৫০মিঃলিঃ খাওয়ান। বীজ দেওয়ার দিন থেকে ১০ দিন দৈনিক ১০০ মিঃলিঃ Syr: Farovet vet খাওয়ান।
প্রজনন করার পর অবশ্যই গাভী বা বকনাকে গোসল করাতে হবে।
প্রজনন করার ৩০ মিনিট পুর্বে হরমোন ইনজেকশন যেমন Ovurelin ৩ ml, দিয়ে তারপর Semen দেওয়া।
Semen দেয়ার পর এ. আই কর্মীর হাত দিয়েই যোনিদ্বার ৩/৪ সেকেন্ড ম্যাসেজ করা।
সাস্থ্য সম্মত উপায়ে দক্ষ এ. আই. কর্মীর মাধ্যমে সবল সিমেন দ্বারা প্রজনন করাতে হবে।
গর্ভফুল আটকে যাওয়া গাভীকে তিন মাসের আগে প্রজনন না করাই ভালো। সে ক্ষেত্রে পুর্বেই চিকিৎসা দিয়ে রাখতে হবে।
পরপর তিন বার প্রজনন করেও গর্ভধারন ব্যর্থ হলে ৪র্থ বার বীজ না দিয়ে বিশ্রাম দেওয়া এবং বিশ্রাম চলাকালে চিকিৎসা সম্পন্ন করা।
ফসফরাস, কপার, কোবাল্ট, মাঙ্গানিজ, সিলেনিয়াম, এবং ভিটামিন এডিই জাতীয় পুষ্টির সরবরাহ নিশ্চিত করুন।
কাচা ছোলা পানিতে ভিজিয়ে ৪৮ ঘন্টা পর অংকুরদগম হলে খাওয়ান। প্রতিদিন ২০০ গ্রাম করে ২৫ দিন।
প্রতিদিন তিনটা করে মুরগির কাঁচা ডিম খাওয়ান একটানা ৫ দিন। অভিজ্ঞ ও দক্ষ ভেটেরিনারিয়ানের সাথে যোগাযোগ করুন।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২